ঈদের উৎসবের দিন মালদার রতুয়া গ্রামের বাড়িতে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনবন্দী সেনা কর্মীর দেহ ফিরতে শোকের ছায়া নেমে এলো। ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হয় রতুয়ার ওই সেনা কর্মীর বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে । তিনদিন পর গ্রামের বাড়িতে মৃতদেহ ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। সোমবার সকালে উপস্থিত সেনা জওয়ান ও অফিসারেরা মৃতদেহ সম্মানের সহিত কবরস্থ করার ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি মৃত সেনা কর্মীর কফিনবন্দী দেহকে উদ্দেশ্য করে গান স্যালুট জানানো হয়।
পুলিশ ওই স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সেনা কর্মীর নাম মাহবুল হক (২৭)। তার বাড়ি রতুয়া থানার বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধানগর গ্রামে। পরিবারের তার স্ত্রী সেতারা খাতুন এবং চার ও এক বছরের দুই নাবালিকা কন্যা সন্তান রয়েছে। অত্যন্ত দুঃস্থ পরিবারের ওই সেনাকর্মী গত ৭ বছর আগে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন। বর্তমান রাজস্থানে পোস্টিং ছিল তাঁর । ঈদের জন্য ছুটিতে মালদার গ্রামের বাড়িতে আসার জন্য রওনা দিয়েছিলেন ওই সেনাকর্মী । এরপরই উত্তরপ্রদেশের চিৎপুর এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়েই নাকি মৃত্যু হয় সেনা কর্মী মাহবুল হকের এমনটাই জানতে পেরেছে পরিবারের লোকেরা।
মৃতের এক দাদা মহম্মদ সাহাবুদ্দিন জানিয়েছেন, গত ২৮ মার্চ রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ভাই মাহবুল হকের সঙ্গে মোবাইলে শেষ বার কথা হয়েছিল। এরপর থেকে মোবাইলে ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। রাজস্থানে পোস্টিং-এর অফিসারদের মাধ্যমে জানা যায় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়েই উত্তরপ্রদেশের চিৎপুর এলাকায় জখম হয়েছে ভাই মাহবুল হক। তার চিকিৎসা চলছে নিকটবর্তী হাসপাতালে । এরপর ২৯ মার্চ জানতে পারি ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তীতে এদিন সেনা জাওয়ান ও অফিসারেরা কফিনবন্দী ভাইয়ের দেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করে। সেখানেই গান স্যালুটের মাধ্যমে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় মহবুল হকের দেহ।
মৃতের পরিবারের বক্তব্য, কিভাবে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হল মাহবুল হকের সেই বিষয়টি নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। প্রথমে বলা হয়েছিল সে সুস্থ আছে পরবর্তীতে মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এতেই আরো সন্দেহ বাড়িয়েছে মৃতের পরিবারের।
এদিকে মৃতের স্ত্রী সেতারা খাতুন জানিয়েছেন, দুই কোলের সন্তানকে নিয়ে এখন তাদের দিশাহারা অবস্থা । কি করে সংসার চলবে সেটাও ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।
তৃণমূল পরিচালিত মালদা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা রিয়াজুল করিম বক্সী জানিয়েছেন, ঈদের উৎসবের দিন এমন ঘটনায় সকলে শোকাহত। মাহবুল হক মৃত্যুতে ওই পরিবারটির অসহায় অবস্থা। মৃতের স্ত্রীর চাকরির ব্যবস্থা যাতে করা হয় সেই দাবি উপস্থিত সেনা অফিসারদের কাছে আবেদন রাখা হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনও যাতে এই পরিবারটির পাশে থাকে সে সেই আবেদনও রাখা হয়েছে।