জোর ধাক্কার মুখে আদানি গ্রুপ। শেয়ার বাজারে আদানিদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দাম পরন্ত। এই অবস্থায় প্রস্তাবিত তাজপুর বন্দরের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রাজ্য়ের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুভেন্দু অধিকারী আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'গোপন আঁতাঁত'-এর কথা বলেছেন। একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, 'আমি তাজপুর বন্দর নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। ২৫,০০০ কোটি বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছিল। ১০ লাখ চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতির এবার কী হবে?'
এদিকে আদানিদের টালমাটাল অবস্থার জেরে বুধবাই কেন্দ্রীয় সরকার পড়ে যেত বলে পূর্ব বর্ধমানের সভা থেকে দাবি করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আদানি বিতর্কের আঁচ পড়েছে সংসদে। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও চালুর সঙ্গে সঙ্গে মুলতবি হয়ে গিয়েছে। যৌথ সংসদীয় কমিটি বা প্রধান বিচারপতির নজরদারিতে কমিটি গড়ে তদন্তের দাবি তুলেছে তৃণমূল সহ প্রায় সহ বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্নের মুখে তাজপুর বন্দরের ভবিষ্যৎ।
তাজপুর বন্দর তৈরি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা টানাপোড়েন চলছে। নিউ টাউনের ইকো পার্কে বিগত শিল্প সম্মেলনে গৌতম আদানির পুত্র কিরণ আদানির হাতে তাজপুর বন্দরের কাজ শুরুর অনুমতিপত্র তুলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।
সেই সময় বলা হয়েছিল পনেরো হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি এই বন্দরের প্রাথমিকভাবে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ করবে রাজ্য় সরকার। সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার কোটি বিনিয়োগে তৈরি হবে এই সমুদ্র বন্দর। প্রত্য়ক্ষভাবে ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের কথাও বলা হয়েছিল। সেই কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ শুরুর অনুমতিপত্র আদানিদের হাতে তুলে দেওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন, বন্দর তৈরির নামে জনগণকে ঢপ দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছিলেন, 'রাজ্য সরকার তো নীতিগতভাবে বেসরকারি সংস্থার জন্য জমি অধিগ্রহণের বিরোধী। তাহলে ৫০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করবে কে? একেবারে ঢপের চপ। আমি বারে বারে বলি একটি গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি করতে গেলে সেখানে লক গেট হবে। তার পাশে ন্যূনতম ৫০০০ একর জমি লাগে। চার লেনের জাতীয় সড়ক লাগে। রেলের লাইন লাগে। রেল লাইন হল না, জাতীয় সড়কের কাজ শেষ হল না, তাহলে হবেটা কী করে?'আদানিদের সংস্থার হাল টালমাটাল হতেই এবার সুর চড়িয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানাকরলেন বিরোধী দলনেতা।