রাশিয়া হামলা চালানোর পর থেকেই সমবেদনার ভেলায় ভাসছে ইউক্রেন। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকেই সাহায্য পৌঁছচ্ছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশে। আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলো তো আছেন। নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও ঢালাও সাহায্য করছে ইউক্রেন প্রশাসন এবং বাসিন্দাদের। পরিসংখ্যান বলছে, এই ক'দিনে শুধুমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সিতেই ইউক্রেন প্রশাসনের হাতে পৌঁছেছে দেড় লক্ষেরও বেশি মার্কিন ডলার।
মজার ব্যাপার হল, ক্রিপ্টোকারেন্সি আবার ডিজিটাল মুদ্রা। যার বিনিময়ে, রাশিয়ার একচেটিয়া নেতৃত্ব বিশ্ববাসী সাম্প্রতিক অতীতে দেখেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকেই দেখা যায়, আচমকা ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন অতীতের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। যা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের আশঙ্কা, বিশ্বজু়ড়ে লাগু করা আর্থিক বিধিনিষেধ এড়াতেই রাশিয়া ক্রিপ্টোকারেন্সির সাহায্য নেওয়া বাড়িয়েছে। আর, সেই কারণেই এই ডিজিটাল মুদ্রার বাজারের এত রমরমা।
ইতিমধ্যে সপ্তাহজুড়ে রাশিয়ার হামলা বেড়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সোশ্যাল মিডিয়া টুইটারে আবেদন, ' তোমাদের ক্রিপ্টো আমাদের পাঠাও।' বিটকয়েন লেনদেনের জন্য নির্দিষ্ট বিভিন্ন সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে এই সব টুইট ক্রিপ্টো লেনদেনকারীদের কাছে পৌঁছচ্ছে। 'বিটকয়েন', 'ইথার' এবং 'টিথার'- জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সির অন্যতম। তারপর থেকেই ক্রিপ্টোকারেন্সির বিনিয়োগকারীরা ২.২ কোটি মার্কিন ডলার ইউক্রেন সরকারকে পাঠিয়েছেন। ইউক্রেন সেনাকে সাহায্য করতেই ওই সব ক্রিপ্টোকারেন্সি পাঠানো হয়েছে। অন্য কেউ না। ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনে অভ্যস্ত বিভিন্ন সংস্থা একথা জানিয়েছে।
আর, এই কারণে গত সপ্তাহে একটি পাতা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় একটি ওয়েবসাইট। কারণ, ওই পাতা বা অ্যাকাউন্টের আড়ালে কিয়েভের একটি সংস্থা অর্থ সংগ্রহ করছিল। তারা ইউক্রেনের নাগরিকদের হাতে অর্থ এবং অস্ত্র তুলে দিতে চায়। সেজন্যই অর্থ সংগ্রহ করছিল। এভাবে সামরিক কাজের জন্য অর্থসংগ্রহ ওয়েবসাইটটির নীতির বিরোধী। সেই কারণে তারা অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিয়েছে বলেই জানিয়েছে।
আরও পড়ুন- মৃত্যুপুরী ইউক্রেন, ক্ষেপণাস্ত্র হানার মধ্যেই প্রাণ হাতে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা
কিন্তু, তাতে ইউক্রেনের ওই সংগঠনের ক্রিপ্টোসংগ্রহ বন্ধ হয়নি। তারা নতুন অ্যাকাউন্ট বা পাতা খুলেছে। অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে জোট বেঁধেছে। গত সপ্তাহে ওই অ্যাকাউন্ট বন্ধের পর থেকে তারা ৪০ হাজার মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে বলেই দাবি, ওই সংস্থার। তবে, বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, এই অর্থ ঘুরে রাশিয়ার হাতে পৌঁছতে পারে। সেটা যাতে না-হয়, সেটা নিশ্চিত করাই এখন ইউরোপ ও আমেরিকার প্রশাসনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
Read story in English