চলতি মাসের গোড়ার দিকে ব্রিটেনের দ্য টেলিগ্রাফ প্রকাশিত একটি সংবাদের জেরে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ব্রিটেনের ওই সংবাদপত্র অভিযোগ করেছে যে দরিদ্র মিয়ানমারের গ্রামবাসীরা এসে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালের ধনী রোগীদের কিডনি দিচ্ছে। এই ঘটনায় সরকারের তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার কারণ, দরিদ্র এবং দুর্বল দাতাদের সম্ভাব্য শোষণ থেকে রক্ষা করা। ভারতে, অর্থের বিনিময়ে অঙ্গদান এবং অঙ্গপ্রতিস্থাপন নিষিদ্ধ।
Advertisment
হাসপাতালের বক্তব্য অ্যাপোলো দাবি করেছে, যতগুলো প্রতিস্থাপনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠছে, সবগুলোই হয়েছে অনুমোদন কমিটি এবং মায়ানমার দূতাবাস থেকে দাতাদের আত্মীয় হিসাবে প্রত্যয়িত শংসাপত্র পাওয়ার পরেই। কিডনি কেলেঙ্কারির অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ ওঠে যে, দাতা ও গ্রহীতাকে জাল নথির বিনিময়ে আত্মীয় বলে দেখানো হয়।
ভারতে অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন ভারতে অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন অনুযায়ী, মৃত ব্যক্তিদের দান করা অঙ্গ তাঁদের জীবিত আত্মীয়দের শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়। মানব অঙ্গ ও টিস্যু প্রতিস্থাপন আইন ১৯৯৪ অনুযায়ী, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিতামাতা, ভাইবোন, সন্তান, স্ত্রী, দাদা-দাদি, নাতি-নাতনিদের মত নিকটাত্মীয়দের থেকে জীবিত ব্যক্তি কিডনি পান। আবার, দূরবর্তী আত্মীয়, শ্বশুর বা দীর্ঘ সময়ের বন্ধুদের থেকে পরোপকারী দানকে অতিরিক্ত যাচাই-বাছাই করার পরে অনুমতি দেওয়া হয়। যাতে স্পষ্ট করার চেষ্টা হয়, এতে কোনও আর্থিক বিনিময় নেই। শুধু তাই নয়, ভারতীয় বা বিদেশিদের জীবিত নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে অঙ্গ গ্রহণের জন্য উভয়ের পরিচয় প্রতিষ্ঠার নথি, পারিবারিক সম্পর্কের নথি, দাতা-গ্রহীতার সম্পর্কের নথি, দাতার আর্থিক অবস্থানের নথি জমা দিতে হয়।
বেআইনি লেনদেন রুখতে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে দাতা এবং প্রাপকদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। বেআইনি লেনদেন থেকে রক্ষা করার জন্য এই সব ক্ষেত্রে একটি বহিরাগত কমিটি নথি-সহ যাবতীয় বিষয়গুলো পরীক্ষা করে। ভারতে নিয়ম অনুযায়ী, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য অর্থ প্রদান বা অর্থ প্রদানের জন্য অঙ্গ সরবরাহের প্রস্তাব, এই ধরনের ব্যবস্থার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া, ঘোষণা করা, অঙ্গ সরবরাহের জন্য একজন ব্যক্তির সন্ধান করা, মিথ্যা নথি তৈরিতে সহায়তা করার জেরে ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। আর, ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।