গত অগাস্টে আফগানিস্তান দখলের পর বদলের কথা বলেছিল তালিবানরা। জানিয়েছিল, তাদের জমানায় নারী শক্তির বিকাশ থমকাবে না। মহিলা অধিকার কার্যকর থাকবে। কিন্তু, আফগানমুলুকে ক্রমেই তাদের সেই দাবির উল্টো ছবি প্রকট হচ্ছে। এই বছর মার্চেই দেশের বেশ কয়েকটি মহিলা স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে তালিবান শাসকরা। আরা শনিবার তালিবানদের ফতোয়া, জনসমক্ষে আফগান মহিলাদের মুখ ঢাকতে হবে। নারীর লজ্জা নিবারণে বোর্খাকেই সর্বোত্তম পোশাক বলে জানানো হয়েছে।
এ দিন শীর্ষ তালিব নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নির্দেশ পড়ে শুনিয়েছেন সেদেশের ধর্ম মন্ত্রকের এক আধিকারিক। সেখানে উল্লেখ, কোনও মহিলা বোর্খা না পড়লে তার বাবা বা বাড়ির কোনও নিকট পুরুষ সদস্যের সঙ্গে দেখা করবে প্রশাসনের কর্মীরা। প্রয়োজনে তাদের বন্দি করা হতে পারে। এমনকী সেই পরিবারের কেই যাতে ভবিষ্যতে সরকারি চাকরি না পায় তারও বন্দোবস্ত করা হবে।
তালিবানদের মতে, নীল বোর্খা হল আদর্শ। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত দুনিয়াজুড়ে কট্টর তালিবান শাসনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল এই নীল বোর্খা।
আফগানিস্তানের বেশিরভাগ মহিলা ধর্মীয় কারণে হেড স্কার্ফ পরেন, তবে কাবুলের মতো শহরাঞ্চলে অনেকেই তাদের মুখ ঢেকে রাখেন না। যা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে কট্টরপন্থী তালিবানরা।
গত অগাস্টের পর পশ্চিমী দেশগুলির চাপের কাছে কিছুটা নিনু হয়েছিল তালিবানরা। সময় যত এগোচ্ছে ততই খোলস ছাড়ছে তালিবদের। চলতি বছর মার্চ মাসে আশ্চর্যজনকভাবে আফগানদের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়গুলি, যেগুলো সকালে তাচালু ছিল তা বন্ধ করে দেয় তালিবান শাসকরা। যা আন্তর্জাতিক স্তরে সমালোচিত হয়েছিল। এরপরই পদক্ষেপ করে আমেরিকা। সে দেশের আর্থিক সঙ্কট কমানোর জন্য পরিকল্পিত মিটিং বাতিল করে প্রতিবাদ করেছে ওয়াশিংটন। আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশগুলি আফগানদের উন্নয়ন সহায়তা কমিয়েছে এবং ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
তালিবানদের পাল্টা দাবি এর আগের শাসনের তুলনায় এখন আফগান মেয়েদের অনেক বেশি ছাড় দেওয়া হয়েছে। আগে কোনও পুরুষ আত্মীয় ছাড়া মহিলাদের ঘর থেকে বের হওয়ার অনুমতি ছিল না। মহিলাদের মুখ ঢেকে রাখতে হত। সেই প্রথাই আবার ফিরে আসছে। প্রশাসন নারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা বাড়াচ্ছে। পুরুষদের ছাড়া মহিলাদের ভ্রমণ সীমিত করা এবং পুরুষ ও মহিলাদের একই সময়ে পার্কে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
Read in English