কালীপুজোর দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি দেখেন বাড়ির সামনে নিখুঁত হাতে আঁকা আলপনা, কেমন লাগবে বলুন তো? সকাল সকাল একরাশ খুশি দুয়ারে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে - যেন সত্যিই মন ভাল করার বিষয়। আর মানুষকে আনন্দ দিতেই এই কাজ শুরু করেছেন রত্নাবলী ঘোষ এবং তাঁর বন্ধু মুরাদ।
Advertisment
শহরের নানান জায়গায় ঘুরে সকলের বাড়িয়ে সদর দরজায় আলপনা এঁকে হাসি ফুটিয়ে তোলেন তিনি। তবে এই কাজ করে থাকেন বাড়ির সকলের অগোচরে। হঠাৎ যেন এই উদ্যোগ? রত্নাবলী ঘোষের কথায়, গতবছর থেকেই এই উদ্যোগ। হঠাৎ করেই তাঁর বন্ধু মুরাদ বলেন, "লোকের বাড়িতে সদর দরজায় অজান্তে আলপনা দিলে কেমন হয়"? এমন প্রস্তাবে আর না করতে পারেননি রত্নাবলী। রাজি হয়ে যান এই অনন্য কাজ করতে।
উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার নানান বাড়ির দরজায় নিখুঁতভাবে আলপনা দিয়েই সাজিয়ে তোলেন তিনি। নিজে আল্পনা দিতেও বেজায় ভালবাসেন। তবে সারাবছর নয়, নির্দিষ্ট দীপাবলির সময়ই এই কাজে নিজেকে নিয়োগ করেন তিনি। বললেন, "লোকজন হঠাৎ করেই চমকে যাবে আলপনা দেখলে। তখন যে হাসি এবং অবাক করা চাহনি, সেটাই আসল। একদিকে যেমন বাড়ির শ্রী বাড়ল, তেমন আমারও একটা প্রশান্তি"। যদিও পরবর্তীতে আরও কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন রত্নাবলী।
অজানা অচেনা লোকের বাড়ির সামনে গিয়ে হঠাৎ করেই আলপনা দিতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হওয়া খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু এহেন কোনও অসুবিধা তাঁর সুন্দর কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় নি। বরং রাস্তার আশেপাশের মানুষ যখন দেখলেন এত সুন্দর আলপনা তখন যেন নিজেরাই বাহবা দিলেন শিল্পীকে। কুর্নিশ জানালেন এরকম অভিনব উদ্যোগ বেছে নেওয়ায়।
তবে উত্তর কলকাতার আনাচে কানাচে ঘুরে নিদারুণ খুশি রত্নাবলী ঘোষ। বললেন, "এত সুন্দর সুন্দর বাড়ি দেখেছি বলার ভাষা নেই। সেই সঙ্গে মানুষের এমন চমকপ্রদ ব্যবহার"। আন্তরিকতায় মুগ্ধ ৭০ বছরের শিল্পী। পরবর্তীকালেও একইভাবে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চান তিনি। প্রবল ইচ্ছেশক্তি আর শৈল্পিক ভাবনা যেন আরও বেশি করে তাকে এগিয়ে দিচ্ছে।