শনিবার উর্দিধারীদের বেনজির আক্রমণ করেছেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। যা নিয়েই শোরগোল পড়েছে। এরপর রবিবার নিজেই সেই প্রসঙ্গে তুললেন পোড় খাওয়া এই বাম রাজনীতিবিদ। দুঃখপ্রকাশও করলেও। কিন্তু, তারপরও ঘুরিয়ে পুলিশকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না। বললেন যে, 'পুলিশের সঙ্গে কুকুরের তুলনা করে পুলিশের সম্মান গিয়েছে, নাকি কুকুরের সম্মান গিয়েছে তা মানুষ বুঝবে।'
বগটুই গণহত্যা, হাঁসখালি ধর্ষণ ও মৃত্যু কাণ্ডের প্রতিবাদ এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার রামপুরহাটে দলীয় মিছিলে হাঁটেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মিছিল শেষে রামপুরহাটের সভায় সেলিম বলেন, 'তৃণমূলের বন্ধুরা কেউ কেউ বলছেন আপনি পুলিশকে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করলেন? ইসস! আমি সাধারণত উল্টোপাল্টা বলি না। বললে দুঃখ প্রকাশ করি। আমি আজও দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি কুকুরের অপমান করেছি। পুলিশের সঙ্গে তুলনা করে এতে পুলিশের সম্মান গিয়েছে না কুকুরের সম্মান গিয়েছে তা মানুষ বুঝবে।'
কেন এমন বললেন তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেলিম। বলেছেন, 'কারণ কুকুরকে প্রশিক্ষণ দিলে, বিশ্বাস করলে ও ঠিক খুনিকে গিয়ে ধরবে। কিন্তু ওই বগটুই গ্রামে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়ে পুলিশ সুপারকে বলছেন, এই কেসটা সাজাতে হবে। অনুব্রত মণ্ডলও বলছেন, ওই রকমই কেসটা সাজাতে হবে। কোনও কুকুর কি জিজ্ঞাসা করবে? কোনও কুকুর ওই কথা শুনবে? প্রভূক্ত হলেও কুকুর ঠিক কাজ করবে।' প্রসঙ্গত, শনিবার বিষ্ণুপুরে গিয়েও এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন সেলিম। তার জের টেনেই রবিবার
শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দলীয় মিটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন সেলিম। সেখানেই তিনি পুলিশকে নিশানা করেন। উর্দিধারীদের সহ্গে তপলনা টানেন কুকুরের। সিপিএম রাজ্য সম্পরাদক বলেছিলেন যে, 'পুলিশকে কেন মাইনে দিয়ে রাখা হয়েছে? কুকুর পুষলেই তো হয়। শুঁকে শুঁকে বলে দিতে পারে। কয়েকটা এসপিকে সরিয়ে কয়েকটা কুকুর এনে রেখে দিলেই হয়ে যায়।'
এক মাসের বেশি সময় আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরে কোম্পানি পুকুরে থেকে উদ্ধার হয় সিপিআইএম কর্মী বিদ্যুৎ মণ্ডলের দেহ। এক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ওঠে। যদিও দোষীরা কিন্তু এখনও অধরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বলতে গিয়ে উর্দিধারীদের আক্রমণ করেন সেলিম। এরপরই শোরগোল পড়ে যায়।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদকক মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'এটা ওঁদের জেনেটিক সমস্যা। যাঁরা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে তোজোর কুকুর বলতেন, তাঁদের তো এই সংস্কৃতি-ই হবেই। ওঁদের জমানায় পুলিশকে দলদাসে পরিণত হয়েছিল। সেলিম যা করলেন, তাতে আমাদের উচিত দলমত নির্বিশেষে সবার নিন্দা করা। কারণ আমাদের ঘরের ছেলেরা পুলিশে চাকরি করেন। আশা করব সভায় উপস্থিক সুজন চক্রবর্তীও সেলিমের মন্তব্যের প্রতিবাদ করবেন।'
অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস নজরুল ইসলাম সেলিমের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেছেন, 'ভেবেচিন্তে মন্তব্য করলে ভালো হত। পুলিশে সব লোক অসৎ হয়ে যায়নি। সক তুষ্পদ প্রাণীর নাম করলেন, সেরকম হয়ে যায়নি। ব্যতিক্রমী পুলিস অফিসারও আছেন।'