একুশের বিধানসভায় প্রেস্টিজ ফাইট ছিল নন্দীগ্রামে। সেই ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১,৯৫৬ ভোটে হারিয়েছিলেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী (যদিও এই ফল নিয়ে আদালতে বিচারাধীন মামলা রয়েছে)। যা নিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে মাঝে মধ্যেই কটাক্ষ ছুড়ে দেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু বছর দু'য়েকের মধ্যেই নন্দীগ্রামে উলোটপূরাণ। জেলা পরিষদে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় পরাজিত বিজেপি। তৃণমূল তুলনায় ১০,৪৫৭ ভোটে পিছিয়ে রয়েছে পদ্ম শিবির!
নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ২টি ব্লক। জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা ৫টি। এর মধ্যে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকে তিনটি আসনের প্রত্যেকটিতেই জিতেছে তৃণমূল। নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের দু’টি আসনে জিতেছে বিজেপি। আর জেলা পরিষদের প্রাপ্ত ভোট দেখলে দেখা যাচ্ছে বিজেপির তুলনায় নন্দীগ্রাম বিধায়নসভায় পঞ্চায়েত ভোটে ১০,৪৫৭ ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
এই ফলাফলে যারপরনাই খুশি পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। টুইটে তিনি লিখেছেন, 'মনে রাখুন, ১০,৪৫৭'।
কেন নন্দীগ্রামবাসীদের মনে শুভেন্দু অধিকারীর দল নিয়ে মোহভঙ্গ হল? বিরোধী দলনেতা নন্দীগ্রামের ফলাফল নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি। তবে স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রলয় পালের দাবি, 'নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকে তো তৃণমূল আমাদের প্রার্থীই দিতে দেয়নি! সেখানে লুট করে ভোটে জিতেছে তৃণমূল। এটা মানুষের ভোটে জয় নয়। মানুষ ফের নির্ভয়ে নিজের ভোট নিজে দেওয়ার সুযোগ পেলে তৃণমূলকে হারাবে।'
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েতে প্রাণহানি, ‘দুঃখিত’ মমতা বললেন ‘নিহত ১৯’, মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ-চাকরির ঘোষণা
তৃণমূল সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প, শাসক দলের নিবিড় প্রচার কৌশলেই পদ্ম শিবির ধাক্কা খেয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। তবে পঞ্চায়েত, বিধানসভা, লোকসভা ভোটের প্রেক্ষিত পৃথক হয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিধানসভা, লোকসভা ভোট হবে। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শুভেন্দু অধিকারী যেমন লোকসভার আগে জেলা পরিষদের ভোটের নিরিখে নন্দীগ্রামে ফলাফলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ হবেন, তেমনই বিপুল এই জয়কেই পাথেও করেই আগামী লোকসভায় ঝাঁপাবে তৃণমূল।