Sunita Williams Health Updates: সুনিতা উইলিয়ামসের শরীরে প্রতি সেকেন্ডে ৩০ লক্ষ লোহিত কণিকা ধ্বংস হচ্ছে, দাঁড়ানোর ক্ষমতা প্রায় নেই, স্পেস অ্যানিমিয়ার মতো সমস্যা, কতদিনে সুস্থ হবেন তিনি?
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ৯ মাস কাটানোর পর ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর অবশেষে নিরাপদে পৃথিবীতে অবতরণ করেছেন। বুধবার সকালে, ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের ড্রাগন মহাকাশযানটি ফ্লোরিডার কাছে সমুদ্রে সফল অবতরণ করে। সুনিতার নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে বিশ্বজুড়ে খুশির হাওয়া।
সুনিতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর, নিক হেগ এবং রুশ মহাকাশচারী আলেকজান্ডার গর্বুনভ মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার ড্রাগন মহাকাশযান এবং ইলন মাস্কের স্পেসএক্সে চড়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন। পৃথিবীতে ফিরে আসতে তাঁদের ১৭ ঘন্টার কাছাকাছি সময় লেগেছে।
সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর ৫ জুন, ২০২৪ তারিখে স্টারলাইনার পরীক্ষামূলক যানে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছান। সেখানে আট দিন কাটানোর পর তাদের ফিরে আসার কথা ছিল, কিন্তু মহাকাশযানের কারিগরি ত্রুটির কারণে তাঁদের পৃথিবীতে ফিরে আসা আটকে যায়। মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে পা রাখার সাথে সাথে সুনিতা মহাকাশে মোট ২৮৬ দিন কাটিয়ে তৃতীয় মহিলা বিজ্ঞানী হিসেবে আইএসএস-এ সর্বাধিক দিন কাটানোর রেকর্ড গড়েছেন।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) প্রাক্তন বিজ্ঞানী বিনোদ কুমার শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি রিপোর্ট অনুসারে, সুনিতা এবং বুচ যে সকল শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন তার মধ্যে রয়েছে দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা, হাঁটতে অসুবিধা এবং মাথা ঘোরা ইত্যাদি। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা পুনরায় শুরু করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। জাপানের মহাকাশ সংস্থা JAXA-এর মতে, পৃথিবীতে ফিরে আসা মহাকাশচারীরা দাঁড়ানোর সময় মাথা ঘোরা অনুভব করেন, যা অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন নামে পরিচিত।
অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে যে মহাকাশে অবস্থান করার সময়, মহাকাশচারীদের শরীরের ৫০ শতাংশ লোহিত রক্তকণিকা ধ্বংস হয়ে যায় এবং যতক্ষণ পর্যন্ত অভিযান চলতে থাকে ততক্ষণ এই পরিস্থিতি বজায় থাকে। তার মানে শরীরে রক্তের অভাব লক্ষ্য করা যায়। একে বলা হয় স্পেস অ্যানিমিয়া।
এছাড়াও, মহাকাশে থাকার সময় মহাকাশচারীদের পেশী দুর্বল হয়ে যায় এবং হাড়ে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। পৃথিবীতে ফিরে আসার পর মহাকাশচারীরা দুর্বলতা এবং ক্লান্তি অনুভব করেন। মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে পা রাখার সাথে সাথে সুনিতা মহাকাশে মোট ২৮৬ দিন কাটানো তৃতীয় মহাকাশচারী হিসাবে রেকর্ড গড়েছেন।
মহাকাশযান ছাড়ার পর, উভয় মহাকাশচারীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নাসার তরফে জানানো হয়েছে সুনিতা উইলিয়ামস সহ সকল মহাকাশচারী সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুস্থ আছেন। সুনিতা অনেকক্ষণ ধরে মহাকাশের মাধ্যাকর্ষণে ছিলেন। এর ফলে তার শরীরের পেশী এবং হাড় দুর্বলতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। অতএব, তাদের শরীরের পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগবে।
চিকিৎসকদের একটি দলটি মহাকাশচারীদের রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি সহ সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। সুনিতার নিরাপদে পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের জন্য আমেরিকা জুড়ে ২১টি মন্দির এবং গির্জায় সুনিতা ও উইলমোরের জন্য প্রার্থনা করা হয় বলেও জানা গিয়েছে ।