মহারাষ্ট্রের সরকার গঠন ঘিরে জমে উঠেছে নাটক। মঙ্গলবার সকালে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার। এরপরই তাঁর সঙ্গে কথা হয় কংগ্রেস সভানেত্রীর। পাওয়ারকে জানানো হয়, মহারাষ্ট্রের সরকার গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে মুম্বই যাচ্ছেন আহমেদ পটেল, মল্লিকার্জুন খাড়গে ও কে সি বেণুগোপাল।
Advertisment
সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি কেন্দ্র সরকারকে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। এদিকে, কিছুক্ষণের মধ্যেই মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক টানাপোড়েন নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। যেহেতু কোনও দলের কাছেই ম্যাজিক ফিগার নেই, তাই শেষমেশ অচলাবস্থা কাটাতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হতে পারে মহারাষ্ট্রে,ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে এমনটাই খবর।
Senior Congress leader Mallikarjun Kharge: Congress president Sonia Gandhi ji and Sharad Pawar ji too held discussion. We will hold further talks and will take a decision collectively. https://t.co/8GUfgj5BRApic.twitter.com/rIxTdsJZ3O
সময়সীমার মধ্যে সরকার গঠন নিশ্চিত করতে না পারায় সোমবার রাতেই শরদ পাওয়ারের এনসিপিকে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপাল কেশিয়ারি। আজ রাত সাড়ে ৮-টার মধ্যে এনসিপিকে সময় দেওয়া হয়েছে রাজভবনের তরফে। বিজেপি, শিবসেনা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় বিধায়ক জোগাড়ে ব্যর্থ হয়েছে। এনসিপি কী পারবে জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে বুঝিয়ে সমর্থন আদায় করতে? আপাতত এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে মারাঠা ভূমের রাজনীতি।
এনসিপির রাজ্য সভাপতি জয়ন্ত পাতিল সোমবার রাতে বলেন, 'তৃতীয় বৃহত্তম দল হওয়ায় রাজ্যপাল এনসিপিকে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের কথা বলেছেন। তাঁকে জানিয়েছি, এবিষয়ে জোটসঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করে আমরা যত দ্রুত সম্ভব উত্তর জানিয়ে দেব।' তবে, হাল ছাড়তে নারাজ এনসিপি। এদিকে, কংগ্রেস নেতা মানিকরাও থাকরের দাবি, পাওয়ার কংগ্রেসকে আরও একদিন অপেক্ষা করতে বলেছিলেন। এনসিপি নেতার যুক্তি ছিল, কংগ্রেস ও এমসিপির মধ্যে প্রথমে জোটের বিষয়ে আলোচনা করা উচিত। তারপরে সেনার সঙ্গে আলোচনা হবে।
বিজেপি সরকার গড়তে পারবে না ঘোষণার পরই মহারাষ্ট্রের সরকার গঠনে তৎপর হয় শরদ পাওয়ারের দল। তাদের শর্ত মেনে মোদী মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফাও দেন এনসিপি সাংসদরা। তারপরই, সোমবার সকালে দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন পাওয়ার। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় শিবসেনাকে সমর্থন করবে এনসিপি। কিন্তু, সরকার গড়তে প্রয়োজনীয় 'ম্যাজিক ফিগার' ১৪৫ বিধায়কের সমর্থন তাতে পূর্ণ হচ্ছিল না। অপরিহার্য হয়ে পড়ে কংগ্রেসের সমর্থন। সোনিয়া গান্ধীর উপস্থিতিতে সোমবার বৈঠকেও বসে কংগ্রেস। দফায় দফায় কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হয় শিবসেনা ও এনসিপি নেতাদের। জানা যায়, উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গেও কথা হয় কংগ্রেস সভানেত্রীর।
সোমবার বিকেলে মনে করা হচ্ছিল, মহারাষ্ট্রের সরকার গঠনের জোট কাটতে চলেছে। শিবসেনাকেই সমর্থন করবে কংগ্রেস। স্রেফ আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষা। কিন্তু, তখনই নাটকীয় মোড়। কংগ্রেসের বৈঠক থেকে বেরিয়ে মল্লিকার্জুন খাড়গে সমর্থনের কোনও সবুজ সঙ্কেত দেননি। ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে যায় শিবসেনাকে সমর্থনে দ্বিধা এখনও কাটেনি হাত শিবিরের। তবে, সমর্থন যে দেওয়া হবে না তাও স্পষ্ট করা হয়নি।
কংগ্রেস সিদ্ধান্ত না জানানোয় সোমবার রাতে রাজ্যপাল ভগৎ সিং কেশিয়ারির কাছে যান আদিত্য ঠাকরেরা। রাজ্যপালকে জানিয়ে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় বিধায়ক নেই তাদের কাছে। অতিরিক্ত সময়ের দাবি করে শিবসেনা। যা মঞ্জুর করেননি রাজ্যপাল। ভগৎ সিং কেশিয়ারির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলে সেনা শিবির। এর পরেই সরকার গড়তে ডাক পড়ে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস বা এনসিপির।
জোট শরিক কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া এনসিপি সরকার গঠনের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না বলে সিদ্ধান্ত নেন পাওয়ার। তবে কী মহারাষ্ট্রে 'বিকল্প সরকার' গঠনের আশা কার্যত শেষের পথে? এনসিপি নেতা নবাব মালিক জানিয়ে দেন, 'আমরা কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছি।'