৭১-র যুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধী যেন ধমকে কলহরত পাকিস্তান-বাংলাদেশকে ঠান্ডা করে দিল : পরাণ বন্দোপাধ্যায়
Paran Bandopadhyay on 71 Situations: আজ যখন দেশে পরিস্থিতি উত্তপ্ত কিংবা পাকিস্তানি সেনা সিজফায়ার লঙ্ঘন করে, ভারতকে আবার আঘাত হানার চেষ্টা করেন, ঠিক তখন অনেকেই বলেছিলেন, ইন্দিরা থাকলে অনেক কিছুই...
Paran Bandopadhyay on 71 Situations: আজ যখন দেশে পরিস্থিতি উত্তপ্ত কিংবা পাকিস্তানি সেনা সিজফায়ার লঙ্ঘন করে, ভারতকে আবার আঘাত হানার চেষ্টা করেন, ঠিক তখন অনেকেই বলেছিলেন, ইন্দিরা থাকলে অনেক কিছুই...
Paran Banerjee Recalls 1971 War: তাঁকে ভারতের আয়রন লেডি বলা হত। কথায় বলে, তিনি ম্যাডাম প্রাইম মিনিস্টার নয়, বরং তাঁকে তাঁর দফতরে স্যার বলে ডাকতেন অনেকেই। ইন্দিরা শুধু ইন্ডিয়া ছিলেন না, ছিলেন রানীর মত। ভারতের সামরিক শক্তি থেকে, ভারতের সবকিছু - ইন্দিরাকে ভেদ করে ভারতকে আঘাত করা বোধহয় সম্ভব ছিল না। আর, সেই কারণেই আজ যখন দেশে পরিস্থিতি উত্তপ্ত কিংবা পাকিস্তানি সেনা সিজফায়ার লঙ্ঘন করে, ভারতকে আবার আঘাত হানার চেষ্টা করেন, ঠিক তখন অনেকেই বলেছিলেন, ইন্দিরা থাকলে অনেক কিছুই...
Advertisment
৭১ এর পরিস্থিতি যারা দেখেছেন তাঁরা, জানেন সেই সময় ভারতের কী ভূমিকা ছিল। পাকিস্তান যখন বাংলাদেশকে যাঁতাকলে পিষছে ঠিক তখন তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিল এই ভারত এবং তাঁর সামরিকবাহিনী। ইন্দিরার আমলে নতুন বাংলাদেশ স্বাধীনতার সূর্য দেখেছিল। যদিও বা একথা অস্বীকার করার নয়, গতবছর আবারও তাঁরা স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছেন নতুন করে। কিন্তু, এখন যখন বারবার প্রশ্ন উঠছে কে বড়, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নাকি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী? তখন বর্ষীয়ান অভিনেতা পরান বন্দোপাধ্যায় কী বলছেন?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। ৭১ এর যুদ্ধ তাঁর বেশ কিছু মনে আছে। অভিনেতা বলেন, "৭১ এর সময় কোনও সাইরেন বা দামামা বেজে উঠছে এসব আমরা শুনি নি। সেগুলো জাপানি সেনার সঙ্গে যখন হয়েছিল তখন শোনা গিয়েছিল। কিন্তু, আরেকটা কথা! আমার যা মনে হয়েছিল, ইন্দিরা গান্ধী মানে ভারতবর্ষ, যে দুজন মিলে ঝগড়া করছিল, তাঁদের গিয়ে একটা থাপ্পড় মেরে সবকিছু ঠান্ডা করে দিল। বাংলাদেশ আর পাকিস্তানকে একজনই ঠিক করে দিল। হাবভাব এমন ছিল, যে কী হয়েছেটা কী? এত ঝগড়া কীসের? আমি সাহায্য করছি। এই বলে, কলহরত দুজনকে যেমন আলাদা করে দেয়, সেটাই করেছিল। দুজনকে ধমকে আলাদা করে দিল।"
ছবিঃ সংগৃহীত
Advertisment
যদিও সেই সময় এক অস্থিরতার কথা বলেন তিনি। তখন বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ এদেশে পিলপিল করে প্রবেশ করছেন। তাঁর কথায়, "গোটা বাংলা জুড়ে তখন এক অদ্ভুত অস্থিরতা। তখন পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক এক সাংঘাতিক পরিস্থিতি। তারই মাঝখানে, আরও অনেক কান্ড হয়। আমাদের দেশের সেনার তো প্রাণ গেলই, তাঁর সঙ্গে সঙ্গে একটা কথা আজ না বললেই নয়। ভারতবর্ষ সাজিয়ে গুজিয়ে এত সুন্দর একটা বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিল। কিন্তু, এত অযত্নে লালিত হল একটা গোটা দেশ। সেখান থেকে সব ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে, এখন তাঁর কদর্য রূপ বেড়িয়ে পড়ল। এটা ভাবলে আমার খুব দুঃখ হয়।" যদিও, অভিনেতার কথায়, ৭১ এর যুদ্ধের সময় কেবল প্রধানমন্ত্রীর তরফে একটা সতর্কীকরণ হয়েছিল।
অভিনেতা এও জানান, যুদ্ধ সারাদেশে কেউ চায় না। সারা পৃথিবীর সুস্থ সম্পন্ন মানুষ যুদ্ধ চায় না। কিন্তু, যুদ্ধের ব্যাখ্যা তাঁর কাছে একেবারে ভিন্ন। তাঁর কথায়, "কোনও শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ কিন্তু, যুদ্ধ চায় না। কারণ, মানুষের এতে ক্ষতি। কিন্তু, যুদ্ধ এর অনেক ব্যাখ্যা আছে। এটা রাজনীতি, এটা ক্ষমতা দখলের লড়াই। এবং ভাল কারণে যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে কিন্তু কিছু জিনিস থেকে মুক্তি সাময়িক সময়ের জন্য হলেও মেলে।"