Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

Premium: অঞ্জনের সামনে অঞ্জনের ভূমিকায়, কীভাবে 'মেথড অ্যাক্টর' হয়ে উঠলেন শাওন চক্রবর্তী?

Sawon Chakraborty as Anjan Dutt: পরিচালক অঞ্জনকে বুঝতে সময় লেগেছিল পর্দার রঞ্জনের?

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
chalchitra akhon actor sawon chakraborty who portrayed anjan dutta talks about his lead role

chaalchitra akhon- অঞ্জনের জুতোয় পা গলিয়ে শুধুই স্ট্রাগল বুঝলেন শাওন?

পর্দার পেছনে তিনি অঞ্জন দত্ত, আর সামনে কুণাল সেন… অঞ্জন দত্ত যখন সিলভার স্ক্রিনে মৃণাল সেনের ভুমিকায়, ঠিক তখন রঞ্জন হিসেবে অভিনয়ে তাক লাগিয়ে গেলেন শাওন চক্রবর্তী। অভিনেতার লিড হিসেবে প্রথম ছবি, তাও আবার অঞ্জনের ভুমিকায়। নির্দেশনা দিচ্ছেন খোদ মিস্টার দত্ত।

Advertisment

চেহারা পুরোপুরি মেলেনি, সেকথা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় সোজাসুজি বললেন শাওন। কিন্তু, অঞ্জন দত্ত হিসেবে অভিনয় করতে ভয় লাগেনি? একের পর এক প্রশংসা কুড়িয়ে চলেছেন অভিনেতা। তাঁর মাঝখানেই বহু প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি।

লিড হিসেবে তো প্রথম ছবি, তাও আবার অঞ্জন দত্তের সঙ্গে, মাথায় কী ঘুরছিল?

দেখো, সত্যি কথা বলতে গেলে, আমি খুব উত্তেজিত ছিলাম। যেহেতু মৃণাল সেনের শতবর্ষ, তাই ভাবছিলাম যে ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু তো হবেই অঞ্জনদার তরফে। অঞ্জন দা ফোন করেছিলেন, বললেন, আমি তোমার কথা ভাবছি। তুমি কি একবার দেখা করতে পারবে? তারপর, আমি ভাবলাম যে ও আমিই করছি! সেখান থেকে তো কথা বলে, এতদূর এগোনো।

অঞ্জনদার নাকি নির্দিষ্ট ম্যানারিজম আছে, যা পর্দায় ফুটিয়ে তোলা নেহাত সহজ নয়, কীভাবে সেটা এত ভালভাবে সম্ভব করলে?

না, এটা কিন্তু অনেকটা ভুল। অন্তত, এই প্রসেসটার মধ্যে দিয়ে যাওয়ার পর, আমি এটুকু বুঝেছি একজন অভিনেতাকে দাগিয়ে দেওয়া এত সহজে ঠিক নয়। কিছু টেন্ডেন্সি থাকে। একটা লোক যে চশমা পরে, হয়তো বা হাত পা নাড়ে। কিন্তু, এসবের বাইরে কিন্তু অঞ্জনদা খুব আলাদা। খারিজ বলো বা সিটি অফ জয় বলো অঞ্জনদা অভিনেতা হিসেবে খুব স্বচ্ছ। মানুষটার গান শুনলেও বোঝা যায়, সে যে ক্লাসটা নিয়ে কথা বলে, সেটা কিন্তু একদম ভিন্ন। এইটা আমার একটা প্রসেসের মধ্যে ছিল, যে মানুষটা আসলে কীরকম। পাশাপাশি, যে মিটিং-গুলো হত সেটাও একটা প্রেপ। সাধারণ যে মানুষ অঞ্জন দত্ত, সে কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু আচরণ করে না। আমাদের দুজনেরই একটা বিষয় ছিল যে, অ্যাটিটিউডটা বুঝে নেওয়া। নইলে, এক্সটারনালি যদি সবটাই এক করি, সেটাও কোথাও গিয়ে মিমিক্রি হয়ে যায়। এসেন্স মিস হয়ে যায়।

তখন শুরু হল যে কীভাবে সেটা করা যায়। অঞ্জনদা তখন যে নাটকগুলো করতেন। যে ক্রাইসিসটা উনি পেরিয়েছেন, সেটা বোঝা। দার্জিলিং থেকে কলকাতায় ফিরে তাঁকে কী সহ্য করতে হয়েছিল, এই স্ট্রাগলটা বুঝতে হয়েছে। আমায় অঞ্জন দা বলেছিলেন, তোকে আমি এমন কিছু বলতে পারি, যেটা তোর অবচেতনে নাড়া দেবে। কিন্তু সেটা কতটা তোর অভিনয়ে কাজে লাগবে আমি জানি না। কিন্তু, সেটা কাজে দিয়েছে। কীভাবে দিয়েছি আমি শব্দে ব্যাখ্যা করতে পারব না।

সেই সময়টাতে ফিরে যাওয়া নিশ্চয়ই সহজ ছিল না…

এক্কেবারেই না। টেকনিক্যালি একেবারেই না। আমরা যেটাকে স্বর্ণযুগ বলছি, সেটাতে উনি মানিয়ে নিতে পারতেন না। এবার এইকথা-গুলো হত যে কেন উনি মানিয়ে নিতে পারতেন না। যখন, ওই লোকটাকে বুঝতে হবে তখন নিজের বিবেচনা বুদ্ধি সরিয়ে রেখে নয়, সেটাকে নিয়েই চরিত্রটার বিবেচনাবুদ্ধিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে সততা থাকবে না।

অঞ্জন দত্তের ভুমিকায় অভিনয় করা কঠিন নাকি অঞ্জন দত্তের পরিচালনা চাপে রেখেছিল?

এই রে, এটা একটু ভাবি ( হাসি )…হ্যাঁ, যেটা না বললেই নয় যে আগে যেহেতু অনেকবার কথা হয়েছিল একটু চাপ কম ছিল। নইলে, যার ভুমিকায় অভিনয় করছি, আবার সেই পরিচালক, এটা একটু সমস্যার। আবার এটা ঠিক যে, আত্মবিশ্বাস ছিল…যে যার চরিত্রে অভিনয়, তিনিই তো আমায় পছন্দ করেছেন। তাহলে ভাবব কেন? অন্যটা নিয়ে ভাবি। অভিনয়ের জায়গায় অঞ্জনদার রেফারেন্স পাচ্ছি। কিন্তু, পরিচালক হিসেবে তো অঞ্জনদা অচেনা। আর যেকোনো পরিচালককে বুঝতে একটু সময় লাগে।

অঞ্জনদার সঙ্গে মৃণাল সেনকে নিয়ে এমন কোনও কথা হয়েছিল যেটা তোমার কাজে লাগতে পারে?

না, এটা আমি জিজ্ঞেস করি নি। কারণ, যেটুকু স্ক্রিন প্রেজেন্স ছিল সেখানে আমার সেই বিষয়ে না জানলেও চলত। মৃণাল সেন তাঁর সেটে কী করতেন এগুলো তো গল্প শোনা। স্ক্রিপ্ট বহুবার শুনেছি। সেখানে লেখা থাকত কীভাবে তখন কী হত। তাই, আলাদা করে আর জানার কিছু নেই।

ট্রামের টিকিটটা খেয়ে ফেলছিলে সত্যি?

হাহা, আমি না! অঞ্জন দা খেয়ে ফেলেছিলেন। তবে, এই ছবির জন্য যে কাগজ পর্যন্ত চিবিয়েছি। যদিও পরে ফেলে দিয়েছিলাম। কিন্তু তখন একদম ভাবি নি। অনেকেই আছে কাগজ খায় আমি জানি, কিন্তু আমার না একটু সমস্যা আছে।

অভিনেতা হিসেবে কী মনে হয়, মেথড এক্টিং কি মানুষের জাত বোঝায়?

এটার একটা উত্তর হয়। যেমন, আমাদের এই তৃতীয় বিশ্বের দেশে আসলেই মেথড অভিনয় বিষয়টা না সম্ভব না। আমেরিকান অভিনেতারা যেটার মধ্যে দিয়ে যায়, মেথড বলতে যেটা বোঝেন, সেটা কিন্তু একেবারেই এখানে সম্ভব না। তাদের কিছু সুবিধা থাকে সেটা ফলো করার। আমি চেষ্টা করি ফলো করার। কিন্তু পারিনি। আমার কাছে মেথড হলো যেন চরিত্রটা নিয়ে আমায় প্রিটেন্ড করতে না হয়। লোকে যেন এটা ভাবেন যে আমিই সেই চরিত্রটা। সারা বিশ্বে এরকম অনেক অভিনেতা রয়েছেন যারা এর ধারে কাছে যান না কিন্তু তারা অসাধারণ অভিনেতা।

আবার, ধরো যারা খুব বড় মাপের অভিনেতা তাদের নিজস্ব একটা মেথড রয়েছে। তাঁরা নিজেদের পাথ ফলো করে। যারা অভিনয় নিয়ে কথা বলেন, তারাও কিন্তু একটা জায়গার পর সেটা নিজের মতো করে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কেউ একজন বলে গিয়েছে মানে সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে সেটা না। নিজের একটা রাস্তা থাকে। আমি, তাই মনে করি না, যে মেথড অভিনয় একজন অভিনেতার জাত চিনিয়ে দিতে পারে।

অঞ্জন দত্তকে পোর্ট্রে করার পর কোনও মোটিভেশন পেলে?

একটা বিষয় হল, চরিত্রটা নিয়ে সৎ থাকা। এই শব্দটা খুব সহজ। এটা নিজেকে নিজের কাছে গড়ে তোলা। যে নিজেকে নিজের কাছে গড়ে তুলতে পারে সে তার লিমিট ছাড়িয়ে বেরোতে পারে। খুব ভাল করে নিজেকে পুশ করতে পারে। সেটা একজন অভিনেতার দরকার।

আরেকটা বিষয় হচ্ছে, চরিত্রটাকে ভালবেসে আপন করে নিতে হবে।

tollywood Anjan Dutt Mrinal Sen Entertainment News
Advertisment