Ring of Fire: 'রিং অফ ফায়ার'- নামটা শুনলেই চমকে ওঠেন ভূবিজ্ঞানীরা, কী এই আগুনের আংটি?
Taiwan is prone to earthquakes: তাইওয়ান বরাবরের ভূমিকম্প প্রবণ। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের, 'রিং অফ ফায়ার'-এর অংশ। বিশ্বের ৯০% ভূমিকম্প হয় 'রিং অফ ফায়ার' অঞ্চলে।
Taiwan is prone to earthquakes: তাইওয়ান বরাবরের ভূমিকম্প প্রবণ। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের, 'রিং অফ ফায়ার'-এর অংশ। বিশ্বের ৯০% ভূমিকম্প হয় 'রিং অফ ফায়ার' অঞ্চলে।
Ring of Fire-Taiwan: তাইওয়ানে ভূমিকম্পে এভাবেই হেলে গিয়েছে বহুতল। (ছবি- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)
Massive earthquake hits Taiwan: বুধবার সকালে ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড়মাপের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে তাইওয়ানে। মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। আহত হয়েছেন অন্তত ৮০০ জন। তাইওয়ানের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭.২। অবশ্য, মার্কিন ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, কম্পনের মাত্রা ছিল একটু বেশি, ৭.৪।
Advertisment
মার্কিন সংস্থা যা জানিয়েছে ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পাশাপাশি একাধিকবার আফটারশকও অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৬.৫। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৮০ সাল থেকে তাইওয়ান দ্বীপ ও তার আশপাশের জলরাশিতে ২০০০-এরও বেশিবার ৪.০ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ইউএসজিএস অনুযায়ী, এই কম্পনের মধ্যে ১০০ বারেরও বেশি অনুভূত হয়েছে ৫.৫ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল পূর্ব তাইওয়ানে অবস্থিত হুয়ালিয়েন প্রদেশের মাত্র ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। এমনিতে তাইওয়ান বরাবরের ভূমিকম্প প্রবণ। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের, 'রিং অফ ফায়ার'-এর অংশ। বিশ্বের ৯০% ভূমিকম্প হয় 'রিং অফ ফায়ার' অঞ্চলে। প্রশ্ন হল, কী এই 'রিং অফ ফায়ার'? আর এখানে এত বেশি ভূমিকম্প হয়ই বা কেন?
Advertisment
'প্যাসিফিক রিং অফ ফায়ার'-এর মানচিত্র। (ছবি সূত্র: ইউএসজিএস)
কী এই 'রিং অফ ফায়ার'? 'রিং অফ ফায়ার' বা আগুনের আংটি হল, শত শত আগ্নেয়গিরি এবং ভূমিকম্পপ্রবণ স্থানগুলোর একটি রেখা। এই কাল্পনিক রেখা রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগর বরাবর। এটি একটি অর্ধবৃত্ত বা ঘোড়ার জুতোর আকারের রেখা। যা প্রায় ৪০,২৫০ কিলোমিটার প্রসারিত। 'রিং অফ ফায়ার'- ইউরেশিয়ান, উত্তর আমেরিকান, জুয়ান ডি ফুকা, কোকোস, ক্যারিবিয়ান, নাজকা, অ্যান্টার্কটিক, ভারতীয়, অস্ট্রেলিয়ান, ফিলিপাইনস ও অন্যান্য ছোট ভূস্তরীয় প্লেট-সহ অসংখ্য টেকটোনিক যুগের প্লেটের মিলন পয়েন্টের এলাকা বা স্থান। টেকটোনিক প্লেটের মিলন পয়েন্টগুলো প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমস্ত বড় প্লেটকে ঘিরে আছে। এই, 'রিং অফ ফায়ার' মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, জাপান, কানাডা, গুয়াতেমালা, রাশিয়া, চিলি, পেরু এবং ফিলিপাইনস-সহ আরও ১৫টি দেশের মধ্য দিয়ে গিয়েছে।
ভূমিকম্পের সঙ্গে 'রিং অফ ফায়ার'-এর সম্পর্ক কী? টেকটোনিক প্লেটগুলোর একটি অপরটির ওপরে বা নীচে ক্রমাগত পিছলে যায়। পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তার ফলেই বারবার ভূমিকম্প হয়। এই ভূস্তরীয় প্লেটের প্রান্ত বা ধারগুলো বেশ রুক্ষ। সেই রুক্ষ ধার যখন পরস্পরের সঙ্গে আটকে যায়, তখন বাকি প্লেটগুলো নড়ে ওঠে। সরে যায়। তাতেও ভূমিকম্প হয়। এর মধ্যে তাইওয়ানে, দুটি টেকটোনিক প্লেট- ফিলিপাইনস সি প্লেট এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কার জন্য ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
'রিং অফ ফায়ার'-এ এত আগ্নেয়গিরি কেন? 'রিং অফ ফায়ার'-অঞ্চলে এত আগ্নেয়গিরির অস্তিত্ব কিন্তু টেকটোনিক প্লেট নড়ে যাওয়ার কারণেই। যখন দুটি প্লেটের একটির সঙ্গে অপরটি ধাক্কা লেগে সরে যায়, তখন একটি গভীর খাদ তৈরি হয়। সেই খাদ থেকেই লাভা বেরিয়ে আসে। যা ছড়িয়ে পড়ে। আর, আগ্নেয়গিরি গঠন করে। 'রিং অফ ফায়ার'-এ তাই আগ্নেয়গিরির সংখ্যাও অসংখ্য।