ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক মাস পার। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করার পর বহু দেশবাসী রুশ সেনার বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। অনেক তা ফলাও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছেন। কিন্তু ইভজেন ক্লোপোটেঙ্কো হাতিয়ার তুলতে পারেননি। কারণ উনি তো হাতা-খুন্তির কাজ জানেন। বিখ্যাত ইউক্রেনীয় শেফ দেশবাসীর পাশে দাঁড়াতে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন।
পশ্চিম প্রান্তের শহর লিভিভে ছোট্ট রেস্তোরাঁ খুলেছেন তিনি। সপ্তাহখানেক হল তার পথ চলা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তাঁর রেস্তরাঁ ইনশিনি এখন বহু মানুষের পেট ভরাচ্ছে। তাও আবার বিনা পয়সায়। শেফ বলেছেন, "আমি জানি বন্দুকে আমি অভ্যস্ত নই। কিন্তু আমি ছুরি হাতে দারুণ যোদ্ধা। আমার জীবনের একটা লক্ষ্য, মানুষের পেট ভরানো।" আর সেই কাজই করছেন তিনি। মেনুতে দুই নম্বর খাবারটি তিনি বিনা পয়সায় খাওয়াচ্ছেন গ্রাহকদের। সেটি একটি বিখ্যাত স্যুপ।
বিখ্যাত রিয়ালিটি শো মাস্টারশেফের ইউক্রেনীয় সংস্করণের বিজয়ী ইভজেন কয়েক বছর আগে শিরোনামে এসেছিলেন একটি খাবারের জন্য। ইউক্রেনীয় বরশ্ট-এর জন্য। বীট-বাধাকপির একটি লাল স্যুপকে ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় তোলার জন্য তিনি প্রচার করেন। রুশ সরকার সেই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে।
আরও পড়ুন টানা যুদ্ধে ধুঁকছে ইউক্রেন, প্রায় শেষ সামরিক শক্তি, দাবি রাশিয়ার
ইভজেন রেস্তরাঁর তহবিল নিজের পকেট থেকেই দিচ্ছেন। এছাড়া অনুদান, এবং বাকি মেনুর খাবার বিক্রির টাকায় চলছে এই রেস্তরাঁ। কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে এখন বিনা পয়সায় খাওয়ার লোক বেশি। অনেকেই পূর্ব প্রান্ত থেকে দেশের পশ্চিম দিকে চলে এসেছেন ঘরবাড়ি ছেড়ে। অনেকে পোল্যান্ডে চলে যাচ্ছেন। তাঁরাই মূলত ইভজেনের খদ্দের।
দোনেৎস্ক অঞ্চলে গোলাবর্ষণের কারণে ঘরছাড়া ওলেনা সেভেরিনোভা এই রেস্তোরাঁয় প্রতিদিন আসেন খাবার খেতে। তিনি বলেছেন, "যুদ্ধের কারণে আমি ঘরছাড়া। আমার মতো অনেকেই দিশাহারা।" ৭৩ বছরের বৃদ্ধা বলছেন, "ইভজেনকে অনেক ধন্যবাদ, আমাদের বিনা পয়সায় খাওয়ানোর জন্য। এইভাবেই সে আমাদের বাঁচাচ্ছে।"