Advertisment

করোনায় বাংলাকে দিশা দেখাচ্ছে ঝাড়গ্রাম

"প্রতি ঘরে ঘরে কোভিড উপসর্গ। টেস্ট করো, আইসোলেট করো। কেস যত বাড়ছে টেস্ট তত বাড়াতে হবে। এটাই নিয়ম। তা রাজ্য সরকার করছে না।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
ফের নয়া রেকর্ড, রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ২ হাজার ছাড়াল

করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো, বিশেষত দিন প্রতি পরীক্ষা আরও বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন বিশিষ্ট চিকিৎসকরা। সরকারি বুলেটিনের শেষ হিসেবে আক্রান্ত সংখ্যার নিরিখে কলকাতার পরে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগণা, তারপর হাওড়া। এরপর দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলী ও মালদায় হাজার টোপকেছে আক্রান্তের সংখ্যা। একমাত্র ঝাড়গ্রাম জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পঞ্চাশ ছোঁয়নি, ২৮। কালিম্পং ৫৯। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসকের দাবি, লকডাউনের সময় কড়া পদক্ষেপ, তারপর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির সক্রিয়তার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

Advertisment

সরকারি বুলেটিন দেখলে এটা স্পষ্ট যত সংখ্যায় টেস্ট বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে ততই। বিগত ৪ দিনের হিসাবেই তা অনেকটা পরিস্কার। ১৪ জুলাই পরীক্ষা হয়েছে ১১,১০২ জনের, আক্রান্ত ১,৩৯০। ১৫ জুলাই পরীক্ষা হয় ১১,৩৮৮ জনের, এর মধ্যে আক্রান্ত ১,৫৮৯। ১৬ জুলাই ১৩,১০৮ জনের পরীক্ষা হয় এবং আক্রান্ত ১,৬৯০। ১৭ জুলাই টেস্টের সংখ্যা১৩,২৪০, আক্রান্ত ১,৮৯৫। বিশিষ্ট চিকিৎসকরা দাবি করছেন, একমাত্র উপায় টেস্ট, আর টেস্ট।

আরও পড়ুন- সিইএসসি-র বিজ্ঞাপনে অসন্তুষ্ট বিদ্যুৎমন্ত্রী, ফের ব্যাখ্যা দিয়ে জানাতে নির্দেশ

শ্রমজীবী স্বাস্থ্য উদ্যোগের উপদেষ্টা ডা: পূর্ণব্রত গুণ বলেন, "আমাদের রাজ্যে প্রায় ১৫ হাজার টেস্টের ক্যাপাসিটি আছে। আরও টেস্ট করলে ভাল হত। তবে কলকাতা ও হাওড়ার থেকে গ্রামের দিকে করোনা আক্রান্ত কম হচ্ছে। সেখানে যাদের হয়েছে অনেকটাই দিল্লি, মুম্বাই থেকে আসা লোকেদের জন্য।"

যেখানে একই রাজ্যে অন্য জেলাগুলিতে হুহু করে বাড়ছে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা, সেখানে ঝাড়গ্রাম কী করে এটা সম্ভব করল? ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রাণী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, “লকডাউনের সময় আমাদের কড়া নজরদারি ছিল। বর্ডারগুলি সিল ছিল। ঝাড়খন্ড ও ওড়িশা সীমান্তে কড়া নজরদারি ছিল। কাউকে আমরা ঢুকতে দিচ্ছিলাম না। কেউ ঢুকলে তাঁকে আলাদা করে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হত। আমাদের এখানে যত পরিযায়ী শ্রমিক এসেছিলেন, তাঁদের কম্পালসারি কোয়ারেন্টাইনে রেখেছিলাম। বেশিরভাগ জায়গায় টেস্ট করিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছিলাম”। জেলার চিকিৎসকদের একাংশ টেস্ট কম হচ্ছে বলে কানাঘুষো করলেও তা মানতে নারাজ জেলাশাসক। এই চিকিৎসকদের পরামর্শ, তাহলে ঝাড়গ্রামকে মডেল করুক রাজ্য় রাজ্য় সরকার।

আরও পড়ুন- সপরিবারে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে পুলিশ, বিস্ফোরক দাবি অর্জুনের

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বারে বারে টেস্ট বাড়ানোর কথা বলছেন। আয়েষা রাণী আরও বলেন, "আমরা টেস্টিং-এর ওপর জোর দিয়েছি। আমাদের ছোট জেলা, জনসংখ্যা ১১ লক্ষ। তা সত্বেও প্রায় ১০হাজার টেস্ট করা হয়েছে। ৩হাজার লাল প্যাথ ল্যাবে টেস্ট করেছিলাম। তারপর প্রায় ৭ হাজার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কেলেজে টেস্ট করেছি। ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। দুটো মোবাইল ভ্যান রয়েছে নমুনা সংগ্রহ করার জন্য। ঝাড়গ্রামে ট্রুনাট পদ্ধতিতে টেস্ট হয়। এখানে সন্দেহ জনক মনে হলে দ্বিতীয়বারের জন্য পরীক্ষা করতে হয় মেদিনীপুরে। ট্রুনাট পদ্ধতিতে ৪৩৩ জনের টেস্ট হয়েছে। ৭৫ বেডের কোভিড হাসপাতালে একজন ভর্তি রয়েছেন। এখন প্রতিদিন গড়ে ২০০ টেস্ট হচ্ছে। জেলায় সেফ হোম আছে ৬টা। ১৫০ বেড।"

আরও পড়ুন- সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল বা কংগ্রেস দেখার দরকার নেই: অভিষেক

সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের ডা: সজল বিশ্বাস বলেন, "নাম্বার অব টেস্ট বাড়ানো উচিত। ধামাচাপা দেওয়ার প্রবণতা, ঠিক নয়। টেস্ট না করার পরিণতি মারাত্মক হবে। পরিকাঠামো বাড়ানো দরকার। ১০ লক্ষ জনসংখ্যায় ২ হাজার টেস্ট হয়নি। অন্য দেশগুলিতে ১০ লক্ষে ৪০ হাজার হতে পারে।" অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরস-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, "প্রতি ঘরে ঘরে কোভিড উপসর্গ। টেস্ট করো, আইসোলেট করো। কেস যত বাড়ছে টেস্ট তত বাড়াতে হবে। এটাই নিয়ম। তা রাজ্য সরকার করছে না।" তাঁর অভিযোগ, "সংখ্যা কম দেখালে আমরা ভাল আছি। টেস্ট কমাও কেসের সংখ্যা কমাও। এটা ঠিক নয়।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus Lockdown corona
Advertisment