কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি সোমবার (১০ এপ্রিল) নির্মাণাধীন জোজিলা টানেল পরিদর্শন করেছেন। এই টানেল লাদাখ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে সবরকম আবহাওয়ায় সংযোগ বজায় রাখবে।
গড়কড়ির পরিদর্শন
গডকড়ি, জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এবং সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক সম্পর্কিত সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন। এই অঞ্চলে যোগাযোগ উন্নত করার জন্য গৃহীত প্রকল্পের অংশ হিসেবে ২৫,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত জোজিলা টানেলের ৩৮ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। যা ভারতের দীর্ঘতম টানেল বলে দাবি করেছে প্রশাসন।
জোজিলা টানেল কী?
জোজিলা টানেলটি হল ভারতের দীর্ঘতম রাস্তার টানেল। এটি এশিয়ার দীর্ঘতম দ্বিমুখী টানেল বলে দাবি করছে প্রশাসন। এর দৈর্ঘ্য ১৪.১৫ কিলোমিটার। সোনমার্গ এবং কার্গিলের মধ্যে সংযোগকারী টানেল তৈরি করা হবে। এর মধ্যে হাইওয়ের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের ব্যাপারও জড়িত। একটি ৩ কিমি রাস্তা সম্প্রসারিত করা হবে। বেশ কিছু রাস্তার সংস্কার ঘটানো হবে। সবমিলিয়ে জাতীয় সড়ক এনএইচ ১-এ দুটি টুইন-টিউব টানেল, পাঁচটি সেতু এবং দুটি স্নো গ্যালারি থাকবে। সব মিলিয়ে ধরলে ৩৩ কিমি রাস্তায় কাজ হবে। দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের মধ্যে এই কাজ চলবে।
টানেলের দরকার পড়ল কেন?
বর্তমানে, লাদাখের বৃহত্তম শহর শ্রীনগর এবং লেহ-এর মধ্যে যাতায়াতের জন্য সব ঠিকঠাক থাকলেও ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। রাস্তার অবস্থাও খুব খারাপ। জোজিলা গিরিপথ হল একটি উঁচু পার্বত্য গিরিপথ, যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। প্রচণ্ড শীতে তুষারধস, ভূমিধস এবং পিচ্ছিল রাস্তার ভয়ে এই রাস্তা বন্ধ থাকে। জোজিলা পাসের বাইরের এলাকাগুলো অন্তত পাঁচ মাসের জন্য এই সময় দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। জোজিলা পাস বন্ধ থাকায়, সেই সময় বিমান সংযোগই হয়ে ওঠে যাতায়াতের একমাত্র বিকল্প। শীতকালে এখানে বিমান ভাড়া ৪০ হাজার টাকার ওপরে উঠে যায়। যার অর্থ, ভাড়া এতটাই বেশি হয়ে যায় যে এই টাকা দিয়ে দিল্লি থেকে বিমানে লন্ডন পর্যন্ত চলে যাওয়া যায়।
আরও পড়ুন- মোদী সরকারের সঙ্গে অম্ল-মধুর সম্পর্ক তাঁর, কে এই জর্জ সোরোস?
নির্মীয়মাণ জোজিলা টানেল লাদাখ এবং দেশের বাকি অংশের মধ্যে দীর্ঘদিনের কাম্য সংযোগ স্থাপন করবে। এই অত্যাবশ্যকীয় গুরুত্বপূর্ণ কৌশলের ফলে সৈন্য এবং অন্যান্য সরবরাহের গতি ত্বরান্বিত হবে। এর ফলে সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি এই অঞ্চলে বসবাসকারী এবং কর্মরত সাধারণ নাগরিকও উপকৃত হবেন।