ভগবান বিষ্ণু দেবতাদের রক্ষায় যুগে যুগে নানারূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তাঁর একটি রূপ হল নৃসিংহ রূপ। যে রূপ অত্যন্ত জাগ্রত বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। তবে, শুধু নৃসিংহ রূপই নয়। পুরাণ অনুযায়ী, ভগবান নৃসিংহদেবও ভক্তদের প্রয়োজনে বারবার নানারূপে ধরাধামে অবতীর্ণ হয়েছেন। তাঁর তেমনই এক রূপ হল বিড়াল নৃসিংহ অবতার। যে অবতারে তিনি দেবতাদের মুষিক দৈত্যের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন।
ওড়িশার পাইকমলের বরগড়ে রয়েছে সুপ্রাচীন এই বিড়াল নৃসিংহ রূপের মন্দির। যেখানে জাগ্রত দেবতার আশীর্বাদ পেতে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা। আর অতিথিদের কথা ভেবে এখানে তৈরি হয়েছে নৃসিংহনাথ অতিথি ভবন। যেখানে যোগাযোগের ফোন নম্বর ০৭৮৯৪৭০৭২৯০। এখানে পৌঁছনোর জন্য রয়েছে পাইকমল থেকে মহারাজা বাস সার্ভিস। যার মোবাইলে নম্বর ০৭৬০৬০৫১১৮৮।
কথিত আছে মুষিক দৈত্য দেবতাদের সঙ্গে যুদ্ধে পেরে না-উঠলে পর্বতের গর্তে গিয়ে আশ্রয় নিত। আর একা কোনও দেবতাকে পেলে তাঁর ওপর হামলা চালাত। এই পরিস্থিতিতে দেবতাদের আহ্বানে ভগবান নরসিংহ মার্জার কেশরী রূপ নিয়েছিলেন আর মুষিক দৈত্যকে হত্যা করেছিলেন। এই মন্দিরে রয়েছে সেই বিড়ালরূপী নরসিংহ দেবের বিগ্রহ। মন্দিরের গর্ভগৃহের পিছনে রয়েছে মুষিকদৈত্যের প্রবেশ গৃহ।
এখানে নৃসিংহদেবের দুটি বিগ্রহ রয়েছে। প্রাচীন বিগ্রহটি চুরি যাওয়ার পর নতুন বিগ্রহটি বসানো হয়। পরে ভগবান নৃসিংহদেবের প্রাচীন বিগ্রহ তাঁর অলৌকিক ক্ষমতায় চোরের হাত থেকে আবার উদ্ধার হন। তাই এখন দুটি বিগ্রহেরই পুজো করা হয়। নৃসিংহদেবের পিছনে রয়েছে লক্ষ্মী ও সরস্বতীর বিগ্রহ। পাশে রয়েছে জগন্নাথদেব এবং গোবর্ধনধারী গোপালমূর্তি। এখানে গর্ভগৃহ প্রদীপের আলোয় দর্শন করাই হল রীতি। বেরনোর পথে পাহাড়ের গায়ে খোদিত আছে গণেশ ও দুর্গাদেবীর বিগ্রহ।
আরও পড়ুন- বিখ্যাত মন্দির, পুজো দিলে বা উপস্থিত হলেই নষ্ট হয় কালসর্প-সহ হাজারো দোষ
রামায়ণে যে গন্ধমাদন পর্বত রয়েছে, কথিত আছে, এটাই সেই পর্বত। এখান থেকেই বিশল্যকরণী ওষুধের জোরে শক্তিশেলের আঘাত কাটিয়ে উঠেছিলেন ভগবান লক্ষ্মণ। কথিত আছে, এখান নৃসিংহ দেব এতই জাগ্রত যে তাঁর শরীরে আঘাতের জেরে রক্ত পর্যন্ত বের হয়ে এসেছিল।