আনুমানিক ১৭০ ট্রিলিয়ন (১ ট্রিলিয়নের অর্থ ১ লক্ষ কোটি) প্লাস্টিক কণা বিশ্বজুড়ে সমুদ্রে ভাসছে। যার ওজন প্রায় ২০ লক্ষ মেট্রিক টন। একটি নতুন গবেষণা বলছে, এই পরিস্থিতিতে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে সংখ্যাটা ২০৪০-এর মধ্যে প্রায় তিনগুণ বেড়ে যাবে। সম্প্রতি 'PLOS ONE' নামে এক জার্নালে এই গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটি করেছেন লিসা এম এরডল, মার্কাস এরিকসেন ও উইন কাউগার। তাঁরা ক্যালেফোর্নিয়ার দুটি সংস্থার গবেষক।
যাঁরা গবেষণা করেছেন
তাঁদের সঙ্গে এই গবেষণায় ছিলেন সুইডেনের প্যাট্রিসিয়া ভিলাররুবিয়া-গোমেজ এবং আরও ছয় গবেষক। তাঁদের গবেষণা সম্পর্কে গোমেজ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, 'বাস্তব পরিস্থিতিটা প্রত্যাশার চেয়ে বেশ খারাপ। ২০১৪ সালে অনুমান করা হয়েছিল যে সমুদ্রে ৫ লক্ষ কোটি প্লাস্টিক কণা ভাসছে। তার মাত্র ১০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে সেই ভাসমান প্লাস্টিকের কণার পরিমাণ ১৭০ ট্রিলিয়নে পৌঁছে গেছে।'
গবেষকের কথা
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাথে কথা বলতে গিয়ে এই গবেষণার অন্যতম গবেষক কাউগার জানিয়েছেন, সঠিক সংখ্যাটি এখনই বলা কঠিন। তবে সমুদ্রের পৃষ্ঠে পাওয়া এই প্লাস্টিকের কণাগুলির একটি বিশাল অংশ মাইক্রোপ্লাস্টিক। এগুলো আসলে ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের কণা। যার ব্যাস ৫ মিলিমিটারেরও কম।
আরও পড়ুন- প্রায় একবছর পর জেল থেকে মুক্ত সিধু, কোন মামলায় তিনি জেলে গিয়েছিলেন?
কেন ক্ষতিকারক
মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো সমুদ্রের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকারক। কারণ তারা সামুদ্রিক জীবের স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এই সব প্লাস্টিকের কণা সহজে নষ্ট হয় না। আর, সামুদ্রিক জীব এগুলোকে খাবার ভেবে ভুল করে। ফলে, এই কণাগুলো জীববৈচিত্র্যের ক্ষতির কারণ। এদের জন্য বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
নতুন গবেষণার ফলাফল
গবেষকরা এই গবেষণার জন্য ১৯৭৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ছ'টি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক অঞ্চলের ১২ হাজার কেন্দ্রের তথ্য পরীক্ষা করেছেন। তার সঙ্গে নিজেদের সংগ্রহ করা তথ্য মিলিয়ে দেখেছেন। শেষে, কমপিউটার মডেলিং ব্যবহার করে বর্তমানে মহাসাগরে কতটা মাইক্রোপ্লাস্টিক আছে, তা অনুমান করার জন্য একটি গ্লোবাল টাইম সিরিজ ব্যবহার করেছেন। যাতে, বছরের পর বছর ধরে এই সঞ্চিত প্লাস্টিকের ঘনত্ব কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, তা-ও তাঁদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে।