Advertisment

দক্ষিণেশ্বরের ডালা ব্যবসায়ীদের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন 'কবে পাব দোকানের চাবি ?'

গতকাল অনুষ্ঠান মঞ্চের বাইরে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শুনেছেন অধীর আগ্রহে। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে রয়েছে তাঁদের ভবিষ্যতের চাবিকাঠি। সবার মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, "দোকানের চাবি কবে পাব?"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দোকান পাওয়ার আসায় চাতক পাখির মত বসে ব্যবসায়ীরা

"কবে পাব দোকানের চাবি? কিছু বললেন মুখ্যমন্ত্রী?" একগাল হাসি নিয়ে একটাই প্রশ্ন ওঁদের মুখে। দক্ষিণেশ্বরে রানি রাসমণি স্কাইওয়াক উদ্বোধনের পর খুশির মেজাজে এযাবতকাল মন্দিরের সামনে বসা ডালা ব্যবসায়ীরা। যাঁরা চার বছর আগে উৎখাত হয়েছিলেন নিজেদের দোকান থেকে। আধ পেটা খেয়ে কোনোরকমে দিন কেটেছে এতদিন। কেউ কেউ ভরসা হারিয়ে বদলেছেন পেশা। বাকিরা সরকারের বানানো দক্ষিণেশ্বরের অস্থায়ী দোকানেই কাটিয়েছেন দিন। তবে সে সবের এখন অবসান। সাতদিনের মধ্যে হাতে পেতে চেলেছেন ঝকঝকে দোকান, যার ঠিকানা রানী রাসমনি দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক।

Advertisment

তবে আক্ষেপ রয়েছে, কালীপুজোর কয়েকদিন আগে যদি স্কাইওয়াক তৈরি হত, তাহলে বোধহয় পড়ে যাওয়া ব্যবসায় একটু গতি আসত। চার বছর ধরে এই ভাঁটার টান রয়েছে ব্যবসায়। অভিযোগ ছিল, দক্ষিণেশ্বেরের এই পিছনের দিকের রাস্তায় অস্থায়ী দোকান করে দেওয়ায়, বেলা গড়িয়ে যায় কিন্তু বউনি হয় না, পসরা সাজিয়ে দোকান খুলতেও মন চাইতো না, স্কাইওয়াকের দাপটে নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যেত ব্যবসায়ীদের। অবশেষে মনে হচ্ছে, ঘুচবে সেই সমস্যা। দীপবলির আলোতে নাই হোক, আগামী দিনে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা।

১৩৭ টি স্টল বানানো হয়েছে স্কাইওয়াকে। ২ নভেম্বর লটারি হয়েছে ডালা ব্যবসায়ীদের মধ্যে। যাতে কারোর মনে দুঃখ না থাকে, সেই কারণে লটারি পদ্ধতিতে নিজের দোকানের নম্বর নিজেই তুলে নিয়েছেন হাতে। গতকাল অনুষ্ঠান মঞ্চের বাইরে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শুনেছেন অধীর আগ্রহে। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে রয়েছে তাঁদের ভবিষ্যতের চাবিকাঠি। সবার মুখে এখন একটাই প্রশ্ন "দোকানের চাবি কবে পাব?"

publive-image দক্ষিণেশ্বর রানী রাসমনি স্কাইওয়াক

আরও পড়ুন: দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক উদ্বোধনেও নিশানায় গেরুয়া বাহিনী

উদ্বোধন মঞ্চ থেকে মমতা ঘোষণা করেন, "স্কাইওয়াক পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডালার দোকানদারদের, যিনি সবচেয়ে বেশি পরিষ্কার রাখবেন, তাঁকে প্রতি মাসে পুরষ্কার দেওয়া হবে।" ইতিমধ্যে ব্যবসায়ীরা মনে মনে ঠিক করে নিয়েছেন কে কেমনভাবে পরিষ্কার রাখবেন তাঁর দোকান। আচার ব্যবসায়ী গৌতম চৌধুরী জানান, "আমিই পাব সে পুরষ্কার, কেউ নোংরা করলে তার জামা খুলিয়ে পরিষ্কার করাব!"

আগামী সাতদিনের মধ্যেই হাতে চলে আসবে দোকানের চুক্তিপত্র। আট ফুট বাই আট ফুটের ঝকঝকে দোকান পেয়ে আপাতত বেশ খোস মেজাজে ব্যবসায়ীরা। তবে এখনও চারজন ব্যবসায়ী দোকান পান নি। পৌরপ্রধান গোপাল সাহা বলেন, "দোকানের যথাযথ নথিপত্র থাকলে তাঁরা অবশ্যই দোকান পাবেন, প্রকল্পের শুরুতেই তা পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আর তাই হয়েছে।"

জুলাই মাসে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন দোকানদার রঘুনাথ চৌধুরি। তিনিই গতকাল বলেন, "আমরা এখন খুব খুশি, লটারির মাধ্যমে ১১৫ নম্বর দোকান পেয়েছি আমি।"

publive-image দক্ষিণেশ্বর রানী রাসমনি স্কাইওয়াক

দক্ষিণেশ্বর ডালা কমিটির চেয়ারম্যান গোপাল মালাকার স্বীকার করেছেন, "আমরা ভুলবশত একটা আন্দোলনে গিয়েছিলাম। পরবর্তীকালে আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পারি। তাই আন্দোলন থেকে সরে আসি।" এই প্রসঙ্গে গতকাল উদ্বোধন মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, ব্যবসায়ীদের ভুল বোঝানো হয়েছিল। যার জেরে হাইকোর্ট অবধি গড়িয়েছিল জল। বিরোধী পক্ষের নাম উল্লেখ না করে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “জগাই মাধাই গদাই, তিন রাজনৈতিক দল হকারদের ভুল বুঝিয়ে আটকে দিতে চেয়েছিল স্কাইওয়াকের কাজ।”

Mamata Banerjee Diwali Kali Puja Kolkata Skywalk
Advertisment