কেন তৃণমূল ছেড়েছিলেন? ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর জোড়-ফুল ছাড়ার পর ২৫শে ডিসেম্বর তা স্পষ্ট করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পুরনো দলের কর্মীদের খোলা চিঠিতে পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারীদের মেজ ছেলে জানিয়েছিলেন, 'তৃণমূলে পচন ধরেছে৷ গত ১০ বছরে দলে কোনও পরিবর্তন হয়নি৷ ব্যক্তি স্বার্থেই এখন তৃণমূল চলছে> দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরাই এখন তৃণমূলে কোণঠাসা' এমনকী ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের নাম না করেও তাঁর নিযুক্তি নিয়ে চিঠিতে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু৷ অভিযোগ করে লিখেছিলেন, 'এই ধরনের বহিরাগত পেশাদারদের বাস্তব পরিস্থিতি এবং তৃণমূল কর্মীদের স্বার্থত্যাগ নিয়ে কোনও ধারণাই নেই৷' সাফ দাবি করেছিলেন যে, এরপরই দলত্যাগ ছাড়া তাঁর কোনও উপায় ছিল না।
এরপর পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ১৪ মাসের বেশি সময়। শুভেন্দু অধিকারী বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। নন্দীগ্রাম বিধানসভায় পরাজিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই নন্দীগ্রামেই শহিদ দিবস পালনে বিজেপিকে অনুমতি দেয়নি পুলিশ। পরে আদালতের আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে শহিদ দিবস পালনের অনুমতি পায় গেরুয়া শিবির। এদিন সেই কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গোকুলনগরে শহিদ বেদিতে মাল্যদানের পর শুভেন্দু ফের জানালেন তাঁর তৃণমূল ত্যাগের কারণ।
কী বললেন শুভেন্দু অধিকারী?
গোকুলনগরে নন্দীগ্রামের শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোকে কেন্দ্রকে করে টানটান উত্তেজনা ছিল। এদিন সেখানেই বিরোধী দলনেতা শাসক দলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, 'নন্দীগ্রামের আন্দোলন কোনও নির্দিষ্ট নেতানেত্রীর আন্দোলন ছিল না। এই আন্দোলন ছিল জনগণের। তৃণমূল এই এলাকা, শহিদ দিবস দখল করার চেষ্টা করেছিল। সিপিএমকে সাফ করেছি, এবার পিসি-ভাইপোকেও গ্যারাজ করব। আগামী বছর ভাইপো ভিতরে থাকবে।'
আরও পড়ুন- ‘এই পার্থদাকে আমি চিনি না’, প্রাক্তন মন্ত্রীকে চিনতে অস্বীকার ফিরহাদের, কিন্তু কেন?
শুভেন্দুর সংযোজন, 'রাজনৈতিক দল, পথ পরিবর্তন সকলেই করতে পারে। আর তৃণমূল আমাকে যে সমস্ত দায়িত্ব দিয়েছিল, তা কার্যত বাধ্য হয়েছিল দিতে। আমি কিন্তু সব ছেড়ে স্বাধীন পথ ও স্বাধীন মত নিয়ে সাধারণ মানুষ হিসেবে ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিয়েছিলাম। আমাকে নিয়ে ওদের খুব গায়ে জ্বালা। তবে রোদ হোক বা ঝড়-জল, করোনা হোক বা অন্যকিছু প্রত্যেক বছর শহিদদের পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। এবারে বাইরের লোক ঢুকিয়ে শহিদদের সম্মান জানানোর সুযোগটাও কেড়ে নিতে চেয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পুলিশ এমনটা করছিল। তাই হাইকোর্টের নির্দেশে সেন্ট্রাল ফোর্স নিয়ে এসে আমাদের শ্রদ্ধা, সম্মান জানাতে হচ্ছে।'
বিরোধী দলনেতার মন্তব্যের পাল্টা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'ও তো (শুভেন্দু অধিকারী) নিজেই পরের বার হেরে যাবে। ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করছে। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই নন্দীগ্রাম আন্দোলন গতি পেয়েছিল।'