পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে ইডি ঢুকে নোট গুনছে। দরজার লক ভেঙে ঢুকেছে ইডি। নোট গুনতে এসেছে আধুনিক যন্ত্র। পার্থ-অর্পিতা মামলায় এই গতিপ্রকৃতি। কিন্তু এ দিনই হয়তো ইডির হাতে শীর্ষ আদালতের বাঁধন পড়ার একটা আশা দেখেছিলেন অনেকে। কিন্তু সেই আশা পূর্ণ হয়নি। কারণ, ইডি যে ২০০২-এর অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইনের ভিত্তিতে কাজ করে, তার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলি নস্যাৎ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তছরুপ প্রতিরোধ আইন অর্থাৎ প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট বা পিএমএলএ। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এএম খানউইলকরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতায় সিলমোহর দিয়েছে। বিচারপতি খানউইলকর রায়ের মূল অংশটি পড়ে শুনিয়েছেন। আসুন তাতেই নজর দেওয়া যাক।
ফৌজদারি আইনের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র কাজকর্ম
আবেদনে বলা হয়েছিল, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট পিএমএলএ আইনের অধীনে, তারা পুলিশ নয়। ফলে তারা তল্লাশি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, গ্রেফতারি করতে পারে না। সেটা করাটা আইনসম্মতও নয়। সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদন অগ্রাহ্য করেছে। বলে দিয়েছে, ইডি তদন্তের সময় ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুযায়ীই কাজ করবে।
আরও পড়ুন- কাবুলে ফের বিস্ফোরণ, উড়ে গেল শিখ বিক্রেতার দোকান, দিল্লির কাছে সাহায্যের আর্তি
জামিন এবং ২০১৮-র সংশোধনী
পিএমএলএ-তে জামিন পেতে হলে দুটি শর্ত রয়েছে, এক, প্রাথমিক ভাবে অপরাধ করেছে মনে হলেও, অভিযুক্ত দোষী নয়। দুই, আরও কখনও অপরাধ করবে না ওই অভিযুক্ত। ২০১৭ সালের নিকেশ তারাচাঁদ শাহ বনাম কেন্দ্রীয় সরকারের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এটি অসাংবিধানিক বলে। যদিও ২০১৮ সালে এই দুটি শর্তকে অর্থ বিল হিসেবে পাশ করানো হয়। দুটি ক্ষেত্রের উপর দাঁড়িয়ে এই সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। প্রথমত, যে ভাবে অর্থ বিলের মাধ্যমে এই দুটি সংশোধনীকে পাশ করানো হয়েছিল, তা অযৌক্তিক।
দ্বিতীয়ত, জামিন পাওয়ার শর্ত দুটি অসাংবিধানিক। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদন নস্যাৎ করে সংশোধনীর বৈধতায় সিলমোহর দিয়েছে। বলেছে, সংসদ ২০১৭ সালের রায়কে মেনেও আইন পরিবর্তন করতে পারে। আর সংশোধনীকে অর্থ বিল হিসেবে পাশ করানোর ব্যাপারে যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তা শোনার জন্য তৈরি করা যেতে পারে বৃহত্তর বেঞ্চ। যেমন আধার অর্থ বিল হিসেবে পাশ করানো যায় কিনা, তা শুনবে একটি বৃহত্তর বেঞ্চ, ঠিক তেমনই।
Read full story in English