সপ্তাহের প্রথম দিনে স্কুলে নেই পার্শ্ব শিক্ষকরা। এদিন দেখা যায়, রাজ্যের একাধিক স্কুলে শিক্ষক ছাড়াই ক্লাসে বসে আছে ছাত্রছাত্রীরা। আবার কোথাও স্থায়ী শিক্ষকদের অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে সামলাতে হচ্ছে ক্লাসরুম ফলে সার্বিকভাবে ব্যহত স্কুলের রুটিন।
পার্শ্বশিক্ষকদের বিকাশ ভবন অভিযানে শুক্রবার বাধা দেয় বিধাননগর পুলিশ। শনিবার ফের অবস্থান করলে পুলিশি লাঠির মুখেও পড়তে হয় তাঁদের। এই ঘটনার প্রতিবাদে দিনভর আন্দোলন এবং কল্যাণী থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এরপর সোমবার রাজ্য জুড়ে স্কুল বয়কটের সিদ্ধান্ত নেন পার্শ্বশিক্ষকরা।
পশ্চিমবঙ্গ পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "সোমবার কোনও পার্শ্ব শিক্ষক স্কুলে যাবেন না। আগামী দু'দিন অর্থাৎ মঙ্গল ও বুধবার স্কুলে যাবেন কিন্তু কালো ব্যাজ পড়ে কালা দিবস পালন করবেন তাঁরা। এই সপ্তাহে কলকাতার রানি রাসমণি রোডে ফের অবস্থান বিক্ষোভে করার পরিকল্পনা রয়েছে"।
ভাগীরথবাবু অভিযোগ করেন, রাতের অন্ধকারে পুলিশ অনশনরত পার্শ্বশিক্ষকদের উপর লাঠি চালায়। সেই সময় গায়ে জাতীয় পতাকা নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইছিলেন তাঁরা। পুলিশ জাতীয় পতাকা মাটিতে ফেলে অনশন মঞ্চে অকারণ লাঠি চালাতে শুরু করে। সেই অনশন মঞ্চ থেকেই পাঁচ আন্দোলনকারীকে আটক করে পুলিশ।
পার্শ্বশিক্ষক জাহাঙ্গির আলম বলেন, "আমরাও শিক্ষক, কিন্তু আমাদের নামের আগে 'পার্শ্ব' কথাটি আজ ১৫ বছর জুড়ে থাকায় শিক্ষক হয়েও, শিক্ষক নই। একজন পূর্ণ শিক্ষক হতে গেলে যা যা যোগ্যতা লাগে, তা আমরা অর্জন করলেও আমরা আজও সমাজ, কর্মক্ষেত্র, সরকারের কাছে ব্রাত্য। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তিন বছরের মধ্যে আমাদের পূর্ণ শিক্ষকের মর্যাদা দেবেন বললেও আজ আট বছর পরও তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখেননি। চরম আর্থিক অনটনের সঙ্গে লড়াই করতে না পেরে বিগত দু'বছরে শতাধিক পার্শ্ব শিক্ষক মারা গিয়েছেন, কেউ কেউ আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন"।
সূত্রের খবর, ৫ সেপটেম্বর অর্থাৎ শিক্ষক দিবসের দিন মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পার্শ্বশিক্ষক কল্যাণ সমিতি। বিজেপি সমর্থক পার্শ্বশিক্ষকরা সোমবার বঙ্গ বিজেপির সদর দফতর থেকে যোগাযোগ ভবন পর্যন্ত মিছিল করেছে। সঠিক বেতন প্রদান, সিসিএল এবং পিতৃত্বকালীন ছুটি, মৃত পার্শ্বশিক্ষকদের উপর নির্ভরশীলদের চাকরি ও অলচিকি ভাষার পার্শ্বশিক্ষকদের ডিএড ট্রেনিং চালু ইত্যাদি দাবিতেই এদিন মিছিল করেছেন প্রতিবাদী শিক্ষকরা।