Advertisment

ভিলেন চিনা পণ্য, বাঙালির রান্নাঘরে বঁটি-দা উধাও, কামারের হাতুড়িও থেমেছে

বাগান করার নুরুনি খুপরিও এখন অনেকেই তৈরি করেন, কামারশালার সংখ্যা যথেষ্ট কমেছে

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
kaamarshala iron buisness

প্রতীকী ছবি

মানুষের অভ্যাস কিন্তু সর্বদাই বদলাতে থাকে। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের প্রতিদিনের জীবনে কিছু জিনিসের ব্যবহার যেমন একেবারেই কমে গিয়েছে তেমনই কিছু জিনিসের ব্যবহার আরও নতুন করে শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বাংলার ঘরে ঘরে মানুষ কিন্তু রান্নাবান্নার সঙ্গে ভীষণভাবে জড়িয়ে রয়েছেন। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত দেখা গেছে, মা-ঠাকুমারা বঁটি ব্যবহার করতেন। আঁশবঁটি অথবা নিরামিষ বঁটি দুই ধরনেরই কিন্তু থাকত রান্নাঘরে। আর এখন সেই জায়গায় এসেছে ছুরি, হামান দিস্তা-শিল নোড়ার জায়গায় মিক্সার - কামারশালার ব্যবসায় এখন অনেকটা মন্দা দেখা দিয়েছে।

Advertisment

রত্নদীপ কর্মকার পেশায় একজন কামার, তিনি বলছেন, "আগে এলাকা জুড়ে অনেক কামারশালা ছিল। তাঁরা সকলেই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ আমদানি নেই। লোহা কিনলেও যে ব্যবসা ভালমতো চলবে তার কোনও লক্ষণ নেই। আমি কম করে ৩০-৪০ বছর এই ব্যবসায় রয়েছি, বাবা ঠাকুরদা সবাই এই কাজই করতেন। এখন অনেকটা সেই কাজে ভাটা পড়েছে। মানুষ প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করা শুরু করেছেন। অনেকেই শারীরিকভাবে সুস্থ নয়, তাঁরা নীচে বসতে পারেন না। ছুরি ব্যবহার শুরু করেছেন।"

আরও পড়ুন ‘শিল কাটাও’-‘শিল কাটাও’, প্রযুক্তির জাঁতাকলে ক্রমশ ফিকে এই ডাক

publive-image

তাঁর দোকান জুড়ে ছোট বঁটির সংখ্যা নেই বললেই চলে। নয়তো মাছ কাটার বিরাট বঁটি, নয়তো বাগানের কাজকর্মের প্রয়োজনীয় খুরপি, নুরুনি, এজাতীয়। রত্নদীপবাবু বললেন, "একদম প্রথম যখন আমি ব্যবসার হাল ধরি তখনও কিন্তু এতসব ছিল না। শুধু রান্নাঘরের বঁটি আর সাঁড়াশি ছিল। তবে দিন এগোনোর সঙ্গে সঙ্গেই আমরা বাগানের কাজ কর্মের জিনিসপত্র সঙ্গে রাখতে শুরু করেছি। সেগুলোও বানানো হয় এখন। সবথেকে বড় কথা, ডেকরেটরের বড় বড় ঝাঁঝরি হাতা নির্মাণের কাজও এখন শুরু হয়েছে। যার বেশি চাহিদা থাকবে। নাহলে যেকোনও বাড়িতে একটা কাটারি বা নুরুনি সে তো বছরের পর বছর চলে। এখন উৎসব অনুষ্ঠান লেগেই আছে, তাই ঝাঁঝরি বানাচ্ছি।"

publive-image

ব্যবসার হাল এখন কেমন? কতটা বিক্রি হয় আপনাদের? বললেন, "আমি যেহেতু পাইকারি বিক্রেতা তাই লোকজন আসেন। তাঁরা আমার কাছ থেকে একটু কম পয়সায় কাজ করান, জিনিস নিয়ে যান। তবে একটা কথা না বললেই নয়, ব্যবসায় মন্দা চলছে তার কারণ চায়না মাল সব বাজারে ছেয়ে গেছে। সেগুলো ওজনে হালকা এবং সহজে কাজ করা যায়। মানুষ আর পেটা লোহার জিনিস নিয়ে কাজ করতে চায় না।" তার কথায় এটুকু পরিষ্কার, নতুন পণ্যের আমদানির কারণেই তাঁদের ব্যবসায় এখন খুব একটা লাভ নেই।

iron iron buisness old profession china product
Advertisment