সুড়ঙ্গ জয়! ৪০০ ঘন্টা শেষে স্বস্তির হাসি, কর্মকাণ্ডকে কুর্নিশ দেশবাসীর। মুক্তি পেয়ে আকাশ দেখে উচ্ছ্বসিত শ্রমিকরা। টানা ৪০০ ঘন্টা সুড়ঙ্গে আটকে থেকেও পরিবারের চিন্তায় দিন কেটেছে তাদের। অদম্য জীবন শক্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন গোটা দেশের মানুষ। উদ্ধার অভিযানে রাজ্য এবং কেন্দ্রের এক ডজন সংস্থা, বিশেষজ্ঞদের প্যানেল। সেনাবাহিনীর কাঁধে দায়িত্ব তুলে দেওয়াতেই অবশেষে আসে সাফল্য। কীভাবে কেটেছে দমবন্ধ পরিবেশে টানা ৪০০ ঘন্টা?
ফোনে লুডু খেলা, সাপ্লাই করা জলে কোন মতে হাত-মুখ ধুয়ে একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া। যতটা সম্ভব নিজেদের মানসিক ভাবে হালকা রাখতে চেয়েছিলেন উত্তরকাশী টানেলের মধ্যে দীর্ঘ সময় কাটানো শ্রমিকরা। ঝাড়খণ্ডের চামরা ওঁরাও হাসপাতাল যাওয়ার সময় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে সেই ভয়ঙ্কর মুহূর্তের স্মৃতি আওড়ান। তিনি বলেন, "তাজা বাতাসের গন্ধ জীবনের এক অদ্ভুদ তৃপ্তি। তাকে বাঁচানোর কৃতিত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা যারা ১৭ দিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের এবং সেই সঙ্গে সর্বশক্তিমান ইশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই"।
তিনি আরও বলেন, “আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছি এবং এটি আমাদের শক্তি দিয়েছে। আমরা এটাও বিশ্বাস করেছিলাম যে যেহেতু ৪১ জন আটকে আছেন তাই আমাদের উদ্ধার নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলাপ-আলোচনা নিশ্চয় চলবে। আমি একবার আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাই। চরম উৎকণ্ঠায় ওর এই কটা দিন কেটেছে। আমিই পরিবারের এক মাত্র উপর্জনকারী। তিন সন্তান খুন্তিতে তার জন্য অপেক্ষা করছে। মাসে ১৮ হাজার টাকা উপার্জন করেই সংসার চালান তিনি। কাজে ফিরে আসবেন কিনা তা কেবল "সময়ই বলবে"।
ওঁরাও স্মৃতি আওড়ে বলেন, " ১২ নভেম্বর ভোরে কাজ করছিলেন যখন তিনি একটি বিকট শব্দ শুনতে পান এবং ধ্বংসাবশেষ পড়তে দেখেন। “আমি আমার জীবন বাঁচানোর জন্য দৌড়েছিলাম কিন্তু ভুল দিকে গিয়ে আটকে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা সাহায্যের জন্য নীরবে প্রার্থনা করেছি। আমি কখনই আশা হারাইনি,”। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর প্রথম প্রশাসনের তরফে পাঠানো খাবার খেয়ে যেন দেখে প্রাণ ফিরেছিল ৪১ শ্রমিকের। নেটওয়ার্ক না থাকায় আমরা কাউকে কল করতে পারিনি। আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি এবং একে অপরকে আরও কাছ থেকে জেনেছি এই কদিনে"। তিনি আরও বলেন, তিনি "শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ", যদিও তিনি "বাড়িতে পৌঁছে সিদ্ধান্ত নেবেন" তিনি পরবর্তী কী করবেন বলেও জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডের আরেকজন কর্মী ২৬ বছর বয়সী বিজয় হোরোর পরিবার নিশ্চিত আর রাজ্যের বাইরে কাজে ফিরতে চায় না বিজয়। ভাই রবিন বলেন, “বিজয় অ্যাম্বুলেন্স থেকে আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। আমাদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য বারে বারে বলেছিল। আমাদের বিজয় জানিয়েছে, সে ভাল আছে। আমরা দুজনেই শিক্ষিত। আমরা ঝাড়খণ্ডে কাজের চেষ্টা করব,।”