বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতবর্ষ। আগামী ১৫ আগস্ট ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে দেশে। ১৯৪৭ সালের এই দিনেই বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের জন্ম হয়েছিল। ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে মুক্ত হয়েছিল ভারত। প্রতিবারের মতো এবারও দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হবে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আজ থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ উদযাপন। দেশে উড়বে ২০ কোটির বেশি জাতীয় পতাকা, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে বড় চমক কেন্দ্রীয় সরকারের। ‘হর ঘর তিরাঙ্গা’ কর্মসূচী বাস্তবায়িত করার জন্য দেশ জুড়ে ইতিমধ্যেই ২০ কোটি জাতীয় পতাকা দেশের সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি করা হয়েছে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে একথা ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ২২ জুলাই জনগণকে ১৩-১৫ আগস্টের মধ্যে তাদের বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বা প্রদর্শন করে ‘হর ঘর তিরাঙ্গা’ আন্দোলনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উপলক্ষে সরকার ‘হর ঘর তিরাঙ্গা কর্মসূচী সামনে আনে। মন্ত্রকের তরফে জানান হয়েছে ‘হর ঘর তিরাঙ্গা’ কর্মসূচী সফল ভাবে পালন করতে প্রায় ২০ কোটি জাতীয় পতাকা তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে ফ্ল্যাগ কোডের পরিবর্তন মানুষকে আরও বেশি জাতীয় পতাকা উত্তোলনে অনুপ্রেরণা জোগাবে। ভারতের কাছে যেমন ১৫ আগস্ট দিনটি খুবই বিশেষ, তেমনই বিশ্বের পাঁচ দেশের কাছেও বিশেষ এই দিনটা। কেন আসুন জেনে নিই-
বাহরিন, উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া, গণ প্রজাতন্ত্রী কঙ্গো এবং লিচেনস্টাইন। এই পাঁচ দেশের স্বাধীনতা দিবসও ১৫ আগস্ট।
বাহরিন- দিলমুন সভ্যতার প্রাচীন ভূমি মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশ। এরাও ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ১৫ আগস্ট। ১৯৭১ সালে এই দিনে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপে ব্রিটিশ উপনিবেশের পতন ঘটে। এবছর তাদের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ। যদিও জাতীয় দিবস হিসাবে ১৬ ডিসেম্বর দিনটি পালিত হয় বাহরিনে। প্রাক্তন সুলতান ইসা বিন সলমন আল খালিফা সিংহাসনে বসেছিলেন ওই দিন। ইতিহাস অনুযায়ী, এই দ্বীপপুঞ্জ বহু শাসকের অধীনে ছিল। আরব থেকে পর্তুগিজ, তারপর ১৯ শতকে ব্রিটিশদের পরাধীন হয় বাহরিন।
আরও পড়ুন: < Explained: জাতীয় পতাকা প্রদর্শনের নিয়মগুলো কী কী? >
গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো- ভারত ছাড়াও ১৫ আগস্ট স্বাধীন হয় মধ্য আফ্রিকার এই দেশ। ১৯৬০ সালে ফরাসি উপনিবেশের পতন হয়। ১৮৮০ সালে ফরাসি শাসন শুরু হয় এই দেশে। সাবেক নাম ছিল ফ্রেঞ্চ কঙ্গো। ১৯০৩ সালে নাম হয় মধ্য কঙ্গো। ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ফুলবার্ট ইউলৌ রাষ্ট্রপতি হিসাব শাসন করেন দেশ।
উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া- প্রতি বছর ১৫ আগস্ট জাপান বিজয় দিবস বা জাতীয় স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালন করে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। ওই দিনে দুই দেশেই সরকারি ছুটি কারণ, মার্কিন ও সোভিয়েত বাহিনী দশকের বেশি সময় কাল ধরে থাকা জাপানি দখল শেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ায়। ১৯৪৫ সালে ১৫ আগস্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান মার্কিন ও সোভিয়েত রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করায় জাপানি উপনিবেশের পতন হয় কোরিয়ায়। তারপর তিন বছর পর সোভিয়েত সমর্থিত উত্তর কোরিয়া ও মার্কিন সমর্থিত দক্ষিণ কোরিয়া জন্ম নেয়।
লিচেনস্টাইন- বিশ্বের অন্যতম ক্ষুদ্র দেশ, জার্মানদের হাত থেকে স্বাধীনতা পেয়েছিল ১৮৬৬ সালে। তারপর ১৯৪০ সাল থেকে ১৫ আগস্ট দিনটি জাতীয় দিবস হিসাবে পালন করে তারা। ওই বছরই ৫ আগস্ট লিচেনস্টাইন সরকার সরকারিভাবে ১৫ আগস্ট দিনটি জাতীয় দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। তবে অনেকেরই অজানা, ১৬ আগস্ট দেশের রাজকুমার প্রিন্স দ্বিতীয় ফ্রাঞ্জ-জোসেফের জন্মদিন। ১৯৩৮ থেকে ১৯৮৯ সালে মৃত্যু পর্যন্ত লিচেনস্টাইনের রাজকুমার ছিলেন তিনি।