পার্কে বসেছে ক্লাস। সেখানেই চলছে অঙ্ক, হিন্দি ও ইংরাজির ক্লাস। আর পড়ুয়াদের যাতে অসুবিধা না হয় বন্ধ থাকছে গান সাধনা এবং হুল্লোড়। কয়েকদিন ধরে এমন দৃশ্যই দেখছেন আহমেদাবাদের নারানপুরার বাসিন্দা। এলাকার একটি পার্কে বসানো হয়েছে পুরসভা পরিচালিত স্কুলের ক্লাস। করোনার কারণে যেহেতু বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অর্থাভাবে অনেকের কাছে অনলাইন ক্লাস বিলাসিতা। তাই অভিনব এই পন্থাই শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন ওই স্কুলের শিক্ষিকারা।
সেই পার্কে গিয়ে দেখা গিয়েছে কংক্রিটের বেঞ্চে ওপর বসানো হোয়াইট বোর্ড। সেদিকে তাকিয়ে ১৫ জন পড়ুয়া। তারা প্রত্যেকেই আহমেদাবাদ পুরসভা পরিচালিত নারানপুরা হিন্দি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়া। সেই ক্লাসরুমের পাশ সিয়ে হেঁটে যাওয়া প্রবীণরা নীরবে দাঁড়িয়ে চাক্ষুষ করছেন নতুন এই ক্লাসরুম।
সেই পার্কের অন্য একটা কোণায় ঊষা রঞ্জন অঙ্কের শিক্ষিকা বোর্ডে বাহু এবং কোণ এঁকে বুঝিয়ে চলেছেন পড়ুয়াদের। জানা গিয়েছে, গুজরাত সরকারের শেরি শিক্ষা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত এই খোলা আকাশের ক্লাসরুম। গত জুন মাস থেকে স্কুল শিক্ষা দফতর এই প্রকল্প শুরু করেছে। শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত।
যেহেতু গত প্রায় দেড় বছর স্কুল বন্ধ। তাই এমন খোলা জায়গায় ক্লাস নেওয়া শুরু করেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই স্কুলের এক শিক্ষিকা রুচিকা শাহ জানান, ‘অনলাইন ক্লাস করতে যাদের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তাদের জন্য এই উদ্যোগ। কিন্তু ক্রমশ দেখা যাচ্ছে অন্যরা এই ক্লাসে যোগ দিচ্ছে।‘ গৃহবন্দি পড়ুয়াদের বাড়ির বাইরে বের করতে এই উদ্যোগ। এমনটাই জানান ওই শিক্ষিকা। তাঁর দাবি, ‘প্রতিদিন অন্তত একঘণ্টা স্কুলের সব শিক্ষক-শিক্ষিকারা এলাকার কোনও এক খোলা জায়গায় বসে ক্লাস নিচ্ছেন। প্রাথমিকের তৃতীয়-পঞ্চম শ্রেণি আর উচ্চ প্রাথমিকের ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণি, এই চারটি শ্রেণির ক্লাস চলছে।‘ তাঁর ক্লাসে পড়ুয়াদের উপস্থিতি প্রায় ৭৫%, জানান রুচিকা দেবী।
এদিকে, গুজরাত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে। ৫০% পড়ুয়া নিয়ে চলবে এই ক্লাস। এই উদ্যোগ সফল হলে, খুব দ্রুতই নবম-একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ভাবনা রয়েছে সরকারের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন