কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সম্প্রতি তাঁর পদবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন। গত সপ্তাহে রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রেক্ষিতে ধন্যবাদ প্রস্তাবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, 'আমরা যদি কোথাও (জওহরলাল) নেহরুকে উল্লেখ করতে না পারি, তারা (কংগ্রেস) বিরক্ত হয়। নেহেরু এত মহান ব্যক্তি ছিলেন, তাহলে তাঁদের কেউ নেহেরু উপাধি ব্যবহার করেন না কেন? নেহেরুর নাম ব্যবহার করতে লজ্জা কীসের?'
রাহুল ১৩ ফেব্রুয়ারি পালটা বলেছেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রীকে কিছু প্রশ্ন করেছি। আমি তাঁকে মিস্টার আদানির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। আমি জিজ্ঞাসা করেছি, মিস্টার আদানি কীভাবে এত দ্রুত বেড়ে উঠলেন? প্রধানমন্ত্রী একটিও প্রশ্নের উত্তর দেননি। আমার প্রশ্নের জবাবে তাঁর উত্তর ছিল, আপনাকে কেন নেহেরু বলা হয় না, কেন গান্ধী বলা হয়? কারণ, ভারতে সাধারণত… হয়তো মিস্টার মোদী এটা বোঝেন না… কিন্তু ভারতে সাধারণত আমাদের উপাধি আমাদের বাবার উপাধি। রাহুল গান্ধীর নামে 'গান্ধী' এসেছে ফিরোজ গান্ধী, তাঁর পিতামহ, স্বাধীনতা সংগ্রামী, সাংবাদিক এবং রায়বরেলির সাংসদ সদস্যর থেকে। তিনি ১৯৬০ সালে মারা যান, তাঁর ৪৮ বছর পূর্ণ হওয়ার কয়েক দিন আগে।'
ফিরোজ গান্ধী থেকে গান্ধী
ফিরোজ গান্ধী বা ফিরোজ জাহাঙ্গির গান্ধীর জন্ম ১২ সেপ্টেম্বর, ১৯১২ সালে বম্বেতে। তাঁর মা-বাবা, রতিমাই এবং জাহাঙ্গির ফরিদুন গান্ডি ছিলেন পার্সি। জাহাঙ্গির একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করেছেন। যুবক ফিরোজ তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর এলাহাবাদে চলে আসেন লেডি ডাফরিন হাসপাতালের সার্জেন তাঁর আত্মীয় শিরিন কমিসারিয়েটের সাথে থাকতে। ফিরোজ ইউইং ক্রিশ্চিয়ান কলেজের ছাত্র ছিলেন।
জওহরলাল নেহরুর স্ত্রী কমলা নেহেরু, যিনি পরে ফিরোজের শাশুড়ি হয়েছিলেন, তিনি ইউইং ক্রিশ্চিয়ান কলেজের বাইরে পিকেটিং করা সত্যাগ্রহীদের মধ্যে ছিলেন। গরমে ও ভিড়ের মধ্যে কমলা অজ্ঞান হয়ে গেলে, ফিরোজ তাঁর সাহায্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার জেরে, ফিরোজ ব্রিটিশ-স্টাফ কলেজ থেকে বাদ পড়েন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েন। নেহেরু পরিবারের বাড়ি এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্র আনন্দ ভবনে তিনি দীর্ঘসময় কাটান। এই সময়েই তিনি মহাত্মা গান্ধীর সম্মানে গান্ডি থেকে গান্ধী নাম পরিবর্তন করেছিলেন।
আরও পড়ুন- যেখানে পড়েছেন, সেই কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই বক্তৃতা দিতে যাচ্ছেন রাহুল
ইন্দিরা গান্ধীর সাথে বিয়ে
এই সময়টা ছিল যখন ফিরোজ প্রথম জওহরলাল নেহরুর কন্যা পাঁচ বছরের ছোট ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনির সংস্পর্শে এসেছিলেন। তিনি প্রথম ইন্দিরাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন যখন ইন্দিরা মাত্র ১৬ বছর বয়সী। কিন্তু, কমলা নেহেরু আপত্তি জানিয়েছিলেন, বলেছিলেন যে তাঁর মেয়ে খুব ছোট।
সাংবাদিক সাগরিকা ঘোষ তার বই ইন্দিরা: ইন্ডিয়া’স মোস্ট পাওয়ারফুল প্রাইম মিনিস্টারে লিখেছেন যে পরের কয়েক বছরে, যক্ষ্মা রোগের কারণে কমলার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় ফিরোজ নেহরুদের নির্ভরযোগ্য বন্ধু হয়ে ওঠেন। এমনকী, জার্মানির ব্যাডেনওয়েলার ক্লিনিকে তিনি কমলা নেহরুকে দেখতে পর্যন্ত গিয়েছিলেন।
Read full story in English