Advertisment

দিল্লির দাঙ্গাবিধ্বস্ত বাচ্চাদের পড়াচ্ছেন ইসলামউদ্দিন, নিজেও হিংসার শিকার হয়েছিলেন

দিল্লির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সেই মর্মান্তিক মুহূর্ত থেকে বেরিয়েই আজ শিক্ষকতা করছেন ইসলামউদ্দিন

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
delhi riot victim islamuddin teaches in a riot school ghaziabad

দাঙ্গা পীড়িত এলাকায় শিক্ষকতা করছেন ইসলামউদ্দিন

২০২০ এর সেই মর্মান্তিক ঘটনা পেরিয়ে আজ ইসলামউদ্দিন অনেকটাই সাবলীল। শিব বিহারের বাসিন্দা ইসলামউদ্দিন দিল্লির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকার। চোখের সামনে ঠাকুরদাদার বাড়ি পুড়তে দেখেছে সে। তবে, দাঙ্গার নানান ভয়ঙ্কর চিত্র ভুলে আজ নিজেকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষকতাও করছেন।

Advertisment

বিশেষ করে দাঙ্গায় আক্রান্ত শিশুদের হিন্দি এবং সামাজিক বিজ্ঞানের পাঠ পড়াচ্ছেন তিনি। তাদের মানসিক ভাবে আরও শক্ত করে গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। ইসলামউদ্দিন কাজ করছেন ছোট ছোট শিশুদের স্বার্থে, নানা আঘাত থেকে বেরিয়ে এসে যাতে আবারও তারা নতুন করে বাঁচতে পারে সেই চেষ্টাই করছেন। গাজিয়াবাদের সানরাইজ পাবলিক স্কুলের শিক্ষক সে।

২০২০ সালের আগস্ট মাসে দাঙ্গায় শিকার হয়েছিলেন যে শিশুরা তাদের স্বার্থেই শুরু হয়েছিল এই স্কুল। গাজিয়াবাদের ১৪ জন শিক্ষকের একজন ইসলামুদ্দিন। এই স্কুল শুরুর উদ্যোগ নিয়েছিলেন মাইলস টু স্মাইল ফাউন্ডেশন। আসিফ মুজতবার অনুপ্রেরণায় শুরু হয়েছিল এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই প্রসঙ্গে মুজতবা বলেন, "লকডাউনের পরে এমন কিছু পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়েছিল যারা জানিয়েছিলেন, এই দ্বৈত ঝামেলায় তারা আর সন্তানদের শিক্ষার খরচ বইতে পারছেন না। তখনই ভেবেছিলাম এরকম ১০-১৫ টি পরিবারের তালিকা তৈরি করতে পেরে যদি শিশুদের শিক্ষার দিকে কিছু করতে পারি"।

publive-image

পরবর্তীতে যখন এই দলের স্বেচ্ছাসেবকরা শিশুদের খোঁজ নিতে যায়, তখন প্রায় ৪০ জন শিশুর তালিকা নিয়ে ফিরে এসেছিল। ৪০ জন নিয়ে শুরু হয়েছিল এখন সেই সংখ্যা ৩৫০ জন। তাদের বেশিরভাগই দাঙ্গা পীড়িত এলাকার, কিন্তু আশেপাশের এলাকার শিশুরাও রয়েছেন। শুধু পড়ুয়ারা নয়, শিক্ষকরাও দাঙ্গা এলাকার। সাতজন শিক্ষক শিব বিহারের। আর ইসলামুদ্দিন রয়েছেন যিনি নিজে ইংরেজি সাহিত্যে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করেছেন।

মুজতবা জানিয়েছিলেন, চোখের সামনে এরকম পরিস্থিতি দেখেননি কেউই। পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ হচ্ছে। স্লোগান দিচ্ছে, হত্যার হুমকি দিচ্ছে - এই চিত্র সহজে চোখ থেকে মোছার নয়। স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টাও কম করেননি কেউই। ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসাই আসল লক্ষ্য। শিক্ষকদের দাবি, "বাচ্চারা তাদের বাবাদের হারিয়েছিলেন। দাঙ্গার পরবর্তী ধাপে শিশুদের ডেকে এনে পড়ানোর চ্যালেঞ্জ সাংঘাতিক। 'বাবা' নাম উচ্চারণ করলে ওরা কেঁদে ফেলত। তাই আমরা সবসময় ওদের সঙ্গে ভবিষ্যত নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করতাম"।

নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত এই স্কুলে বাচ্চাদের পড়ানো হয়। তারপর ফাউন্ডেশনের তরফে বাচ্চাদের সরকারি বা বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

Teachers Day Delhi Riot
Advertisment