Friday Namaz Break: ৯০ বছর পর বিধানসভায় বন্ধ শুক্রবারের 'নামাজ বিরতি' ! সরকারের সিদ্ধান্তের জেরে তুমুল হট্টোগোল। মুসলিম বিধায়কদের মধ্যে চরম অসন্তোষ।
হঠাৎই ছন্দপতন। ৯০ বছর ধরে চলে আসা রীতিতে এবার ছেদ পড়ল। আজ থেকে বন্ধ হয়ে গেল শুক্রবারের বিধানসভার দুই ঘন্টার 'নামাজ' বিরতি। সরকারের এই সিদ্ধান্ত চলতি বছরের বাজেট অধিবেশন থেকে কার্যকর করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলি সরকারের এই ধরণের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে এই সিদ্ধান্তকে সংখ্যাগরিষ্ঠের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে স্পিকার সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার কথা উল্লেখ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এটিকে ঔপনিবেশিক ঐতিহ্যের অবসানের লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন।
অসম বিধানসভায় শুক্রবার নামাজ পড়ার জন্য মুসলিম বিধায়কদের জন্য বরাদ্দ দু ঘণ্টার 'বিশেষ ছুটি' বাতিল করা হয়েছে। অসম বিধানসভায় গত ৯০ বছর ধরে চলে আসছিল এই ঐতিহ্য। কিন্তু এবারের বাজেট অধিবেশন থেকেই এই ঐতিহ্যের অবসান ঘটল।
সরকারের পদক্ষেপে তীব্র অসন্তোষ লক্ষ্য করা গিয়েছে মুসলিম বিধায়কদের মধ্যে। অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) এর বিধায়ক রফিকুল ইসলাম সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, "বিধানসভায় প্রায় ৩০ জন মুসলিম বিধায়ক রয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমাদের মতামত প্রকাশ করেছিলাম, কিন্তু বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে এবং তারা সেই ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে।"
কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত সাইকিয়া পরামর্শ দিয়েছেন যে মুসলিম বিধায়কদের কাছাকাছি কোনও স্থানে নামাজ পড়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন, "আজ আমার দলের অনেক সহকর্মী এবং AIUDF বিধায়ক নামাজ পড়তে যাওয়ার কারণে বিধানসভার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা মিস করেছেন। যেহেতু এটি কেবল শুক্রবারে একটি বিশেষ ধর্মীয় প্রার্থনা, তাই কাছাকাছি কিছু ব্যবস্থা করা যেতে পারত।"
অসম বিধানসভায় প্রায় নয় দশক ধরে চলে আসা এই ঐতিহ্যের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে বিধানসভার স্পিকারের নেতৃত্বে গঠিত রুলস কমিটি গ্রহণ করে। সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার কথা উল্লেখ করে স্পিকার পরামর্শ দেন যে অসম বিধানসভার কার্যক্রম অন্য দিনের মতো শুক্রবারও চালিয়ে যাওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন।