পদ্ম পতাকা হাতে এখনও বারে বারেই পরাজিত জিতেন্দ্র তিওয়ারি। একুশের ভোটে পরাজিত হয়েছেন নিজের গড়ে। আসানসোল লোকসভায় দলীয় প্রার্থীকে জয়ের মুখ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। উল্টে শিল্পাঞ্চলে ভোট বেড়েছে জোড়া-ফুলের। কেন হারছে বিজেপি? নিজের উপলব্ধির কথা রবিবার টুইট করেছেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র। অমিত শাহর বাংলার ছাড়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সেই টুইট ঘিরে অস্বস্তি বাড়ল বঙ্গের পদ্ম শিবিরের।
টুইটে জিতেন্দ্র তিওয়ারি লিখেছেন 'বাংলায় জিততে চান? আগে বাংলার মানুষের হৃদয় জিততে শিখুন।' কাকে, কোন উদ্দেশ্য করে এই কথা লিখলেন তিনি? টুইটে তার ব্যাখ্য়া নেই। জিততেন্দ্র বলেছেন, 'আত্মঅনুসন্ধার করছিলাম ব্যর্থতার। মনে হল, মানুষের হৃয়দ আগে জয় করতে হবে। না বাংলার দখল অসম্পূর্ণ গহয়ে যাবে।'
পাটের দাম নিয়ে দিন কয়েক আগেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। যা নড়িয়ে দিয়েছিল বঙ্গ বিজেপিকে। বিরোধীতার সুর চড়িয়ে এরপর অর্জুন খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। মমতাকে আক্রমণ নয়, বরং সহযোগিতার বার্তা দিয়েছিলেন। জল্পনা ওঠে তাঁর ঘরওয়াপসির। অকুতভয় অর্জুন প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, 'ব্যারাকপুরে দল নয়, তাঁর ব্যক্তিগত ক্ষমতার জোরেই ভোটে জিতবেন।' তারপরই তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পূযূস গোয়েল দলীয় সাংসদকে বৈঠকে ডাকেন। তারপর থেকে জল মাপছেন অর্জুন সিং। সেই অস্বস্তি কাটতে না কাটতেই এবার 'বাঁকা' কথা জিতেন্দ্র্রর টুইটে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যায়, বহু কাণ্ডের পর একুশের ভোটের আগে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন শিল্পাঞ্চলের এই নেতা। কিন্তু পাণ্ডবেশ্বর থেকে হেরে যান পুরনো দলের প্রার্থীর কাছে। বিজেপি ভোটে ধরাশায়ী হতেই দলবদলুদের অনেকেই তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন। কার্যত দায়িত্বহীন করে রাখা হয়েছে জিতেন্দ্রকেও। ফবে হতাশ তিনি। সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে দলীয় নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। প্রশ্ন রয়েছে পার্টি লাইন নিয়েও। যা ছিল এতদিন আড়ালে-আবডালে, এবার সেই প্রশ্নই যেন টুইটে লিখে প্রকট করলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বার্তা দিলেন নিজের দলের নেতাদের।
জিতেন্দ্র তিওয়ারির এই বক্তব্যে বিতর্ক দেখছেন না আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী তথা আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তাঁর কথায়, 'উনি ওনার উপলব্ধির কথা বলেছেন। কোনও বিজেপি নেতৃত্বকে উদ্দেশ্য করে নয়, বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গণতন্ত্রের আসল কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।'