ঘণ্টা বাজিয়েই হাসপাতালের শিশুদের দেখেন ডাক্তারবাবু। ব্যাপারটির মধ্যে অভিনবত্ব থাকলেও ডাক্তারবাবুর তাতে হেলদোল নেই। আপন মনে আউটডোরে একের পর এক শিশুর চিকিৎসা এভাবেই করে চলেছেন তিনি। অসুস্থ শিশুকে কাছে নিয়ে যেতেই ঘণ্টা বাজাচ্ছেন ডাক্তারবাবু, তাতেই চুপ একরত্তি। তারই মধ্যে শিশুকে দেখে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিচ্ছেন আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রদীপ কুমার বেজ।
একহাতে স্টেথো অন্য হাতে ঘন্টা। চিকিৎসক ঘন্টা বাজিয়ে চিকিৎসা করছেন, এমনটা বিশেষ একটা দেখা যায় না।তবে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের শিশুবিভাগের আউটডোরে এইভাবেই শিশুদের চিকিৎসা করেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রদীপ কুমার বেজ। ব্যাপারটির মধ্যে অভিনবত্ব রয়েছে। ঘণ্টা বাজিয়ে চিকিৎসা করায় এটাকে অনেকে ডাক্তারবাবুর পাগলামো বলেও ভাবেন।
সাধারণত অসুস্থ শিশু বিশেষ করে চিকিৎসকের কাছে গেলে কেঁদে ওঠে। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে, আরামবাগ হাসপাতালের এই চিকিৎসকের কাছে গিয়ে শিশুরা কান্না ভুলে হেসে ওঠে। ঘণ্টা বাজাতে দেখে কখনও অবাক দৃষ্টিতে তারা তাকিয়ে থাকে ডাক্তারবাবুর দিকে। সেই সুযোগেই শিশুদের চিকিৎসা সেরে নেন প্রদীপ কুমার বেজ।
আরও পড়ুন- কড়া মূল্য চোকাতে হবে আইএস-কে, চরম বার্তা বাইডেনের
চিকিৎসার সময় তিনি ঘন্টা বাজান কেন? উত্তরে ডাক্তারবাবু জানান, এখানে বিশ্বাস এবং বিজ্ঞান দুটোই কাজ করে। তিনি বিশ্বাস করেন, প্রতিটি শিশুর মনে ঈশ্বর থাকেন। তাই তিনি ঘন্টা বাজিয়ে শিশুদের শ্রদ্ধা জানান। তবে এব্যাপারে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি হল এই যে, ঘণ্টা বাজিয়ে শিশুদের কৌতূহলী করে তোলার চেষ্টা করেন তিনি। চঞ্চল শিশুরাও তাই চিকিৎসকের সামনে হাত-পা ছোড়া ও কান্না থামিয়ে দেয়। সেই সুযোগেই চিকিৎসা করেন ডাক্তারবাবু।
আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের এই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বেশ মজার।চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বাচ্চারাও যেমন চুপ থাকে, তেমনি মায়েরাও সুবিধামতো বাচ্চাদের নানা সমস্যার কথা ডাক্তারবাবুকে জানাতে পারেন। হাসপাতালের এই ডাক্তারবাবু এলাকায় বেশ জনপ্রিয়। এলাকার অনেকেই তাঁকে ‘ঘণ্টা ডাক্তার‘ নামে চেনেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন