সোমবার সকালে নারদ মামলায় (Narada Scam) নয়া মোড়! বিনা নোটিসেই রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং তৃণমূল-ত্যাগী কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে (Sovan Chatterjee) সিবিআইয়ের তরফে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় নিজাম প্যালেসে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ৪ জনের গ্রেপ্তারি। ঘটনার জেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) খোদ ধর্ণা দেন নিজাম প্যালেসের অন্দরে। অবশেষে চার জনের জামিনের খবর পাকা করে তবেই সেখান থেকে বের হন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর সেই প্রেক্ষিতেই এবার সুরবদল শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অকপটেই মমতার জয়গান গেয়ে বললেন, "আজ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য প্রাণও দিতে পারি।"
এদিন সকালে শোভনের গ্রেপ্তারির খবর পেয়েই স্ত্রী তথা বেহালা পূর্বের বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় (Ratna Chatterjee) তড়িঘড়ি নিজাম প্যালেসে পৌঁছন। গাড়ি থেকে নেমেই হন্তদন্ত হয়ে ছুটতে দেখা যায় তাঁকে। সাম্প্রতিক অতীতে শোভন-রত্নাকে একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিকবার আক্রমণ শানাতে দেখা গিয়েছিল, কিন্তু দুর্দিনে স্বামীর পাশে দাঁড়াতে ভরসার হাত বাড়িয়ে দিলেন সেই রত্নাই। তবে প্রথমটায় নিজাম প্যালেস চত্বরে দেখা মেলেনি বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Baishakhi Banerjee)! আর তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের অন্দরে ফিসফাস-ও কম হয়নি! এরপরই বৈশাখী মুখ খোলেন শোভনের গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে।
দুপুর গড়াতেই বান্ধবী বৈশাখী পৌঁছে গিয়েছিলেন নিজাম প্যালেসে। তাঁর মন্তব্য, "শোভনের পাশে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী এসে দাঁড়ালেন, ওনার জন্য আমি আজ থেকে প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।" তাঁর মন্তব্য এদিন শুধুই মমতা-ময়। বৈশাখী বললেন, মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়ে দিলেন যে, উনি ক্যাপ্টেন। তিনি যে সবার মুখ্যমন্ত্রী সেটা আবারও একবার প্রমাণ করলেন।'
পাশাপাশি মোদী সরকারকে বিঁধতেও ছাড়েননি বৈশাখী। তাঁর মন্তব্য, "করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর মোদী সরকার। গণতন্ত্রের চরম অপমান করল বিজেপি। আজ করোনা পরিস্থিতিতে যিনি সবথেকে বেশি দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেই ফিরহাদ হাকিমকে সকাল থেকে বিনা কারণে নিয়ে আসা হয়েছে। আজ যে ক'টা প্রাণ যাবে পরিষেবা না পাওয়ার ফলে, প্রত্যেকটা মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে বিজেপি।"
গত লোকসভার সময় গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছিলেন বটে! তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে টিকিট না পেয়ে বিজেপি ত্যাগ করেছিলেন শোভন-বৈশাখী। এরপর থেকেই জুটির তৃণমূলে যোগদানের খবর ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু ভোটের সময় শোভন-বৈশাখীর 'ঘর ওয়াপসি'র খবর চাউর হলেও, তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এবার বোধহয় সেই যোগদান-লগ্নের আর দেরী নেই। বৈশাখীর মুখে মমতার জয়গানে, সেই জল্পনাতেই যেন শীলমোহর পড়ল।