বায়ুদূষণ বাড়ছে। তা যে কত ক্ষতিকর, তা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। ক্যানসার, অকাল মৃত্যু, হৃদরোগের হাজারো সমস্যা-সহ বিভিন্ন রোগের কারণ এই বায়ুদূষণ। এর আগে এক আলোচনায় indianexpress.com-কে দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থের অ্যাপোলো হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যান্ড স্লিপ মেডিসিন তথা পালমোনোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এমএস কানওয়ার বলেছিলেন, 'বায়ুকণার আকার সরাসরি স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টির সম্ভাবনার সঙ্গে যুক্ত। সূক্ষ্ম কণা (PM2.5) সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে। কারণ তারা ফুসফুসের গভীরে এমনকী রক্তপ্রবাহে পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে।'
আরবান প্ল্যাটারের পুষ্টিবিদ রিমা কিঞ্জালকার আবার indianexpress.com-কে বলেছেন, 'বায়ুদূষণের ফলে মানুষের কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহ তৈরি হয়। যা ক্যানসার এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের পথে কোনও ব্যক্তিকে ঠেলে দেয়।' সাধারণত, বাইরে বের হওয়ার সময় এই জন্যই ভালো মানের মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে শুধু মাস্ক দিয়ে হবে না। খাদ্যের দিকেও নজর দিতেও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে এর ফলে অনাক্রম্যতা বাড়ে। বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়ে।
সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ পূজা মাখিজা একথা মাথায় রেখেই ইনস্টাগ্রামে বেশ কিছু খাবারের কথা শেয়ার করেছেন। এই সব খাবার বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। তিনি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে নেটিজেনদের উদ্দেশ্যে স্পষ্টই লিখেছেন যে, 'বেশ কয়েকটি খাবার রয়েছে, যা আপনাকে আপনার শরীর ডিটক্স করতে এবং ক্রমবর্ধমান AQI দ্বারা তৈরি ক্ষতি রোধ করতে সহায়তা করবে।'
আরও পড়ুন- কেন্দ্রের পর আদালতের সঙ্গে সম্মুখসমরে যোগী, ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে হাঁটছেন নিজের পথে
ব্রোকলি: পুষ্টিবিদদের মতে এই তালিকার প্রথম খাবার হল ব্রোকলি। এছাড়াও আছে অন্যান্য ক্রুসিফেরাস সবজি, যেমন ফুলকপি, বোক চয় এবং বাঁধাকপি। কারণ, এতে সালফোরাফেন থাকে। যা শরীর থেকে বেনজিন দূর করতে সাহায্য করে। বেনজিন সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণকারী। এছাড়াও, কপিজাতীয় খাবার ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদ রিমা কিঞ্জালকার বলেন, 'ব্রকলি স্প্রাউটে সালফোরাফেন উপাদান কাঁচা ব্রোকলির ফুলের চেয়ে ২৫ গুণ বেশি। বিদেশে হওয়া একটি সমীক্ষায়, ব্রকলি স্প্রাউট থেকে তৈরি একটি পানীয় কয়েক জনকে দেওয়া হয়েছিল। যাঁরা সেটা পান করেছেন, দেখা গেছে যে তাঁদের শরীর থেকে যাঁরা ওই পানীয় নেননি, তাঁদের চেয়ে ৬০% বা তার বেশি বেনজিন নিঃসৃত হয়েছে।'
শণের বীজ: এগুলোতে ফাইটোয়েস্ট্রোজেন যৌগের পাশাপাশি ওমেগা-৩ বেশি থাকে। শণের বীজ হাঁপানি রোগীদের অ্যালার্জি কমাতে এবং শরীরে ধোঁয়াশার প্রভাব কমাতে বেশ কার্যকরী বলেই বেশ কয়েকটি গবেষণায় জানা গিয়েছে। এই জন্য প্রতিদিন দুই টেবিল চামচ ভেজানো ফ্ল্যাক্সবিড খেতে পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দিচ্ছেন। রিমা কিঞ্জালকারের মতে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি শক্তিশালী ধোঁয়া-হ্রাসকারী প্রভাব রয়েছে। বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করার পাশাপাশি যা হৃদরোগ থেকেও রক্ষা করে।
আমলা: পুষ্টিবিদ রিমা কিঞ্জালকার বলছেন, 'আমলা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। যা পরিবেশগত বিষাক্ত পদার্থ থেকে হওয়া কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিন আপনার সবজির রসে একটি আমলা রাখুন।'
কারকিউমিন: এটি হলুদের সক্রিয় উপাদান। রিমা বলেন, 'যেহেতু কারকিউমিন প্রদাহ জ্বালাপোড়া রুখতে সাহায্য করে, তাই এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধেও সাহায্য করে। এই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বিভিন্ন বায়ু দূষণকারী পদার্থ শরীরে তৈরি করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের পাতে হলুদ রাখা উচিত।'
Read full story in English