অতিমারী আবহে দর্শকদের সিনেমাহলমুখো করেছিল দেব-পরাণ জুটির 'টনিক'। সেই ধারা অব্যহত রেখেই বাংলা ছবির লক্ষ্মীলাভে রাশ ধরল- 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' (Kakababur Protyaborton) এবং 'বাবা বেবি ও' (Baba Baby O)। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে ৪ তারিখই মুক্তি পেয়েছে এই দুই ছবি। তবে জানুয়ারি মাসে ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্তে দর্শকদের হলে ফেরানোই ছিল চ্যালেঞ্জিং। তবে উন্নতমানের কন্টেন্ট কিংবা ভাল সিনেমা দিয়ে যে সিনেদর্শকদের প্রেক্ষাগৃহ-মুখো করা যায়, তা আবারও প্রমাণ করে দিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং অরিত্র মুখোপাধ্যায়। মাত্র তিন দিনেই বক্সঅফিসে বাজিমাত করল 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' এবং 'বাবা বেবি ও'।
প্রসঙ্গত ফেব্রুয়ারি মাসের পয়লা দিন থেকেই সিনেমাহলে দর্শক সংখ্যা ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করেছে রাজ্য সরকার। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর এহেন সিদ্ধান্তে আশার আলো দেখছিলেন টলিউডের সিনে-নির্মাতারা। এবার প্রথম সপ্তাহান্তের বক্সঅফিস মার্কসির্টেই মিলল দুই ছবির সাফল্যের নম্বর। 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা'র সাক্ষাৎকারে সৃজিত আশঙ্কা করেছিলেন, প্রথম কিংবা দ্বিতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজির আয়ের কাছাকাছিও যাবে না 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন'। কারণ, এই ছবি যাদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে, সেই বাচ্চাদেরই এখনও ভ্যক্সিনেশন হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ছোটদের নিয়ে বাবা-মায়ের কতটা হলে পা রাখবেন? সেই বিষয়ে চিন্তিত ছিলেন পরিচালক। এমনকী একাধিকবার পিছিয়েছে, সিনেমার রিলিজ। ওদিকে যিশু সেনগুপ্তের মুখেও শোনা গিয়েছিল সেই আশঙ্কার কথা।
তবে প্রথম সপ্তাহের রিপোর্ট বলছে, মাত্র ৩ দিনেই ১ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা করে ফেলেছে 'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন'। প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ-এর কর্ণধার মহেন্দ্র সোনি খোদ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সুখবর জানিয়েছেন। রসিকতা করেই প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, "ক্যায়সা লাগা কাকাবাবু?
<আরও পড়ুন: চলে গেলেন ‘মহাভারতের’ ভীম, প্রয়াত প্রবীণ কুমার সোবতি>
অন্যদিকে, বক্সঅফিসে আয়ের দৌঁড়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই উইন্ডোজ-এর 'বাবা বেবি ও'। উল্লেখ্য, যিশু-প্রসেনজিৎ দুজনেই দর্শকদের অনুরোধ করেছিলেন, বাংলা ছবি যাতে দর্শকরা আরও বেশি করে হলে গিয়ে দেখেন। সেই অনুরোধ বিফলে যায়নি। বলছে বক্সঅফিস। শিবু-নন্দিতা প্রযোজিত 'বাবা বেবি ও' এদিকে কাকাবাবুর তুলনায় অতি-কম বাজেটের হয়েও ভাল ব্যবসা করে ফেলেছে। প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "৮৮ লক্ষের সিনেমা মাত্র তিন দিনেই ৫৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা করে ফেলেছে।" পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্তও ততোধিক উচ্ছ্বসিত এহেন সাফল্যে।
এপ্রসঙ্গে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "ধন্যবাদ দর্শককে। মহামারীর আগে উইন্ডোজের রিলিজ হওয়া সিনেমা ছিল ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’। মাত্র ১২ দিন বক্স অফিসে চলেছিল। ৭২ লাখ টাকার ছবি এক সপ্তাহতেই ৯৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছিল। মহামারী কাটিয়ে উইন্ডোজের নতুন সিনেমা বাবা, বেবি ও… মুক্তি পেয়েছে ৪ ফেব্রুয়ারি। দর্শক, আবার ধন্যবাদ আপনাদের এবং টিম বাবা বেবি ও… তাদেরকেও। ৮৮ লক্ষ টাকার সিনেমা মাত্র তিন দিনেই ৫৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে। প্রযোজক হিসেবে এইটুকু বলতে পারি যে, অরিত্র এবং তোমার টিম তোমরা যেমনভাবে দর্শককে হলমুখী করেছো তেমনভাবে এই দুর্দিনেও প্রযোজকের ঘরে টাকা ফেরত আনতে পেরেছো। বুক মাই শো-এর রেটিং ৮৫% এবং আইএমডিবি রেটিং ৮.২। প্রযোজক হিসেবে আমার এবং নন্দিতা রায়-এর তরফ থেকে তোমাদের জন্য অনেক শুভেচ্ছা।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন