পাখির চোখ ২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। ঠিক তার আগেই মোদী সরকারের বিরাট চমক। গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ২০০ টাকা কমানোর ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে, উজ্জ্বলা প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা ৪০০টাকা ভর্তুকি পাবেন। প্রায় প্রতিটি বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন। এই ছাড়ের মাধ্যমে কেন্দ্র আসসন্ন নির্বাচনে বড় চমক দিয়েছে। বহুদিন ধরেই উজ্জ্বলা প্রকল্পে সিলিন্ডারের দাম নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করছিল বিরোধীরা। লোকসভা ভোটের মাত্র কয়েক মাস আগে সিলিন্ডারের দাম কমিয়ে ‘রাজনৈতিক ফায়দা’ লাভের চেষ্টায় মরিয়ে কেন্দ্র সরকার।
সিলিন্ডারের দাম নিয়ে মোদী সরকারকে অনবরত নিশানা করেছে বিরোধীরা। এমনকি কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের সময়, সিলিন্ডারের দাম একটি প্রধান ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় এবং কংগ্রেস নির্বাচনে বড় ব্যবধানে তার জয় নিশ্চিত করে। শুধু তাই নয়, আসন্ন রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড় নির্বাচনে রান্নার গ্যাসের দামও এক বড় ইস্যু হয়ে উঠছে। রাহুল গান্ধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলেই সিলিন্ডারের দাম নিয়ে মোদী সরকারকে বারে বারে নিশানা করেছেন।
গত মাসে, টমেটোর দাম বৃদ্ধির কারণে বিরোধী দলগুলির আক্রমণের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার। নির্বাচনের আগে, বিজেপি এমন কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না, যা ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে পদ্মশিবিরকে বড় ধাক্কা দিতে পারে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক শিবির।
প্রকৃতপক্ষে, গত এক মাসে, একাধিক সমীক্ষায়, বিজেপি সরকার টানা তৃতীয়বারের মতো আসছে বলেই আভাস, তবে তার ভোটের শতাংশের ব্যবধান কমছে বলেও মিলেছে ইঙ্গিত। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের এখনও প্রায় ৭ মাস বাকি। বিজেপি এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান মজবুত করার চেষ্টা শুরু করেছে। এর মাধ্যমে শুধু যে লোকসভা নির্বাচন তাই নয় অর্থাৎ, ২০২৩ সালের শেষে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাখি বন্ধন এবং ওনাম উপলক্ষে দেশবাসীকে উপহার। “প্রধানমন্ত্রী মোদী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে সমস্ত গ্রাহকদের জন্য এলপিজির দাম ২০০ টাকা কমানো হবে। সরকার উজ্জ্বলা প্রকল্পের অধীনে বিনামূল্যে ৭৫ লক্ষ নতুন এলপিজি সংযোগ প্রদান করবে,”।
মোদী স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে দেশবাসীকে যে আশ্বাস দিয়েছিলেন তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এই ঘোষণা। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে কোভিড -১৯ মহামারী এবং ইউক্রেন যুদ্ধের পরে বিশ্বব্যপী মুদ্রাস্ফীতির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে। “ভারত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। আমার দেশবাসীর উপর মুদ্রাস্ফীতির বোঝা কমাতে বদ্ধপরিকর এবং আমরা আগামীদিনেও সেই পদক্ষেপ অব্যাহত রাখব।”