বরানগর কুঠিঘাটে কৃপাময়ী এবং ব্রহ্মময়ী কালীর মতই সিদ্ধেশ্বরী কালীও ভক্তদের কাছে অতি পরিচিত নাম। জয় মিত্র কালীবাড়ির সামান্য দক্ষিণ-পূর্বে কুঠিঘাট অটোস্ট্যান্ডের পাশে বৈকে মৈত্র রোড। সেখানেই রয়েছে সিদ্ধেশ্বরী কালীর দালান মন্দির। দালানটি দক্ষিণমুখী এবং চওড়া। যার গর্ভগৃহে রয়েছে কালীমন্দির। যা দারুকাঠে তৈরি।
কথিত আছে, শ্রীরামকৃষ্ণ বারকয়েক এই মন্দিরে এসেছিলেন। একবার কেশবচন্দ্র অসুস্থ হলে রামকৃষ্ণ তাঁর মঙ্গলকামনায় ডাব-চিনি মানত করেছিলেন। আর, সেরে ওঠার পর সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরে এসে ডাব-চিনি সহযোগে দেবীকে পুজো দেন। এখনও বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীরা তাঁদের কেউ অসুস্থ হলে ডাব-চিনি মানত করেন। আর, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরে এসে পুজো দেন।
কথিত আছে, প্রায় ২০০ বছর আগে রটন্তী কালীপুজোর দিন এই মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্থানীয় জমিদার জয়ন্তনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এখানে নিত্যপুজো চলছে। সঙ্গে সাড়ম্বরে রটন্তী কালীপুজোতে বাৎসরিক কালীপুজো, দীপাবলিতে পুজো এবং ফলহারিণী কালীপুজো আয়োজিত হয়।
আরও পড়ুন- দক্ষিণেশ্বরের বিগ্রহ যিনি বানিয়েছিলেন, সেই শিল্পীই গড়েছিলেন ব্রহ্মময়ী মন্দিরের প্রতিমা
এর পাশাপাশি, চৈত্র, পৌষ এবং ভাদ্র মাসে ধান্যলক্ষ্মীর পুজোও হয় এই মন্দিরে। হয় দেবীর বিশেষ পুজো, ভোগ এবং আরতি। প্রতিটি উৎসব উপলক্ষেই মন্দিরে ভক্তরা ভিড় করেন। আশপাশের ভক্তরা তো আছেনই। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা। এই মন্দিরে শিবেরও নিত্যপুজো হয়। মন্দিরেরই একটি ঘরে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। সাদা রঙের ওই শিবলিঙ্গকে সিদ্ধেশ্বর রূপে পুজো করা হয়।
ভক্তদের দাবি, এই মন্দির কুঠিঘাটের কৃপাময়ী এবং ব্রহ্মময়ী কালীমন্দিরের চেয়েও পুরোনো। অত্যন্ত জাগ্রত বলেই তাঁদের বিশ্বাস। মানত করলে, দেবী সেই মনস্কামনা পূরণ করেন বলেই বিশ্বাস ভক্তদের। মনস্কামনায় সিদ্ধি দান করেন বা পূরণ করেন বলেই এখানে দেবীর নাম সিদ্ধেশ্বরী। এই মন্দিরে যেতে হলে হাওড়া, শিয়ালদহ, শ্যামবাজার থেকে বিটি রোডের বাস ধরে সিঁথি মোড়ে নামতে হবে। সেখান থেকে কুঠিঘাটের অটোয় চেপে কুঠিঘাট অটো স্ট্যান্ডে নামতে হবে। কুঠিঘাট অটো স্ট্যান্ডেই রয়েছে এই মন্দির।