পলাতক গয়না ব্যবসায়ী মেহুল চোকসির প্রত্যর্পণ মামলা এখন ডোমিনিকা কোর্টে বিচারাধীন। তাঁর আইনজীবী যেনতেন প্রকারে এই প্রত্যর্পণ আটকাতে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। এদিকে, বিশেষ চার্টার্ড বিমানে দিল্লি থেকে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা গিয়েছে ডমিনিকা রিপাবলিকে। তাঁদের সফরসঙ্গী হয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। চোকসির বিরুদ্ধে ভারতে চলা মামলা এবং অভিযোগের প্রতিলিপি তাঁরা দাখিল করেছেন আদালতে। বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা চান যেভাবেই হোক ১৩ হাজার কোটি পিএনবি ব্যাঙ্ক আর্থিক তছরূপের মামলায় অভিযুক্ত মেহুলকে দেশে ফেরাতে।
এই টানাপোড়েনে চোকসির আইনজীবী ডমিনিকার সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেন, ‘তাঁর মক্কেল অ্যান্টিগা থেকে পালিয়ে ডমিনিকা আসেনি। বরং তাঁকে মধুচক্রে ফাঁসিয়ে অপরহরণ করে ডমিনিকা আনা হয়েছে।‘ তাঁর সওয়াল, ‘গত ৬ মাস ধরে এক বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন মেহুল। সেই মহিলা তাঁকে ২৩ মে নিজের আবাসনে ডাকেন। সেখান থেকেই কয়েকজন তাঁকে মারধর করে অপরহরণ করে। এবং জলপথে ডমিনিকা নিয়ে আসে।‘ আর যেহেতু মেহুল চোকসি এখন ভারতীয় নাগরিক নয়। তাই সেই দেশের আইনে সে অভিযুক্ত নয়। ফলে তাঁর প্রত্যর্পণ হতে পারে না।এমন দাবিও ডমিনিকা সুপ্রিম কোর্টে করেছেন মেহুলের আইনজীবী।
এদিকে, আবার ২০১৮ থেকে যে দেশের নাগরিক চোকসি, সেই অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টিন ব্রাউন জানিয়েছেন, তাঁর দেশে কোনও পলাতক অভিযুক্তের জায়গা নেই। ভারত সহজেই ডমিনিকা থেকে মেহুল চোকসিকে প্রত্যর্পণ করতে পারে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, ‘মেহুল চোকসি ভারতীয় পাসপোর্ট প্রত্যাখান করলেও সেটা গ্রহণ করেনি বিদেশ মন্ত্রক। সেই সংক্রান্ত কোনও নোটিফিকেশন জারি হয়নি সরকারি পোর্টালে।‘ তাদের দাবি, ‘ইন্টারপোলে ওয়ান্টেড তালিকায় নাম আছে চোকসির। রয়েছে রেড কর্নার নোটিশ। ফলে তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দিতেই হবে।‘
তবে ভারতের নাগরিকত্ব আইনে স্পষ্ট বলা, ‘ডুয়াল নাগরিকত্ব এই দেশে স্বীকৃতি নয়। একমাত্র যদি দুই রাষ্ট্র পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে না লিপ্ত থাকে।‘ ভারতের নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫-র ৯ ধারায় এই নিয়ম স্পষ্ট করে বলা।
এবার তাই ভারতীয় দলকে ডমিনিকান আদালতকে বোঝাতে হবে। কেন চোকসির প্রত্যর্পণ প্রয়োজন? ঠিক কী অপরাধে সে অভিযুক্ত? তাহলেই ডমিনিকা রিপাবলিক থেকে এই গয়না ব্যবসায়ীর প্রত্যর্পণ সম্ভব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন