দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল রবিবার (১১ জুন) নয়াদিল্লির রামলীলা ময়দানে একটি সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি সেখানে অভিযোগ করেছেন, 'দিল্লি সরকারকে হঠানোর জন্য কেন্দ্র একটি অধ্যাদেশ এনেছে। এই অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) স্বৈরাচারী।' কেজরিওয়ালের অভিযোগ, এই অর্ডিন্যান্স বলছে যে দিল্লিতে গণতন্ত্র থাকবে না। সেখানে মোদীজির একনায়কত্ব চলবে। সেজন্যই মোদী সরকার কার্যত দিল্লির গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচিত সরকারের মাথায় লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে বসিয়ে দিয়েছে। আর, এই লেফটেন্যান্ট গভর্নর হলেন কেন্দ্র দ্বারা নিযুক্ত এবং নিয়ন্ত্রিত।
কেজরিওয়ালের অভিযোগ
কেজরিওয়ালের অভিযোগ, 'মানুষ কাকে বেছে নেবে, তাতে মোদী সরকারের কিছু যায় আসে না। তিনি শুধু ঠিক করেছেন যে দিল্লি চালাবেন। আর, এই ঘটনা শুধু দিল্লিতেই ঘটছে না। দেশের বাকি অংশেও মোদী সরকার একই ধরনের অধ্যাদেশ আনার পরিকল্পনা করছে। দিল্লির মত এমন স্বৈরাচারী অধ্যাদেশ এরপর মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশেও আনা হবে।'
আপের গঠন
যেখানে কেজরিওয়াল এই সব বললেন, সেই রামলীলা ময়দানেই তৈরি হয়েছিল আম আদমি পার্টি। এই ময়দানে কেজরিওয়ালের নেতৃত্বাধীন তিনটি আপ সরকার শপথ গ্রহণ করেছে। এই রামলীলা ময়দানেই ২০১২ সালের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সমাজকর্মী আন্না হাজারে। তাঁর নেতৃত্বে সেই আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে, আপ বা কেজরিওয়ালও নয়। তারও অনেক আগে থেকে রামলীলা ময়দান ভারতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। সবমিলিয়ে বলতে গেলে বহু দশক ধরেই ভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট হিসেবে রামলীলা ময়দানের এক রামলীলা ময়দানের একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস রয়েছে, যা বহু দশক ধরে রাজনৈতিক মন্থনের দৃশ্য।
আরও পড়ুন- কেটেছে ৯ বছর, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় কতটা সফল মোদী সরকার?
পুকুর ভরিয়ে তৈরি
ব্রিটিশ আমলে ১৯৩০ সালে একটি পুকুর ভরাট করে রামলীলা ময়দান তৈরি হয়েছিল। তার আগে, মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের জমানায় এই পুকুরের কাছে রামলীলার আয়োজন করা হত। সেই থেকে জায়গাটার নাম রামলীলা ময়দান। ১৯৭৫ সালে এই রামলীলা ময়দানেই জয়প্রকাশ নারায়ণ বিশাল সমাবেশের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ হয়েছিল। জরুরি অবস্থার পরবর্তী সময়ে এই ময়দানেই কংগ্রেস বিরোধী নেতারা জনতা পার্টি গঠনের জন্য সমাবেশ করেছিলেন।