সিঙ্গাপুরের এক ৪৬ বছর বয়সি ব্যক্তিকে প্রচুর পরিমাণে গাঁজা বহনের চক্রান্তে দোষী সাব্যস্ত করে বুধবার (২৬ এপ্রিল) সকালে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর প্রশাসন ওই ব্যক্তির পরিবার এবং রাষ্ট্রসংঘের জানানো প্রাণভিক্ষার আবেদন উপেক্ষা করেছে। এই ফাঁসির তীব্র নিন্দা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং মৃত্যুদণ্ড বিরোধী নাগরিক সংগঠনগুলো। এই সব সংগঠনগুলোর অভিযোগ, গোটা সিঙ্গাপুর শহর দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন (এমডিএ)-এর ব্যাপক অপব্যবহার চলছে। আর, তার জেরে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুদণ্ডের তালিকা। ওই ব্যক্তির ফাঁসি, সেই তালিকার নবতম সংযোজন।
আদালত যা বলেছে
এর আগে গত ২২ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের সেন্ট্রাল নারকোটিক্স ব্যুরো (সিএনবি)-র জারি করা এক বিবৃতি অনুযায়ী, তামিল বংশোদ্ভূত তাঙ্গারাজু সুপ্পিয়াকে, 'এক কিলোগ্রামের বেশি গাঁজা (১,০১৭.৯ গ্রাম) পাচারে উৎসাহিত করার দায়ে' দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। কথিত পাচারের ষড়যন্ত্রটি ২০১৩ সালের ঘটনা। যার জেরে তাঙ্গারাজুকে ২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল।
আবেদন খারিজ
তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে এবং সাজার বিরুদ্ধে আবেদন ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট খারিজ করা হয়েছিল। তাঙ্গারাজু সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, তা খারিজ হয়ে যায়। আর, আদালতের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করার আর্জি উচ্চ আদালত চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি খারিজ হয়েছিল। তার পরই তাঙ্গারাজুর ফাঁসি একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন- বিরাট সুসংবাদ! ভারতে আসছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী, কী প্রত্যাশা নয়াদিল্লির?
মাদক পাচার রুখতে সিঙ্গাপুরের আইন
সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী হেরোইন, কোকেন, কেটামাইন এবং গাঁজা জাতীয় মাদকদ্রব্য নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি পাচার করলেই সাজা মৃত্যুদণ্ড। সিঙ্গাপুরের হাইকোর্ট তার রায়ে উল্লেখ করেছে যে, 'মাদক পাচার আইন (এমডিএ)-এর দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের এস ৩৩ (১) ধারা অনুযায়ী, তাঙ্গারাজুর অপরাধের নির্ধারিত শাস্তি মৃত্যু। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি জানান যে আদালত কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড না-দেওয়ার কথা ভাবে। কিন্তু, তাঙ্গারাজুর ক্ষেত্রে সেই অবকাশই ছিল না।' সেকথা মাথায় রেখে আদালত নির্দেশে বলে, 'অতএব আমি অভিযুক্তের বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিচ্ছি।'