করোমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি এখনও টাটকা হয়ে আছে জনমানসে। তারই মধ্যে সেই স্মৃতি উস্কে দেওয়ার মতো ঘটনা প্রায়শই ঘটে চলেছে বিভিন্ন রেলপথে। সেই তালিকায় এবার জায়গা করে নিল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার দাঁইহাট স্টেশনের নাম। মঙ্গলবার রাতে দাঁইহাট স্টেশনে চতুর্থ প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সময়েই দূর্ঘটনার কবলে পড়ে ৩৭৯২৩ আপ হাওড়া-কাটোয়া লোকাল। চলন্ত অবস্থাতেই প্ল্যাটফর্মে ফেলে রাখা সিমেন্টের স্লিপারের স্তূপে ধাক্কা খেয়ে চালকের কামরা সহ অন্য কয়েকটি কামরা উল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়। বিপদের আঁচ করে চালক দ্রত ব্রেক কষে ট্রেন দাঁড় করিয়ে অঘটন থেকে রক্ষা পেয়ে যান যাত্রীরা। তবে এই ঘটনার পরেই রেলের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দাঁইহাট স্টেশানে ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা।
দাঁইহাট স্টেশন ম্যানেজার গোপেন নাগ বলেন, আইডাব্লিউ চতুর্থ লাইনের পাশে কাজ করছিল। তাই ঢালাই স্লিপার গুলি চতুর্থ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রাখা হয়। তবে স্লিপার গুলির কয়েকটা যে প্ল্যাটফর্ম থেকে কিছুটা লাইনের দিকে বের হয়েছিল সেটা লক্ষ্য না করেই আইডাব্লিউ থেকে আমাদের ক্লিয়ারেন্স দেয়। ওই ঢালাই স্লিপারেই ধাক্কা খায় লোকাল ট্রেনটির কামরা। স্টেশন ম্যানেজার দাবি করেন, আইডাব্লিউ থেকে ক্লিয়ারেন্স দিয়েছিল বলেই চালক ওই লাইনে ট্রেন ঢুকিয়েছিলেন। তাঁর কোনও গাফিলতি ছিল না।
স্টেশন কর্তৃপক্ষের কথা অনুযায়ী, এদিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ আপ হাওড়া-কাটোয়া লোকাল ট্রেনটি দাঁইহাট স্টেশানে আসছিল। তাই লোকাল ট্রেনটিকে চতুর্থ লাইনে ঢুকিয়ে কামরূপ এক্সপ্রেসকে তৃতীয় লাইন দিয়ে পাস করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্ল্যাটফর্মে বিপজ্জনক ভাবে রাখা স্লিপারগুলিতে ধাক্কা খেতে খেতে যায় লোকাল ট্রেনের কামরা। ওই সময়ে ঘর্ষণে আগুনের ফুলকি বের হতে থাকে। প্রায় তিরিশ কিমি গতিতে থাকা ট্রেনের কামরার গুলিতে ধাক্কা খেয়ে বেশ কয়েকটি স্লিপার প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে৷ তা দেখে যাত্রীরা স্টেশনে নেমেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷
আরও পড়ুন বিজেপি প্রার্থী হওয়ায় মাশুল, ভয়ঙ্কর পরিণতি আদিবাসী তরুণীর পরিবারের, কাঠগড়ায় তৃণমূল
ক্ষুব্ধ যাত্রীরা বলেন, “ট্রেনটি স্লিপারে ধাক্কা মারতে মারতে যাওয়ার সময় কামরাগুলি হেলে যায়। তাতে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে যাবার উপক্রম হয় । তেমনটা হলে ট্রেনের যাত্রীদের প্রাণহানিও ঘটতে পারত। রেলে এই গাফিলতি মেনে নেওয়া যায় না“। জানা গিয়েছে, রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনা নিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন।