গাড়ির ধাক্কায় তরুণীর মৃত্যু ঘিরে উত্তাল দিল্লি। এই বর্বর ঘটনার নিন্দায় মুখ খুলেছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনা। তিনি এক টুইট বার্তায় লিখেছেন 'বর্বরোচিত ঘটনা! লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেছে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও এই ঘটনাকে লজ্জাজনক ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন। দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল এই ঘটনায় দিল্লি পুলিশকে সমন জারি করেছেন।
নববর্ষের উৎসবের মাঝে এক নির্মম দুর্ঘটনা। দিল্লির রাস্তায় এক মহিলার নৃশংস মৃত্যু। শনিবার গভীর রাতে স্কুটি নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই মহিলা। একটি গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে স্কুটির। দুর্ঘটনার পর মহিলার পোশাক জড়িয়ে যায় গাড়িটির চাকার সঙ্গে। কয়েক কিলোমিটার এভাবেই মহিলাটিকে টানতে টানতে নিয়ে যায় ওই গাড়ি। যার ফলে তাঁর শরীর থেকে জামা-কাপড় ছিঁড়তে থাকে। দুর্ঘটনাগ্রস্থ স্থানের বেশ অনেকটা দূর থেকে মহিলার নগ্ন দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গাড়িতে সেই সময় পাঁচজন আরোহী ছিলেন। পাঁচ আরোহীকেই আটক করেছে পুলিশ।
ময়নাতদন্তে নিহত তরুণীর মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। অভিযোগ, স্কুটির সঙ্গে ধাক্কা লাগার পরেও ওই তরুণীকে কোনও রকম সাহায্য না করেই প্রায় চার কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে দিয়ে যায় অভিযুক্তরা। দুর্ঘটনার কারণ নিয়েও উঠছে একাধিক প্রশ্ন। কানঝাওয়ালা-সুলতানপুরীর অই ঘটনায় তোলপাড় রাজধানী। দিল্লির এল জিভি কে সাক্সেনা টুইটে তিনি লিখেছেন, "কানঝাওলা-সুলতানপুরীর অমানবিক অপরাধের ঘটনায় লজ্জায় মাথা ঝুঁকে গিয়েছে। অভিযুক্তদের অসংবেদনশীল ব্যবহারে মর্মাহত। দিল্লির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, মহিলার মৃত্যুর একজন প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন যে তিনি একটি পিসিআর ভ্যানে পুলিশের কাছ থেকে সাহায্য চাইলেও, পুলিশ কর্মীরা এগিয়ে আসেননি। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। প্রত্যক্ষদর্শী দীপক জানান, গাড়িটি স্বাভাবিক গতিতে চলছিল দীপকের দাবি, তিনি বেগমপুর পর্যন্ত গাড়িটি অনুসরণ করেন। ভোর ৫টা পর্যন্ত পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেও দাবি দীপকের। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ২৭৯ (রাশ ড্রাইভিং) এবং ৩০৪-এ (অবহেলায় মৃত্যু ঘটানো) এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধৃততরা হলেন দীপক খান্না (২৬), অমিত খান্না (২৫), কৃষ্ণা (২৭), মিঠুন (২৬) এবং মনোজ মিত্তাল(২৮) । সূত্রের দাবি অভিযুক্তরা জানতেন না যে ‘মহিলার দেহটি’ তাদের গাড়ির সঙ্গে আটকে রয়েছে। পরে বিষয়টি জানতে পেরে তারা ভয় পেয়ে গাড়ি থেকে দেহটি সরিয়ে পালিয়ে যায়।