গঙ্গাসাগর মেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বলে মনে করে বিজেপি। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ''কোর্ট মেলার অনুমতি দিল, আমার মনে হয় আদালত পুনর্বিবেচনা করবেন। বিপুল সংখ্যায় মানুষ গঙ্গাসাগরে পৌঁছচ্ছেন। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার ন্যূনতম পরিকাঠামো রাজ্যের আছে কিনা তা ভেবে দেখা দরকার। মানুষের জীবনের কি কোনও দাম নেই?'' এরই পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলার নজরদারি কমিটি থেকে বিরোধী দলনেতার নাম বাদ দেওয়া নিয়েও রাজ্যকে কাঠগড়ায় তুলে সোচ্চার বিজেপির এই নেতা।
করোনা গ্রাসে বাংলা। ফি দিন হাজার-হাজার সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতেও শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। গঙ্গাসাগর মেলার জেরে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি আরও বেসামাল হতে পারে বলে আশহ্কা বিশেষজ্ঞদের। উদ্বিগ্ন রাজ্য বিজেপিও। মেলায় ছাড়পত্রের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বলে মনে বিজেপি।
এদিন বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ''মেলার অনুমতি কোর্ট দিয়েছে। বিপুল সংখ্যায় মানুষ গঙ্গাসাগরে পৌঁছচ্ছেন। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার ন্যূনতম পরিকাঠামো রাজ্যের আছে কিনা তা ভেবে দেখা দরকার। মানুষের জীবনের কি কোনও দাম নেই?'' তিনি আরও বলেন, ''কোর্ট ভার্চুয়ালি কাজকর্ম চালাচ্ছে। সরকারের গাফিলতির জন্য যাঁরা বেড়িয়ে যাচ্ছেন তাঁদের জীবনের কি কোনও মূল্য নেই? কোর্ট নিজেই সংক্রমণের কারণে সরাসরি হেয়ারিং নিচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে বিচার ব্যবস্থার গতি শ্লথ রয়েছে। কোর্ট মেলার অনুমতি দিল, আমার মনে হয় আদালত পুনর্বিবেচনা করবেন।''
এরই পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলায় নজরদারি কমিটি থেকে বিরোধী দলনেতার নাম বাদ দেওয়া নিয়েও এদিন রাজ্যকে কাঠগড়ায় তুলেছেন শমীক। করোনাকালে নিয়ন্ত্রিত ভিড় নিয়ে শর্তসাপেক্ষে সাগরমেলার অনুমতি দিয়েছিল হাইকোর্ট। তবে সব বিধি মেনে মেলা হচ্ছে কিনা তা দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করতে বলা হয়েছিল রাজ্যকে। সেই কমিটিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন- রাজ্যের আবেদনে সাড়া হাইকোর্টের, গঙ্গাসাগর মেলার নজরদারি কমিটি থেকে বাদ শুভেন্দু
হাইকোর্ট গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে নজরদারি কমিটি তৈরির কথা রাজ্যকে বললেও এতদিন সেই কমিটি তৈরির কাজ এগোয়নি। সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত শুভেন্দু অধিকারীর নাম নিয়েই আপত্তি ছিল রাজ্য সরকারের। শেষমেশ রাজ্যের এই মনোভাবের পরেই সাগরমেলার নজরদারিতে নয়া কমিটি তৈরি হয়েছে। রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়েই সেই কমিটিতে বিরোধী দলনেতাকে রাখা হয়নি। দুই সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। কমিটিতে রয়েছেন লিগাল সার্ভিস এইডের সদস্য সচিব রাজু মুখোপাধ্যায়।
সাগরমেলার নজরদারি কমিটিতে বিরোধী দলনেতার জায়গা না হওয়ায় রাজ্যকেই দুষছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ''সংবিধানই বিরোধী দলনেতাকে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। কোর্টের নির্দেশে বিরোধী দলনেতাকে কমিটিতে রাখা হয়েছিল। রাজ্যের বক্তব্য, বিরোধী দলনেতার ভূমিকা সরকারের সমালোচনা করা, সরকারের নীতি-সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা। তাই তাঁকে এই কমিটিতে জায়গা দেওয়া যাবে না। কমিটিতে পার্টির কাউকে তো রাখা হয়নি। বিরোধী দলনেতাকেও রাজনীতির রঙে রাঙিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ।''