Saline Controversy: স্যালাইন নিয়ে বিতর্ককে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া মামলায় এবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির চরম ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য সরকার। "এখনই সমস্ত হাসপাতালে রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইন দেওয়া বন্ধ করতে হবে।" বৃহস্পতিবার এমনই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হীরন্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ। সেই সঙ্গে যাঁরা ইতিমধ্যেই এই সমস্ত ওষুধ ব্যবহারের পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের 'বিষ' স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় রাজ্যে। এ ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হীরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ স্যালাইন প্রস্তুতকারক সংস্থার বিরুদ্ধে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তার অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে।
এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি রাজ্য সরকারের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, "CID তদন্তে আগ্রহী রয়েছে বলে আমরা জেনেছি।" প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্যের পরেই রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল পাল্টা বলেন, "CID তদন্তে আগ্রহী। তবে প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছে পুলিশ।" শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল আরও জানিয়েছেন, তিনটি ব্যাচের স্যালাইন বানায় ওই সংস্থাটি। এক্ষেত্রে পাঁচটি অভিযোগ এসেছে, একজনের মৃত্যু হয়েছে। এরই পাশাপাশি AG আরও বলেন, "নমুনা সংগ্রহের পর দুটি পরীক্ষা করা হয়েছে স্যালাইনের। রাজ্যের ল্যাবে একটি পরীক্ষা হয়েছে। দ্বিতীয় পরীক্ষার জন্য নমুনা মুম্বইয়ের এনএবি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।"
আরও পড়ুন- West Bengal News Live: সরানো হল স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষ সচিবকে, স্যালাইন-কাণ্ডের জেরেই এই পদক্ষেপ?
সংশ্লিষ্ট ওষুধ কোম্পানিকে কোনও নোটিশ দেওয়া হয়েছে কিনা তা প্রধান বিচারপতি জানতে চান। উত্তরে এজির তরফে জানানো হয়, ওই সংস্থাকে এই মর্মে কোনও নোটিশ দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, স্যালাইন বিতর্ক নিয়ে দায়ের হওয়া মামলাকারীর আইনজীবীও এদিন আদালতে সওয়াল করেন। মামলাকারীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এদিন আদালতে জানান, এর আগে উত্তরবঙ্গের এক চিকিৎসক ওই স্যালাইন নিয়ে অভিযোগ এনেছিলেন। উল্টে তাঁর বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। এমনকী ওই ওষুধ সংস্থাকে কর্নাটকের সরকার তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল বলেও তিনি আদালতে দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন- Saline Controversy: 'বিষাক্ত' স্যালাইন কাণ্ড, মৃত্যু সদ্যোজাত শিশুর, মেদিনীপুর মেডিক্যালে কান্নার রোল
পশ্চিমবঙ্গের সরকার ওই সংস্থার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে দাবি করেছেন মামলাকারীর আইনজীবী। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, "খোদ ড্রাগ কন্ট্রোলার ওই সংস্থাকে গত বছর স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ করতে বলেছিল। এরপরেও কেন সব হাসপাতাল থেকে ওই স্যালাইন তুলে নেওয়া হল না? গিনিপিগের মতো মানুষের শরীরে পরীক্ষা করার জন্যই?"
আরও পড়ুন- Tourist Death: ফের পাহাড়ে বিরাট অঘটন! কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু বাঙালি পর্যটকের
এদিন স্যালাইন কাণ্ড নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে যাবতীয় সওয়াল-জবাব শোনেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই ড্রাগ ব্যবহার করে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। হাইকোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩০ জানুয়ারি।