WFI-World Championship: রেসলিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (ডব্লিউএফআই) বুধবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ভারতীয় দলকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বিশ্ব কুস্তি পরিচালনা সংস্থা, ইউডাব্লুডাব্লুকে জানিয়ে দিয়েছে যে ক্রীড়া মন্ত্রক সংস্থার স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপ করছে। সেই কারণে দল প্রত্যাহার করা হল।
ডব্লিউএফআই সম্প্রতি অনূর্ধ্ব২৩ এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য নির্বাচনী ট্রায়ালের ঘোষণা করেছিল। যাকে ফেডারেশনের নির্বাচনী বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা প্রতিবাদী কুস্তিগিররা আদালত অবমাননা বলে অভিযোগ করেছেন। এরপরই ডব্লিউএফআই ট্রায়ালের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করল। আর, ৪ অক্টোবর, আদালত অবমাননার অভিযোগের বিরুদ্ধে পালটা আইনি লড়াইয়ে না নামার সিদ্ধান্ত নিল।
ডব্লিউএফআই (WFI) সূত্র পিটিআইকে জানিয়েছে, 'সাক্ষী মালিকের স্বামী সত্যওয়াত কাদিয়ান সম্প্রতি আদালতে গিয়ে বলেছেন যে ডব্লিউএফআই-এর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা উচিত। আমরা এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ভারতীয় দল পাঠাতে পারব না। আমরা সেটা ইউডাব্লুডাব্লুকে (UWW)-কে জানিয়েছি।'
সূত্রটি আরও বলেছে, 'এই সব ঘটছে ক্রীড়ামন্ত্রকের স্থগিতাদেশের জন্য। সাসপেনশন রাখার কোনও কারণ নেই। যদি মন্ত্রক স্থগিতাদেশ তুলে নেয়, তাহলে এই সমস্ত সমস্যা তৈরি হবে না। এটা খুবই দুঃখজনক যে কিছু কুস্তিগিরের জন্য সমস্ত কুস্তিগিরদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আর, মন্ত্রকও স্থগিতাদেশ তুলে নিচ্ছে না।'
নতুন কর্তাদের নির্বাচন করার জন্য নির্বাচনের পরপরই ২৪ ডিসেম্বর ক্রীড়া মন্ত্রক ডব্লিউএফআইকে সাসপেন্ড করে। ডব্লিউএফআই সভাপতি সঞ্জয় সিং ইউডাব্লুডাব্লুর সভাপতি নেনাদ লালোভিচকে তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, 'দুর্ভাগ্যবশত, যুবকল্যাণ মন্ত্রক (MYAS) ডব্লিউএফআই-এর স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপ করে চলেছে। যুবকল্যাণ মন্ত্রক ২০২৩-এর ২৪ ডিসেম্বর, ডব্লিউএফআই-কে দৈনন্দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ও বিরত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আর, ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনকে (এনওসি অফ ইন্ডিয়া) ডব্লিউএফআই-এর পরিচালনার জন্য একটি অ্যাড-হক কমিটি গঠন করতে বলেছে।'
ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (IOA) আবার, ফেডারেশন পরিচালনাকারী অ্যাড-হক প্যানেলটি এই বছরের মার্চে ভেঙে দিয়েছে। একই সময়ে যখন ইউডাব্লুডাব্লু ফেব্রুয়ারিতে ডব্লিউএফআই-এর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। ডব্লিউএফআই পিটি উষার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (আইওএ) থেকেও সমর্থন পেয়েছে। ডব্লিউএফআই তার কাজও শুরু করে। কিন্তু, কুস্তিগির বজরং পুনিয়া, ভিনেশ ফোগত, সাক্ষী মালিক ও তাঁর স্বামী সত্যওয়াত ক্রীড়া সংস্থা পরিচালনার জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগের আবেদন আদালতে জানান।
একটি অন্তর্বর্তী আদেশে, আদালত বলেছে যে অ্যাড-হক কমিটি ভেঙে দেওয়ার আইওএর সিদ্ধান্ত ক্রীড়া মন্ত্রকের স্থগিতাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত, অ্যাড-হক কমিটিরই ফেডারেশনের বিষয়গুলো পরিচালনা করার দরকার ছিল। যদিও আইওএ আদালতকে বলেছে যে তারা প্যানেল পুনর্গঠন করতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন বিশ্ব কুস্তি সংস্থাকে বিশ্ব সংস্থার ধারা ৬.৩ অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে। একইসঙ্গে ব্যাপারটি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে জানানোরও অনুরোধ করেছে।
বিশ্ব কুস্তি সংস্থার সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬.৩ অনুযায়ী, 'অধিভুক্ত এবং সহযোগী সদস্যরা স্বাধীনভাবে তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তারা কোনও রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা অর্থনৈতিক চাপের প্রভাব ছাড়াই স্বায়ত্তশাসন রক্ষা করবে। সরকার এবং অন্যান্য সরকারি কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র জাতীয় ফেডারেশন দ্বারা তাদের আর্থিক অনুদানের ব্যবহার যাচাই করবেন।' বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ মূলত তিনটি বিভাগে হয়। সেগুলো হল— পুরুষদের ফ্রিস্টাইল, মহিলা বিভাগ এবং গ্রেকো-রোমান। চ্যাম্পিয়নশিপের দলে ছিলেন-
আরও পড়ুন- অপ্রচলিত নাম, ওয়াশিংটন সুন্দর! পিছনে এক বিরাট গল্প, বৃহস্পতিবার ঘুরল পুনের দর্শকদের মুখে
পুরুষদের ফ্রিস্টাইল: উদিত (৬১ কেজি), মনীশ গোস্বামী (৭০ কেজি), পারবিন্দর সিং (৭৯ কেজি), সন্দীপ মান (৯২ কেজি)।
মহিলা: কীর্তি (৫৫ কেজি), মানসী (৫৯ কেজি), মনীষা (৬৫ কেজি), বিপাশা (৭২ কেজি)।
গ্রেকো-রোমান: সঞ্জীব (৫৫ কেজি), চেতন (৬৩ কেজি), অঙ্কিত গুলিয়া (৭২ কেজি), রোহিত দাহিয়া (৮২ কেজি)।