আগামী মাসেই আইপিএলের নিলাম। সেই নিলামেই ধুন্ধুমার বাঁধতে পারে বঙ্গ তারকাকে ঘিরে। কনিষ্ক শেঠকে নিয়ে পেতে এখন থেকেই কোমড় বাঁধছে কেকেআর। এমনটাই সূত্রের খবর। শুধু কেকেআর নয়, কনিষ্ককে পেতে উন্মুখ রাজস্থান রয়্যালস, কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব এবং আরসিবিও।
বাঁ হাতি পেসার। গতির সঙ্গে সুইং করাতে ওস্তাদ। পেসে নজর কেড়েছেন সাম্প্রতিককালে। বেঙ্গল টি২০ কাপে ১১ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে। সৈয়দ মুস্তাক আলিতে রেলওয়েজের হয়ে ৩ ম্যাচে তাঁর শিকারের সংখ্যা ৫। দল কোয়ার্টার ফাইনালে না উঠলেও লাইমলাইটে চলে এসেছেন কনিষ্ক।
আরও পড়ুন: সিরাজ-শার্দুল বাদ, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ে খোলনলচে দল নামাচ্ছে টিম ইন্ডিয়া
তারপরেই আইপিএলে চার ফ্র্যাঞ্চাইজির নোটবুকে উঠে এসেছেন বাংলার তারকা। ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হলে কনিষ্ক বলে দিলেন, "আইপিএলে খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। যে দল আমাকে নেবে। তাদের চ্যাম্পিয়ন করার জন্য নিজেকে উজার করে দেব।"
বাংলার সমস্ত বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলে সর্বভারতীয় স্তরে উঠে এসেছেন। তারপরেই বাংলা ছেড়ে কয়েক মরশুম আগে পাড়ি দিয়েছেন রেলওয়েজের হয়ে খেলতে। কনিষ্ক এখনো বাংলার হয়ে খেলা মিস করেন। বলছিলেন, "এখনো বাংলার হয়ে খেলা মিস করি। বাংলার জার্সিতে খেলেই তো যাবতীয় পরিচিতি। তবে কেরিয়ারের একটা জায়গায় পৌঁছে চাকরি আর নিরাপত্তা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তখন রেলওয়েজে নাম লেখাই।"
২৩ বছরের বাঁ হাতি তারকা অবশ্য খেলোয়াড়ি জীবনের সেরা সময় মানেন সিএসকে-অধ্যায়কে। ২০১৮ সালের আইপিএলের সংস্করণে চেন্নাইয়ের স্কোয়াডে ছিলেন। স্বয়ং মহেন্দ্র সিং ধোনির সতীর্থ- এই অনুভূতি এখনো আচ্ছন্ন করে দেয় স্পিডস্টারকে।
কনিষ্ক সেই স্মৃতি রোমন্থন করে বলছিলেন, "ধোনি আমার কাছে ঈশ্বরের মত। শুধু ধোনি নন, রায়না, ব্রাভো প্রত্যেকেরই ছোটোখাটো টিপস কেরিয়ারের অনেক কাজে এসেছে। চাপের মুহূর্তে কীভাবে শান্ত থাকতে হয়, কীভাবে বোলিংয়ের সময় ফিল্ড সাজাতে হয়- এসব বিষয়ে অনেক শিখেছি। সিএসকের সবথেকে বড় বিষয়, দলের প্রত্যেককেই সমান চোখে দেখা হয়। ধোনি-রায়না যে গুরুত্ব পান, আমাকেও সেই মর্যাদা দেওয়া হত। দলের টিমম্যান হওয়াটাই আসল। এটাই সিএসকে-তে খেলে বুঝেছি। ড্রেসিংরুমে বন্ধুর মত আমরা একে অন্যের কথা শেয়ার করতাম।"
ক্যাপ্টেন ধোনির মাহাত্ম্য কেমন, তা বোঝাতে গিয়েই পুরোনো অভিজ্ঞতা ঘেঁটে কনিষ্ক বলছিলেন, "ধোনির কাছে একবার একটা স্পেসিফিক বোলিংয়ের জন্য ফিল্ড প্লেসমেন্ট নিয়ে কথা হচ্ছিল। ও আমাকে সেই বোলিংয়ের জন্য চার রকম ফিল্ড পজিশন সেট করে দিয়েছিলেন। ব্যাটসম্যান স্ট্রেট ব্যাটে না ক্রস ব্যাটে খেলবে সেই অনুযায়ী ফিল্ডার সাজানো বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। আমি অবাক হয়ে যাই।"
দুই মরশুম কেটে গিয়েছে, সিএসকেতে অতীত হয়ে গিয়েছেন কনিষ্ক। তবে এখনো রায়নাদের সঙ্গে।যোগাযোগ রয়ে গিয়েছে বাংলার তারকার। সৈয়দ মুস্তাক আলিতেই গ্রুপ-এ তেই রেলওয়েজের সঙ্গে ছিল উত্তরপ্রদেশ। রেলওয়েজ বনাম উত্তরপ্রদেশ ম্যাচেই রায়নার সঙ্গে পুরোনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নিয়েছেন কনিষ্ক। তিনি বলছিলেন, "ম্যাচের পর রায়নার সঙ্গে আমার ৪০ মিনিটের ওপর আড্ডা হল। রায়না আমাকে বলল, 'দারুণ বডি বানিয়েছিস। বল ভালোই সুইং হচ্ছে।' আমাকে দেখে ইমপ্রেস হয়ে গিয়েছে রায়না ভাই।"
আপাতত আইপিএলের নিলামের অপেক্ষায় বাংলার কনিষ্ক। কেকেআর, কিংস ইলেভেন, রাজস্থান এবং আরসিবি- চার ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে কোন দলের জার্সি গায়ে চাপান তিনি, সেটাই দেখার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন