Advertisment

হোম আইসোলেশনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন গাইডলাইন

সংশোধিত গাইডলাইন অনুসারে, অতি সামান্য ও উপসর্গপূর্ব রোগীরা নিজেদের বাড়িতে আইসোলেশনে থাকেতে পারবেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Covid Home Isolation rules

উত্তরপ্রদেশের এক কোয়ারান্টাইন সেন্টার (ছবি- বিশাল শ্রীবাস্তব)

অতি স্বল্প ও উপসর্গপূর্ব কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের জন্য নতুন গাইডলাইন দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রক।

Advertisment

এপ্রিলেই শুরু দিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে সংবাদে প্রকাশিত হয়েছিল সরকার এ ব্যাপারে তাদের নীতি বদল করার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করছে, তার কারণ যাঁদের সত্যিই হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন তাঁদের জন্য শয্যাসংখ্যা সীমিত হয়ে পড়ছে। যাঁদের সংক্রমণ সামান্য তাঁদের বাড়িতে রেখে সামনের সারির কর্মীদের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাবার ব্যাপারে চেষ্টা করা হচ্ছে।

ফের র‍্যাপিড টেস্ট বন্ধ কেন?

সমস্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগীদের হাসপাতালে রেখে আলাদা করা ও তদারকির কাজ বর্তমানে চলছে। বর্তমান গাইডলাইন অনুসারে যাঁদের অতি সামান্য, মাঝারি ও ভয়ানক সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তাঁদের কোভিড-১৯ কোয়ার সেন্টার, নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র ও হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছিল। সংশোধিত গাইডলাইন অনুসারে, অতি সামান্য ও উপসর্গপূর্ব রোগীরা নিজেদের বাড়িতে আইসোলেশনে থাকেতে পারবেন। উপসর্গপূর্ব রোগীরা উপসর্গ প্রকাশিত হওয়ার আগেই সংক্রমণ ছড়াতে পারেন।

কোভিড-১৯- বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে পারেন কারা?

১) চিকিৎসারত মেডিক্যাল অফিসার যাঁদের অতি সামান্য বা উপসর্গপূর্ব বলে চিহ্নিত করেছেন।

২) এ ধরনের ব্যক্তিদের নিজের বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার, এবং পরিবারের অন্যদেরও কোয়ারান্টিনের সুবিধা থাকতে হবে।

৩) একজন পরিচর্যাকারী সারাক্ষণের জন্য উপলব্ধ থাকতে হবে। পরিচর্যাকারী ও হাসপাতালের মধ্যে বাড়িতে আইসোলেশনে থাকার পুরো সময়কাল যোগাযোগ রাখতে হবে।

৪) পরিচর্যাকারী ও তাঁর সকল নিকট সংস্রবদের প্রোটোকল অনুসারে এবং চিকিৎসারত মেডিক্যাল অফিসারের নির্ধারণ করা হিসেব মত হাইড্রক্সোক্লোরোকুইন প্রফিল্যাক্সিস গ্রহণ করতে হবে।

৫) রোগীদের নিজেদের মোবাইল ফোনে আরোগ্য সেতু অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে।

৬) রোগীকে জেলার সারিভিল্যান্স অফিসারের কাছে হিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যাপারে এবং পরবর্তীকালে সারভিল্যান্স টিমের কাছে পরীক্ষা করানোর ব্যাপারে সম্মত হতে হবে।

৭) রোগী সেলফ আইসোলেশনের ব্যাপারে একটি দস্তাবেজ পূরণ করবেন এবং হোম কোয়ারান্টিনের গাইডলাইন মেনে চলবেন।

স্বল্প ও উপসর্গপূর্ব রোগীদের কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত?

স্বল্প বা উপসর্গপূর্ব কোভিড-১৯ রোগীদের, যাঁদের শ্বাসকষ্ট, বুকে ক্রমাগত চাপ বা ব্যথা রয়েছে, বা মানসিক সংশয় হচ্ছে, মুখ বা ঠোঁট নীলচে হচ্ছে বা মেডিক্যাল অফিসার যাঁদের পরামর্শ নিতে বলছেন, তাঁদের চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।

হোম আইসোলেশন কখন বন্ধ করা দরকার?

যখন তাঁদের উপসর্গ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং মেডিক্যাল অফিসার যখন ল্যাবোরেটরি পরীক্ষার পর তাঁদের সংক্রমণ হীন বলে ঘোষণা করছেন, তখন তাঁদের হোম আইসোলেশন শেষ হতে পারে।

 হোম আইসোলেশনে থাকার সময়ে কী করা যায়, কী করা যায় না

রোগীদের সর্বদা তিন স্তরের মুখোশ পরতে হবে। ৮ ঘন্টা পরে ওই মাস্ক ফেলে দিতে হবে। যদি ভিজে যায় বা নোংরা হয়ে যায়, তার আগেই তা ফেলে দিতে হবে।

এক শতাংশ সোডিয়াম হাইপো-ক্লোরাইট দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিয়ে তারপর মাস্ক নষ্ট করে দিতে হবে।

রোগীদের অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট ঘরে থাকেত হবে, এবং অন্যদের থেকে, বিশেষ করে বয়স্ক ও হাইপারটেনশন, হৃদরোগী ও কিডনির রোগীদের থেকে দূরে থাকতেই হবে।

এই গ্রীষ্মে এসি ২৪-এর উপরে সেট করাই কেন ভাল

রোগীদের বিশ্রাম নিতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণ তরল পান করতে হবে, যাতে ডিহাইড্রেশন না হয়।

রোগীকে মাঝে মাধেই অন্তত ৪০ সেকেন্ড সময় ধরে সাবান ও জল দিয়ে হাত ধুতে হবে বা অ্যালকোহল বেসড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত সাফ করতে হবে।

কোনও ব্যক্তিগত সামগ্রী অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করা চলবে না। রোগীর ঘরের বিভিন্ন যেসব জিনিসে তাঁর স্পর্শের সম্ভাবনা, টেবিলের উপরতল, দরজার হাতল প্রভৃতি ১ শতাংশ হাইপোক্লোরাইট সলিউশন দিয়ে সাফ করতে হবে। রোগীকে চিকিৎসকের নির্দেশ ও ওষুধ সম্পর্কিত পরামর্শ মেনে চলতে হবে। প্রতিদিন রোগীকে নিজের তাপমাত্রা মাপতে হবে এবং উপসর্গের অবনতি হলে সঙ্গে সঙ্গে তা জানাতে হবে।

 হোম আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিদের পরিচর্যাকারীর প্রতি নির্দেশ

মাস্ক- পরিচর্যাকারী যখনই রোগীর ঘরে প্রবেশ করবেন, তখনই তিন স্তরের মেডিক্যাল মাস্ক পরবেন। কোনওভাবেই মাস্কের সামনের দিকে হাত দেওয়া যাবে না। মাস্ক যদি ভিজে যায় বা নিঃসৃত তরলের সংস্পর্শে আসে, তখনই তা বদলাতে হবে। ব্যবহারের পর মাস্ক ফেলে দিতে হবে এবং মাস্ক ফেলে দেবার পর হাত ধুতে হবে। তিনি নিজের মুখ, হাত বা নাকে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

হাতের স্বাস্থ্য:

অসুস্থ ব্যক্তি বা তাঁর নিকটবর্তী পরিবেশে গেলে অবশ্যই হাত ধুতে হবে। খাবার বানানোর আগে ও পরে, খাওয়ার আগে, শৌচাগার ব্যবহারের পরে এবং হাত নোংরা হলেই হাত ধুতে হবে। সাবান ও জল দিয়ে অন্তত ৪০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোবেন। যদি হাতে ময়লা না দেখা যায়, তাহলে অ্যালকোহল বেসড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।

জল ও সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পর হাত মোছার জন্য ডিজপোজেবল পেপার টাওয়েল ব্যবহার করাই ভাল। না পাওয়া গেলে শুকনো পরিষ্কার তোয়ালে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং ভিজে গেলে তা বদলাতে হবে।

রোগীর কাছে যাওয়া

রোগীর দেহনিঃসৃততরলের সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, বিশেষ করে মুখ ও শ্বাসনালীর নিঃসরণ। এ সময়ে ডিজপোজেবল গ্লাভস ব্যবহার করাই ভাল। গ্লাভস খোলার পরে ও আগে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

সম্ভাব্য সংক্রামক বস্তুগুলি এড়িয়ে চলুন (যেমন সিগারেট শেয়ার করা, তাঁর ব্যবহৃত থালা, বাটি, পানীয়, ব্যবহৃত তোয়ালে বা বিছানা)।

রোগীর খাবার অবশ্যই তাঁর ঘরে দিতে হবে। তাঁর তালা বাসন গ্লাভস পরে সাবান ও ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুতে হবে। থালা বাসন ফের ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব বস্তু নাড়াচাড়া করার পর বা গ্লাভাস খোলার পর হাত সাফ করতে হবে।

রোগীর স্পর্শ করা সারফেস, ব্যবহৃত কাপড়জামা, বিছানা সাফ করার সময়ে বা সেগুলি নাড়াচাড়া করার সময়ে তিন স্তরের মাস্ক ব্যবহার করুন এবং ডিসপোজেবল গ্লাভস পরুন। গ্লাভস খোলা ও পরার আগে হাত ধুয়ে নিন।

পরিচর্যাকারী দেখতে হবে যাতে রোগী ব্যবস্থা মোতাবেক চিকিৎসাগ্রহণ করেন।

পরিচর্যাকারী ও নিকটসংস্রবদের প্রতিদিন তাপ মাপতে হবে এবং জ্বর-কাশি-শ্বাসকষ্টের মত উপসর্গ দেখা দিলে তা সঙ্গে সঙ্গে জানাতে হবে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus COVID-19
Advertisment