বাজেট বক্তৃতা নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল বিতর্ক সামনে এসেছে সম্প্রতি। এবার সেই আবহে বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বলেন, স্বাধীনতার পর তিনিই প্রথম রাজ্যপাল যিনি রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে বক্তৃতা রাখবেন। তিনি আরও স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন যে বাজেট বক্তৃতায় রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার তাঁর অধিকার রয়েছে।
আরও পড়ুন: সেমিফাইনালে মুকুলকেই ক্যাপ্টেন করল বিজেপি
বীরভূমের শান্তিনিকেতনে মেলার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ধনখর বলেন, “ইতিহাসে এই প্রথমবার স্বাধীনতার পরে কোনও রাজ্যপাল বাজেট অধিবেশনায় পশ্চিমবঙ্গ বিধান ভাষণ দেবেন। এদিন রাজ্যপাল বলেন, "আমার বাজেট বক্তৃতা পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নিরিখে ইতিহাস তৈরি করবে। আমার আগে যারা রাজ্যপাল হিসেবে বাজেট বক্তৃতা দিয়েছেন, তাঁরা স্বাধীনতার আগে জন্মেছিলেন। একমাত্র আমি স্বাধীনতার পরে জন্মে এ রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে বাজেট বক্তৃতা দেবো।" এখনও অবধি আমার বিশিষ্ট, নামী ও সম্মানিত পূর্বসূরিরা রাজ্য বিধানসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: যোগী আদিত্যনাথকে শোকজ নোটিস কমিশনের
প্রসঙ্গত, বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল বলেন যে “আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপালের বাজেট বক্তৃতা দেওয়ার কথা। রাজ্য মন্ত্রীসভায় অনুমোদনের পর সেই বক্তৃতার একটি খসড়া আমার কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে তা আমার বিবেচনাধীন। যদি প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকভাবেই সেখানে কিছু সংযোজন অথবা বিয়োজন করতে পারি।” এদিকে সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার যে খসড়া পাঠিয়েছে রাজ্যপালকে তা নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট নন জগদীপ ধনকড়। এদিকে, বাজেট বক্তৃতায় তাঁর পরামর্শ দেওয়ার অধিকার রয়েছে বলে কিছুটা জোর দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “রাজ্য সরকার নিয়মমাফিক তাঁদের নীতি, ভাবনা রেখেন রাজ্যপালের ভাষণে এবং তা যথাযথভাবেই আমার কাছে পাঠানো হয়েছে। রাজ্যপাল এবং সাংবিধানিক প্রধান হিসাবেও আমার পরামর্শ দেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমার কাছে যা পাঠানো হয়েছে তা আমি খতিয়ে দেখছি।"
অন্যদিকে, রাজ্যপালের এহেন বক্তব্যর সমালোচনা করে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “আমার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বলছে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল রাজ্য বাজেটে হস্তক্ষেপ করে এবং উপস্থাপন বিশদে খুঁজতে যান না। রাজ্য মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদনের পরে এবং রাজ্য অর্থমন্ত্রীর দ্বারা রাজ্য বিধানসভায় উপস্থাপিত হওয়ার পরে তিনি তা খতিয়ে দেখতেই পারেন। রাজ্য বিধানসভার কোনও সদস্যর তা দেখার অনুমতি নেই। সেখানে রাজ্যপালের তা খতিয়ে দেখে পরামর্শ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। হতে পারে তিনি আমাদের চেয়ে বেশি জ্ঞানী এবং সে কারণেই এ জাতীয় মন্তব্য করেছেন। তবে রাজ্য সরকারের সাথে দ্বন্দ্ব তৈরি করতে তাঁকে এখানে নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার সংবিধান এবং সংসদীয় গণতন্ত্র অনুযায়ী কাজ করছে।"
Read the full story in English