করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ যে সবথেকে বেশি শিশুদের শরীরে প্রভাব বিস্তার করবে সেই নিয়েও চিকিৎসকরা আগেই জানিয়েছিলেন। এবং ওদের মধ্যে বেশিরভাগই এখনও ভ্যাকসিন গ্রহণ করেনি তাই ঝুঁকি কিন্তু সবসময়ই রয়েছে। বিশেষ করে বছর পাঁচেকের শিশুদের থেকেই শুরু হচ্ছে যাবতীয় সমস্যা। সেই বিষয়েই যেন চিকিৎসকরা যথেষ্ট বেশি উদ্বিগ্ন।
সম্প্রতি সিডিসির তরফ থেকে জানানো হয়েছে শিশুদের মধ্যে করোনা তথা ওমিক্রন সংক্রমণ থেকেই ডায়াবেটিসের প্রভাব বাড়ছে ওদের শরীরে। তবে যে বিষয়টি এখনও পর্যন্ত জানা সম্ভব হচ্ছে না যে আদৌ এই শারীরিক সমস্যা বাচ্চাদের শরীরে বড় হলেও থাকবে কিনা। এই নিয়েও চিকিৎসকদের যথেষ্ট আলোচনার প্রয়োজন। ডায়াবেটিসের সঙ্গেই বাচ্চাদের শরীরে বাড়ছে মেটাবোলিজম ঘাটতি। ফলেই তাদের মধ্যে ইমিউনিটি কম উৎপাদিত হচ্ছে। অনেকের হজমের সমস্যা হচ্ছে, ফলেই খাবার দাবার নিয়ে অনেক সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
বাচ্চাদের মধ্যে ডায়াবেটিসের মত সমস্যা ছাড়াও ব্রেন সংক্রান্ত সমস্যা, এবং হার্টের সমস্যা, তথা রক্ত কোষে প্লাজমা সংক্রান্ত ঘাটতি এই নিয়েও যথেষ্ট পরিমাণে বাচ্চারা ভুগছে বলেই জানিয়েছে চিকিৎসকরা। সবকিছুর সঙ্গে আরও যে বিষয়টি একেবারেই বাদ দিলে নয় সেটি হল চোখের সমস্যা। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরেও অনেক বাচ্চাই চোখে আবছা দেখছে। তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে বেড়ে ওঠার ঘাটতি। কীভাবে এগুলি ক্ষতি করছে তাদের?
ডায়াবেটিসের কারণে ওদের শারীরিক অর্গান গুলি একেবারেই সঠিকভাবে কাজ করছে না। ভাইরাসের প্রভাব গিয়ে পড়ছে পাকস্থলী এবং প্যানক্রিয়াটিক সেলে! যার ফলেই ওদের শরীরে স্ট্রেস যেমন বাড়ছে তেমনই ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে সমস্যার সৃষ্টি করছে। পরবর্তীতে এটি থাকবে কিনা সেই নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। লক্ষণ দেখা যাবে হঠাৎ করেই ওজন কমে যাওয়া, বমি এবং পেটে ব্যথা।
মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোমের কারণেই বাচ্চাদের শরীরে নানা রকম গলদ দেখা যাচ্ছে। ব্রেনের সমস্যা এবং ডায়রিয়া, তলপেটে ব্যথা, রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, মাথা ব্যাথা এবং আরও অনেক কিছুই। চোখ অবধারিত চিকিৎসককে দেখানোর ব্যবস্থা করুন, নয়তো মুশকিল।
মানসিক ভাবেও কিন্তু শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ওদের শরীরে স্ট্রেস হরমোন এত বিপদ ঘটাচ্ছে যে উদ্বেগ, দূরত্ব এবং সবকিছুতে ভয় পেয়ে যাওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ওদের মধ্যে। এমনকি কথা বলায় সমস্যা, অদ্ভুত আচরণ এবং বোকা বোকা প্রশ্ন করার মত হদিশ পর্যন্ত মিলছে শিশুদের মধ্যে। সহজেই রেগে যাচ্ছে ওরা। সুতরাং ওদের ভাল রাখার চেষ্টা করুন। যতটা পারবেন, আনন্দে রাখুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন