ফের রক্তাক্ত কাবুল। শনিবার সকালে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি গুরুদ্বারের কাছে অতর্কিতে হামলা জঙ্গিদের। এলোপাথাড়ি গুলিতে কমপক্ষে দু'জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বছর ষাটেকের সাবিন্দর সিং। নিহত গজনির বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের পরিবারের সদস্যরা দিল্লিতে থাকেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে আহমেদ নামে আরও একজনের। নিহত ব্যক্তি ওই গুরুদ্বারের নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
কাবুলের এই গুরুদ্বারের সভাপতি গুরনাম সিং। নৃশংস এই হামলা প্রসঙ্গে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, ''বন্দুকবাজরা গুরুদ্বারে গুলি চালিয়েছে। আমরা এই মুহূর্তে বিল্ডিংয়ের উল্টোদিকে রয়েছি। কিছু লোক মারা গেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে আমরা ভিতরে ঢুকতে পারলে তবেই ছবিটা পরিষ্কার হবে।'' তিনি আরও জানিয়েছেন, হামলার সময় গুরুদ্বারের ভিতরে শিখ সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ২০-২৫ জন লোক ছিলেন।
অন্যদিকে ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে পঞ্জাবের রাজ্যসভার সাংসদ বিক্রম সাহনি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ''যে জঙ্গিরা কাবুলের গুরুদ্বারে হামলা করেছে তারা সম্ভবত তালিবানের প্রতিদ্বন্দ্বী দায়েশ গোষ্ঠীর। তালিবান যোদ্ধারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে। দু'পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে। এই হামলার জেরে গুরুদ্বারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪ জন শিখ নিখোঁজ রয়েছেন।''
এদিকে কাবুলের গুরুদ্বারে হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, "কাবুলের একটি পবিত্র গুরুদ্বারে হামলার খবর পেয়ে আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা নিবিঢ়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। এসম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছি।'' বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর কাবুলে এই হামলার নিন্দা জানিয়ে টুইটে লিখেছেন, "গুরুদ্বার কার্তে পারওয়ানে কাপুরুষোচিত হামলার বিরুদ্ধে প্রত্যেকের কঠোর ভাষায় নিন্দা করা উচিত। হামলার খবর পাওয়ার পর থেকে আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।''
আরও পড়ুন- সন্ত্রাসকে ‘খুল্লামখুল্লা’ সমর্থন, লস্করের শীর্ষ নেতাকে জঙ্গি মানতে নারাজ চিন
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর মাসে তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের কয়েক মাস পরেই অজ্ঞাতপরিচয় জঙ্গিরা গুরুদ্বার কার্তে পারওয়ানে হামলা চালিয়ে সম্পত্তি ভাঙচুর করেছিল। এরপর থেকে আফগান শিখরা ভারতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করে চলেছেন। ২০২০-এর ২৫ মার্চ আইএস-এর জঙ্গিরা কাবুলের গুরুদ্বার গুরু হার রাই সাহেবে গুলি চালায়।
বর্বরোচিত সেই জঙ্গি হামলার জেরে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছিলেন। তারও আগে ২০১৮ সালে আফগানিস্তানের জালালাবাদে একটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাক্তন শিখ সাংসদ নরিন্দর সিং খালসার বাবা আওতার সিং খালসা-সহ কমপক্ষে ১৯ শিখ এবং হিন্দু নিহত হয়েছিলেন।