Advertisment

এই তিন ভুলেই ডুবছে পালতোলা নৌকো! না শুধরোলে বিদায় হতে পারে ফেরান্দোর

ডুরান্ড কাপের পর এএফসি কাপেও ব্যর্থ এটিকে মোহনবাগান শিবির। তারপরেই কোচ ফেরান্দোকে নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে।

author-image
Subhasish Hazra
New Update
NULL

স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে ঘরের মাঠ যুব ভারতীতে। কোচ হুয়ান ফেরান্দো হাবাস-জমানার ক্ষত ভরাট করতে পারলেন না। সেই এএফসি কাপে ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালের বিদায় নিতে হয়েছে গতবারের মত। সংযোজিত সময়ে নাটকীয়ভাবে জোড়া গোলে হেরে এএফসি অভিযান খতম হয়ে গিয়েছে সবুজ মেরুন শিবিরের। সেই দুঃস্বপ্নের ঘোর যেন এখনও কাটছে না মেরিনার্সদের। কোচ হুয়ান ফেরান্দোর স্ট্র্যাটেজি নিয়েই প্ৰশ্ন উঠে গিয়েছে ম্যাচের শেষে।

Advertisment

পাসিং ফুটবল:

কোচ হুয়ান ফেরান্দো বার্সেলোনার ধাঁচে পাসিং ফুটবল খেলতে পছন্দ করেন। বল পজেশন বেশি রেখে আক্রমণের ঢেউ তুলতে চান নিজের স্ট্র্যাটেজিতে। কুয়ালালামপুরের বিরুদ্ধে এএফসি কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও ফেরান্দোর রণকৌশল ছিল ধীরে ধীরে বল পজেশন দখলে রেখে ফাইনাল থার্ডে আক্রমণ নিয়ে যাওয়া।

আরও পড়ুন: কুয়ালালামপুরের টর্পেডোয় বিধ্বস্ত বাগান! ডুরান্ডের পর ফেরান্দোর মাথা নিচু AFC-তেও

তবে কুয়ালালামপুরের বিরুদ্ধে সেই কৌশল খাটেনি। প্ৰথমত কুয়ালালামপুর সিটি কোচ বোজান হাদিক ফেরান্দোর স্টাইল সম্পর্কে ভালোই অবহিত ছিলেন। তিনি প্ৰথম থেকেই রক্ষণে খোলস আলগা করেননি। ডিফেন্সে শাটার নামিয়ে দিয়ে নম্বরের আধিক্যে আটকে রাখতে চেয়েছিলেন বাগানকে। সেই কাজে তিনি পুরোপুরি সফল। সেই কারণে লিস্টন, মনবীররা ফাইনাল থার্ডে সুবিধা করতে পারেননি। কুয়ালালামপুরের কামাল আজিজি কার্যত বোতলবন্দি করে রেখেছিলেন লিস্টন কোলাসোকে।

বক্স স্ট্রাইকারের অভাব:

কোচ ফেরান্দো ভেবেছিলেন রয় কৃষ্ণ বা ডেভিড উইলিয়ামসদের অভাব ঢেকে দেবেন লিস্টন, মনবীর, কিয়ানদের ভারতীয় স্ট্রাইকাররা। তাই তিনি কোনও বিদেশি বক্স স্ট্রাইকার সই করার পথে হাঁটেননি। উল্টে রক্ষণ সংগঠন মজবুত করার জন্য স্কোয়াডে দুই বিদেশি স্টপার থাকা সত্ত্বেও সই করিয়েছেন ব্রেন্ডন হ্যামিল, ফ্লোরেন্টিন পোগবাকে।

কোচ ফেরান্দো ডুরান্ড এবং এএফসির ব্যর্থতার পর অন্তত বুঝে গিয়েছেন রয় কৃষ্ণ এবং ডেভিড উইলিয়ামসদের বিকল্প ভারতীয় স্ট্রাইকাররা হতে পারেন না। মাঝমাঠে উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল জনি কাউকোর। বাগানের বল পজেশন ধরে রাখার ক্ষেত্রে একাই দলের নিউক্লিয়াস হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ট্র্যাক ব্যাক করে রক্ষণেও সাহায্য করছিলেন ফিনিশ তারকা। আপফ্রন্টে বল বাড়ালেও গোলে কনভার্ট করার জন্যই যে কেউ ছিল না!

আরও পড়ুন: Emami ইস্টবেঙ্গলের প্ৰথম বোর্ড মিটিংয়েই বেনজির সিদ্ধান্ত! দলের সঙ্গে এবার যাবেন কর্তারাও

টিম কম্বিনেশনে ভ্রান্তি:

হারের পরের প্ৰথম একাদশ বাছাই নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। স্কোয়াডে ছিলেন গত সপ্তাহেই এটিকে মোহনবাগান শিবিরে যোগ দেওয়া অজি তারকা দিমিত্রি পেত্রাতোস। চারদিন আগে যোগ দেওয়ার কারণে তারকাকে একাদশে নামানোর ঝুঁকি নেননি কোচ। প্রশ্ন হচ্ছে, ডুরান্ডে গোল কনভার্ট করার ক্ষেত্রে যেখানে কুরুনিয়ান, আশিস, লিস্টনদের ব্যর্থতা প্রমাণিত, সেখানে এরকম বড় ম্যাচে কোচ পেত্রাতোসকে খেলানোর ঝুঁকি নেবেন না কেন? পেত্রাতোসকে উইথড্রয়ালে রেখে লিস্টনকে নিজের স্বাভাবিক পজিশনে খেলানো হলে তিনি আরও ভয়ঙ্করভাবে অপারেট করতে পারতেন। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।

তাছাড়া, স্কোয়াডে লেস্টর ফার্নান্দেজের মত অভিজ্ঞ ফুটবলার থাকা সত্ত্বেও মাঝমাঠে দীপক টাংরিকে খেলানো নিয়ে প্ৰশ্ন উঠছে। প্রীতম কোটাল, মনবীর সিংরা যে ফেরান্দোর স্টাইলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছেন না, তা জলের মত স্পষ্ট। ফ্লোরেন্তিন পোগবার দুর্বলতা এখনই প্রকট হয়ে গিয়েছে। সেন্ট্রাল ব্যাক পজিশনে ভীষণই শ্লথ তিনি। কুয়ালালামপুরের তৃতীয় গোলের ক্ষেত্রে তিনিই দায়ী।

আরও পড়ুন: স্ট্র্যাটেজিতে কোনও গলদ নেই, হারের পর ফুটবলারদের দিকে সরাসরি আঙুল বাগান বস ফেরান্দোর

সামনেই কলকাতা লিগ বাদ দিয়ে আইএসএল। আইএসএল-এর মত মেগা টুর্নামেন্টে এত দুর্বলতা নিয়ে যে লড়াই করে যাবে, উপলব্ধি করে ফেলেছেন হয়ত ফেরান্দো। এই ভুল ত্রুটি যত তাড়াতাড়ি মেরামত করবেন তিনি, ততই ছন্দে ফিরবে মেরিনার্সরা।

গত বছর একইভাবে হাবাসের চাকরি গিয়েছিল। এএফসির ব্যর্থতার পর আইএসএল-এর শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি কোচ হাবাসের। শেষমেশ হাবাসকে সরিয়ে রাতারাতি ফেরান্দোকে নিয়ে আসা হয়েছিল। এবার কি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি নাকি আইএসএল-এ ভুল শুধরে মেরিনার্সদের স্বস্তি উপহার দেবেন বাগান কোচ, সেটাই দেখার।

atk-mohun-bagan Mohunbagan ATK Mohun Bagan Indian Football Kolkata Football
Advertisment